বুধবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৬, ০৩:৫১:০৩

অভাবে ঝড়ে গেল মেধাবী ছাত্রী সুইটির ভবিষ্যৎ, কর্মহীন মেয়েটি এখন হতাশা কাটাচ্ছে

অভাবে ঝড়ে গেল মেধাবী ছাত্রী সুইটির ভবিষ্যৎ, কর্মহীন মেয়েটি এখন হতাশা কাটাচ্ছে

নিউজ ডেস্ক: অভাবে ঝড়ে গেল পঞ্চম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী সুইটির ভবিষ্যৎ। অসুস্থ্য বাবার সংসারের হাল ধরতে গিয়ে জুতা কারখানার মেশিনে কাটা গেল ডান হাত। কর্মহীন সুইটি এখন হতাশা আর উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছে।

গুরুতর আহত শিশুটি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপিরবাড়ী গ্রামের জুতা কারখনা বেনবীজ (প্রাঃ) লিঃ এর শ্রমিক। সে চাঁদপুর জেলার হাইমোচড় থানার উত্তর বিংগুড়িয়া গ্রামের আহসান গাজীর কন্যা।

আহত সুইটির চাচী নাজমা আক্তার জানায়, সুইটি হাইমোচর থানার উত্তর বিংগুড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী। সুইটির বাবা প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত, মা অন্যের বাড়ীতে ঝিয়ের কাজ করে।

অভাবের সংসারের হাল ধরতে বিদ্যালয় ছাড়তে হয় তাকে। চাচীর হাত ধরে চলে আসে শ্রীপুরের টেপিরবাড়ী গ্রামে। দেড় মাস পূর্বে চার হাজার টাকা মাসিক বেতনে সহকারী অপারেটর পদে চাকুরী নেয় বেনবীজ (প্রাঃ) লিঃ কারখানায়।

সকাল আটটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কাজ শেষে বাড়তি আয়ের জন্য প্রতিদিন রাত নয়টা পর্যন্ত চার ঘন্টা অতিরিক্ত সময়ের কাজ করত সুইটি। মাত্র ১১ বছর বয়সে দৈনিক বার ঘন্টার কাজ তার শরীরে মানায়নি।

সুইটি জানায়, গত ১২ নভেম্বর রাত সাড়ে আটটার দিকে কারখানার সুপারভাইজার আজিজুল হক তাকে মেশিন চালাতে বলে। কোন অভিজ্ঞতা না থাকার পরও সুইটিকে মেশিন ধরিয়ে দেন ওই সুপার ভাইজার।

মুহুর্তের মধ্যেই তার ডান হাত মেশিনে ঢুকে গেলে কেটে যায়। হাত হারিয়ে কর্মহীন সুইটির দু’চোখে এখন শুধুই হতাশা। কিভাবে চলবে অসুস্থ্য বাবার চিকিৎসা ও অভাবের সংসার।
 
সুইটির মা পারুল আক্তার জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষ পঙ্গু হাসপাতাল থেকে নাম মাত্র চিকিৎসা করে দায় সেরেছে। কোন আর্থিক সহযোগীতা করে নি। ভাড়া বাসায় চিকিৎসার অভাবে ব্যথায় কাতরাচ্ছে সুইটি। হাসপাতালে রেখে তার উন্নত চিকিৎসা করা খুবই প্রয়োজন।

স্থানীয় লোকদের অভিযোগ, জুতা কারখনায় কম বেতনে শিশু শ্রমিক দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করানো হচ্ছে। প্রতিটি শ্রমিকের বয়স ১২-১৪ বছরের মধ্যে।

কারখানার প্লানিং ম্যানেজার খালেদ হাসান শিশু শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর কথা অস্বীকার করে বলেন, মেয়েটির কান্নাকাটি দেখে মানবিক বিবেচনায় তাকে কাজ দেয়া হয়েছিল।
 
কারখানার মালিক শরিফ মাহমুদুল হক বলেন, মেয়েটির চিকিৎসার সকল দায়িত্ব আমাদের। তবে কারখানায় কোন শিশু শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হয় না বলে দাবি করেছেন তিনি।মানবকণ্ঠ
১৬ নভেম্বর,২০১৬/এমটি নিউজ২৪ ডটকম/আ শি/এএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে