শনিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৬, ০১:১৪:৫৬

খালেদার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে যা বললেন ওবায়দুল কাদের

খালেদার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে যা বললেন ওবায়দুল কাদের

নিউজ ডেস্ক : নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দেয়া ফর্মুলাকে অন্তঃসারশূন্য বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কদের। তিনি বলেন, এ ধরনের ফর্মুলা জাতির সঙ্গে তামাশা ছাড়া আর কিছু নয়। বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় গতকাল ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক,  আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন প্রমুখ। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার নির্বাচন কমিশন নিয়ে পুনর্গঠন প্রস্তাবনা চর্বিতচর্বণ ও অন্তঃসারশূন্য। তার এ প্রস্তাবনা প্রমাণ করেছে, তিনি জনগণের ওপর আস্থাশীল নন। তিনি এমন কিছু প্রসঙ্গ এনেছেন, যা ইতিমধ্যেই আমাদের সংবিধান বা নির্বাচনী  আইনে অন্তর্ভুক্ত আছে।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপ্রধান রূপে রাষ্ট্রের অন্য সব ব্যক্তির ঊর্ধ্বে। সংবিধানের ৪র্থ ভাগের ৪৮ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতির ওপর প্রদত্ত ও অর্পিত সকল ক্ষমতার প্রয়োগ ও কর্তব্য পালনের অধিকার দেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপতি সংবিধানের সপ্তম ভাগের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য কমিশনারদের নিয়োগ প্রদান করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়ে রাষ্ট্রপতি সংবিধানে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা করেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতিকে যে সংলাপ অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন, তা খুবই হাস্যকর। কারণ, তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংলাপ আহ্বানকে অসম্মান দেখিয়েছিলেন। তার পুত্র বিয়োগের পর প্রধানমন্ত্রী তাকে সমবেদনা জানাতে গুলশান কার্যালয়ে গেলে তিনি কার্যালয়ের প্রধান ফটক বন্ধ করে দিয়ে সংলাপের সম্ভাবনাকে চিরদিনের জন্য রুদ্ধ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, কোনো প্রেসক্রিপশন দেয়ার আগে খালেদা জিয়াকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে- যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার চেষ্টা, মানুষ হত্যার অপরাধে, আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারার অপরাধে, তার ছেলে তারেক জিয়ার মানি লন্ডারিংয়ের জন্য, দুর্নীতির জন্য, নিজের জন্ম তারিখ নিয়ে জাতির সামনে মিথ্যাচারের জন্য।

দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন কমিশন সংস্কারের ফর্মুলায় বাংলাদেশের জনগণের ওপর কিংবা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী, পুলিশ-র‌্যাব, বিজিবি’র প্রতি তার আস্থাহীনতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। তিনি বলেন, বিএনপির প্রস্তাবনায় গ্রহণযোগ্য ও ভালো কিছু থাকলে তা গ্রহণ করা হবে এবং রাষ্ট্রপতি সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবেন। বিএনপি সম্প্রতি জেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করেছে। এখন আবার নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আসলে তারা দেশে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে উগ্রবাদীদের উসকে দিয়ে বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে। এখন তারা যে কোনো উপায়ে ক্ষমতায় এসে লুটপাটের রাজনীতি করতে চায়।

তিনি বলেন, যারা নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন তারা সংবিধানকে অবজ্ঞা করে ধৃষ্টতা দেখাচ্ছেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের যে প্রক্রিয়া দেখিয়ে গেছেন, সেখান থেকে আওয়ামী লীগ বিচ্যুত হবে না। হওয়ার কোনো সুযোগও নেই। বিএনপি ও তাদের নেত্রী ভুল রাজনীতির কারণে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এখন মিথ্যাচার করছেন। জনগণের কথা না ভেবে তারা এখন কোন দেশে কে ক্ষমতায় এলো তা খুঁজে বেড়াচ্ছেন।

জনগণের ভোটে বিএনপির বিশ্বাস নেই উল্লেখ করে কাদের বলেন, গত নির্বাচন তারা প্রতিহত করতে চেয়েছে। এজন্য পেট্রল বোমার আগুনে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। ১৯৯৬ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের নবজাতককে হত্যা করেছিলেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

মাগুরার উপনির্বাচন ও ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, নিজের অতীত ভুলে গিয়ে এখন তিনি ভালো ভালো বুলি আওড়াচ্ছেন। সত্যিকার অর্থে জনগণের প্রতি তাদের কোনো অঙ্গীকার নেই। যে কোনোভাবে ক্ষমতায় গিয়ে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করাই তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য। এর আগে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে সাতটি প্রস্তাব দেয় বিএনপি। রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন। - এমজমিন
১৯ নভেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে