শুক্রবার, ০৯ ডিসেম্বর, ২০১৬, ০১:২৬:৪৭

রোহিঙ্গা ইস্যুতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক থাকতে নির্দেশনা

রোহিঙ্গা ইস্যুতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক থাকতে নির্দেশনা

দীন ইসলাম : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে। এটাকে পুঁজি করে যাতে কেউ অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে না পারে এজন্য সতর্ক থাকতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গেল মাসের শেষ সপ্তাহে দুইটি বিশেষ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

নির্দেশনা অনুযায়ী এরই মধ্যে মিয়ানমার দূতাবাস ও বৌদ্ধ মন্দিরগুলোর নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর অত্যাচারের ঘটনায় গত ২৩শে নভেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং ২৫শে নভেম্বর হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। এ কর্মসূচি নিয়ে দুইটি প্রতিবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠায় একটি শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা।

বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গত অক্টোবর থেকে দেশটির সেনাবাহিনী অভিযান চালাচ্ছে। ৯ই অক্টোবর সীমান্ত পুলিশ চেকপোস্টে অতর্কিত হামলায় নয় পুলিশ সদস্য নিহতের পর বিদেশি সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এ অভিযোগে রাখাইন প্রদেশে ব্যাপক সেনা অভিযান শুরু হয়। সেনা অভিযানে রাখাইনে বসবাসরত রোহিঙ্গা মুসলমানদের হত্যা, মহিলা ও কিশোরীদের পাশবিক নির্যাতন, তাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালানো হয়। ওই দেশের মুসলমানদের ওপর হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে নির্বিচারে গণহত্যা চালানো হচ্ছে। এ ঘটনায় ৩৫০  ব্যক্তি হতাহত এবং শত শত নাগরিককে আটক করার সংবাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

দুইটি বিশেষ প্রতিবেদনে সম্ভাব্য পরিস্থিতি সম্পর্কে বলা হয়, ঢাকাস্থ মিয়ানমার দূতাবাস ঘেরাওসহ হামলার ঘটনা ঘটতে পারে। এ ছাড়া ঢাকা মহানগরীতে অবস্থিত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়গুলোতে হামলা হতে পারে। বিক্ষোভ কর্মসূচির সুযোগ নিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিম (এবিটি), জেএমবি, হিযবুত তাহরীর, আল্লাহর দলসহ বিভিন্ন জঙ্গিসংগঠনগুলো তৎপর হয়ে উঠতে পারে। এসব জঙ্গি সংগঠন জামাত- শিবির চক্রের সহায়তা নিয়ে মুক্তমনা ব্লগার, গণজাগরণ মঞ্চের নেতাকর্মীসহ স্বাধীনতার স্বপক্ষের শিক্ষক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবীদের ওপর হামলা করতে পারে।

একই সঙ্গে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা (কেপিআই)সহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, দেশি-বিদেশি কূটনৈতিক, পর্যটকদের উপর এবং গুরুত্বপূর্ণ আবাসিক হোটেল, এনজিওসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বিদেশি নাগরিকদের ওপর হামলার ঘটনাসহ সড়ক, নৌ ও রেলপথে সহিংস ও নাশকতামূলক ঘটনা ঘটতে পারে। ঢাকা মহানগরসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ও মোড়ে এবং গলি থেকে মিছিল বের করে ও গুজব ছড়িয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির চেষ্টা চালাতে পারে। সম্ভাব্য এসব পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে দুই ডজন সুপারিশ দেয়া হয়েছে।

সুপারিশে বলা হয়, ঢাকা মহানগরীর মসজিদগুলোতে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়া যায়। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করার বিষয়ে সতর্ক নজর রাখতে হবে। ঢাকা মহানগরী এলাকার বৌদ্ধ মন্দির এবং মিয়ানমার দূতাবাসে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দুইটি বিশেষ প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে সিসিটিভি লাগানো ও সব গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয়ে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এমজমিন

৯ ডিসেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে