সোমবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৫, ০৩:২৯:০৮

আইএসের নামে টুইট করা হয় বাংলাদেশ থেকে

আইএসের নামে টুইট করা হয় বাংলাদেশ থেকে

টিপু সুলতান : দুই বিদেশি নাগরিককে হত্যার দায় স্বীকার করে আইএসের নামে যে দুটি টুইট বার্তা দেওয়া হয়েছে, তা বাংলাদেশ থেকেই ইন্টারনেটে আপলোড হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছেন গোয়েন্দারা।

এর মধ্যে ইতালির নাগরিক তাবেলা সিজারকে হত্যার পর দায় স্বীকার করে বার্তাটি টুইটারে দেওয়া হয় ঢাকা থেকে। এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে শনাক্ত করা গেছে বলেও গোয়েন্দা-সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল প্রতিবেদককে বলেন, আমরাও এ রকম শুনেছি।

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, সিজার তাবেলা ও জাপানি নাগরিক কুনিও হোশিকে হত্যার তদন্তে অন্যান্য সন্দেহের পাশাপাশি আইএসের দায় স্বীকারের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়াকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। তথ্যপ্রযুক্তি-বিষয়ক দক্ষ ব্যক্তিদের সহায়তায় একটি গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে দেওয়া ওই টুইট বার্তা আপলোডের উৎস খুঁজে বের করে। ওই সূত্র ধরেই এখানকার গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে এ দেশ থেকেই টুইটারে বার্তা দুটি ছাড়া হয়েছে।

এর মধ্যে তাবেলা সিজার হত্যার পর প্রথম বার্তাটি যিনি আপলোড করেন, তাঁকে শনাক্ত করা হয়েছে। তিনি রাজধানীতে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তবে এই ব্যক্তি উগ্রপন্থী কোনো গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত কি না, তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি গোয়েন্দারা। তাঁকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে বলে দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

তাবেলা হত্যার পর প্রথম বার্তাটি যিনি আপলোড করেন, তাঁকে শনাক্ত করা হয়েছে। তিনি উগ্রপন্থী কোনো গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত কি না, তা নিশ্চিত হতে পারেননি গোয়েন্দারা

এ ছাড়া রংপুরে জাপানি নাগরিক হত্যার দায় স্বীকার করে দেওয়া টুইটার বার্তাটিও বাংলাদেশ থেকে আপলোড হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে জড়িত ব্যক্তিকে এখনো শনাক্ত করা যায়নি।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ইতালির নাগরিক তাবেলা সিজারকে ঢাকার গুলশানে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এরপর ৩ অক্টোবর একই কায়দায় রংপুরে হত্যা করা হয় জাপানি নাগরিক কুনিও হোশিকে। উভয় ঘটনার পরপরই মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএস (ইসলামিক স্টেট) টুইটারে দায় স্বীকার করে। বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীর ইন্টারনেটভিত্তিক তৎপরতা নজরদারিতে যুক্ত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়েবসাইট ‘সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপের’ বরাত দিয়ে রয়টার্সসহ আন্তর্জাতিক একাধিক বার্তা সংস্থা এ খবর প্রচার করে।

এরপর দুই বিদেশি হত্যার তদন্তে যুক্ত বাংলাদেশের গোয়েন্দারা দুই টুইট বার্তার উৎস সম্পর্কে জানতে সাইটের প্রধান রিটা কাৎজের সঙ্গে কয়েক দফা যোগাযোগ করে তাঁর সহায়তা চান। সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা এই প্রতিদেককে বলেন, তাঁদের রিটা কাৎজ বলেছেন যে ২৮ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক সময় বেলা ১টা ২০ মিনিটে তিনি আইএসের নামে তাবেলা সিজারকে হত্যার দায় স্বীকার করা টুইট বার্তাটি দেখতে পান। তখন তিনি অনলাইনে ছিলেন। এর ১৮ মিনিট পর তিনি তা নিজের টুইট অ্যাকাউন্টে প্রকাশ করেন এবং সাইটের ওয়েবসাইটে আপলোড করেন। একইভাবে ৩ অক্টোবর কুনিও হোশি হত্যার পর নিউইয়র্ক সময় রাত ১১টা ২০ মিনিটে আইএসের দায় স্বীকার করা টুইট বার্তা পান, এরপর ১১টা ৩৮ মিনিটে তিনি তা নিজে টুইট করে জানান এবং সাইটে আপলোড করেন।

ওই কর্মকর্তা বলেন, আইএস যেসব টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে সিরিয়া ও ইরাকে নিজেদের ‘সাফল্য’ প্রচার করে থাকে, তাতে বাংলাদেশের দুই হত্যার বিষয়টির উল্লেখ নেই। তাই রিটা কাৎজের কাছে ওই দুটি বার্তার লিংক চেয়ে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তিনি এ অনুরোধে সাড়া দেননি। এরপর ঢাকায় তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষ ব্যক্তিদের কাজে লাগিয়ে ওই দুই টুইট বার্তার উৎস খুঁজে পান এখানকার গোয়েন্দারা।-প্রথম আলো
১২ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে