বুধবার, ০৭ অক্টোবর, ২০১৫, ১২:১০:৩৬

সেই নাদিয়া আজ লড়ছেন ব্রিটেনের বেক প্রতিযোগিতায়

সেই নাদিয়া আজ লড়ছেন ব্রিটেনের বেক প্রতিযোগিতায়

নিউজ ডেস্ক : সেই বাঙালী মুসলিম নারী নাদিয়া হোসেইন আজ লড়ছেন বেক প্রতিযোগিতায়। ইংল্যান্ডের লুটন শহরের একটি আলোচিত নাম নাদিয়া হোসেইন। অসাধারণ কেক প্রস্তুতকারী হিসেবে সুনাম অর্জনকারী নাদিয়া ইতিমধ্যেই ব্রিটিশ মুসলিম তরূণীদের রোল মডেলে পরিণত হয়েছেন। বিশেষ করে লুটনের সকলেরই ভালোবাসার পাত্রী তিনি।

আর ব্রিটেনের তুমুল জনপ্রিয় এক বেকিং প্রতিযোগিতায় এখন তাকে নিয়েই যতো জল্পনা কল্পনা। ‘সেরা ব্রিটিশ বেক’ হওয়ার পথে হট ফেবারিট বিবেচিত হচ্ছেন নাদিয়াই।

আজ ওই প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে লড়বেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই নাদিয়া হোসেইন।

যুক্তরাজ্যের তুমুল জনপ্রিয় টিভি প্রতিযোগিতা (রিয়েলিটি শো) ‘দ্য গ্রেট ব্রিটিশ বেক অফ ২০১৫ (জিবিবিও)’-এর সেমিফাইনাল দেখেছেন প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ দর্শক। বিবিসির এই আয়োজনের চূড়ান্ত পর্ব (গ্র্যান্ড ফিনালে) প্রচারিত হবে বুধবার।

স্বয়ং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন নাদিয়ার ভক্ত। প্রধানমন্ত্রীও চান আত্মপ্রত্যয়ী নাদিয়ার মাথাতেই উঠুক দ্য গ্রেট ব্রিটিশ বেক ২০১৫-এর মুকুট!

রান্নবান্নার এই প্রতিযোগিতার শেষ তিনে লড়ছেন আলোকচিত্রী ইয়ান কোমিং, ভারতীয় বংশোদ্ভূত তমাল এবং সিলেটের বিয়ানীবাজারের মোহাম্মদপুর গ্রামের মেয়ে নাদিয়া।

এখন মূলত নাদিয়া-বন্দনাই চলছে যুক্তরাজ্যজুড়ে। বিবিসি ওয়ানে আজ স্থানীয় সময় রাত আটটার চূড়ান্ত এই পর্বটির জন্য অপেক্ষার প্রহর গুণছে পুরো দেশ।

যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে দর্শকপ্রিয় টিভি প্রতিযোগিতার মর্যাদা আবারও পাবে এ অনুষ্ঠানটি—এমনটাই আশা করছেন আয়োজকেরা। আয়োজকদের ধারণা, এক ঘণ্টার চূড়ান্ত পর্বটি টিভিতে দেখবেন প্রায় দেড় কোটি দর্শক।

এদিকে জরিপও বলছে, গ্র্যান্ড ফিনালের আগেই কেক, পেস্ট্রি, কুকিজ বানানোর এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়ার পথে অনেক দূর এগিয়ে আছেন নাদিয়া। বসে নেই ব্রিটিশ বেটিং শপগুলো। তাদের বাজিতেও এগিয়ে নাদিয়া।

যুক্তরাজ্যের লুটন শহরে জন্ম নেওয়া নাদিয়া ব্রিটিশ বেকারি বানিয়ে রীতিমতো তারকা হয়ে উঠেছেন। লুটনে নাদিয়ার স্কুল চ্যালনি গার্লস হাইস্কুলের মেয়েরা উচ্ছ্বসিত ব্রিটিশ বেকে স্কুলের প্রাক্তন এই শিক্ষার্থীকে পেয়ে। নাদিয়াকে উৎসাহ দিতে তাই আজ তারা স্কুলে নিজেদের তৈরি কেক নিয়ে যাবেন।

যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের মধ্যেও চলছে জোর আলোচনা। উৎকণ্ঠার মধ্যেই ফোনে মঙ্গলবার কথা হয় নাদিয়ার সঙ্গে। নিজের আবাস লিডস শহর থেকে বাবার বাড়ি লুটনে এসেছেন তিনি। আজ আইটিভিতে পরিবারের সবাইকে নিয়েই চূড়ান্ত পর্বের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হবেন।

নাদিয়া বলেন, ‘আমার মা আসমা বেগম ও নানী আনোয়ারা বেগমের কাছ থেকে কেক আর পেস্ট্রি তৈরিতে হাতেখড়ি। ছোটবেলা থেকেই আমি চেষ্টা করতাম ব্রিটিশ কেক ও পেস্ট্রি তৈরি করার। আমি নিজেই মাঝেমাঝে বিস্মিত হই ব্রিটিশ বেকিংয়ে আমি এমন পর্যায়ে আসতে পেরেছি ভেবে! আজ ফাইনালে ভালো কিছু করার প্রত্যয় নিয়েই যাব।’

সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে ফিরেছেন নাদিয়ার গর্বিত পিতা জমির আলী। তিনি বললেন, মেয়ের এমন সাফল্যে জমির আলী বলেন, ‘এমন গৌরবের মুহূর্ত আমাদের জীবনে আসবে ভাবিনি। নাদিয়ার বিজয় শুধু আমাদের পরিবারের না, ব্রিটিশ বাংলাদেশি সবার।’

তিন সন্তানের জননী, সদালাপী, চৌকস, চিত্তাকর্ষক হাসির অধিকারিণী ও হিজাব পরিহিত নাদিয়া সাফল্য প্রত্যাশা করছেন লুটনের অধিকাংশ মানুষ।

শহরটিতে অভিবাসী জনসংখ্যা প্রচুর। বিশেষকরে ঊনিশ’ পঞ্চাশের দশক থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে এখানে এসে বহু পরিবার বসতি স্থাপন করেছে।

লুটনের অনেকের কাছে হিজার পরিহিত মেয়েটি দারুণ পরিচিত। তার নিমকি, চকোলেট আর উদ্ভাবনশীল চিজকেক তৈরির দৃশ্য যখন টিভিতে সম্প্রচার হয়েছে তখন তা তাদের কাছে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে।

যারা নাদিয়াকে চোখের সামনেই স্কুলবালিকা থেকে উদীয়মান টিভি তারকায় পরিণত হতে দেখেছেন তারা গর্বে উচ্ছ্বসিত হয়েছেন।

বুধবার চূড়ান্ত পর্বে নাদিয়ার সফলতার দিকেই তাকিয়ে লুটনের তরুণী মুসলিমরা, বালিকারা দারুণ উজ্জীবিত।
৭ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএম/ডিআরএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে