নিউজ ডেস্ক : ইউরোপের শরণার্থী সংকটের সাথে জড়িয়েছে বাংলাদেশর নামও। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত অন্তত ৭০০০ বাংলাদেশি অবৈধভাবে ইউরোপে ঢুকেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লোক লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইতালি গেছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়ের কাজ করা সংগঠন ফ্রন্টেক্স তথ্য জানিয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সনদে প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থাটি ২০০৪ সাল থেকে অবৈধ অভিবাসন, মানব পাচার ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম নিয়ে করার কাজ করছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিটি দেশ এই সংগঠনের সদস্য।
ফ্রন্টেক্সের জনসংযোগ কর্মকর্তা পাউলিয়ানা বাকুল জানান, এ বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ৬০৮৫ জন বাংলাদেশি অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশ করেছেন। তাদের কাছে এমন তথ্য আছে।
তিনি জানান, আগস্ট মাসের পুরো তথ্য এখনো তারা পাননি। গত কয়েকদিনে শরণার্থীর যে স্রোত বইছে তাতেও কতজন বাংলাদেশি আছেন, সেটিও এখনো সুনির্দিষ্ট করা যায়নি। তবে সব মিলিয়ে এই সংখ্যা ৭০০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
ফ্রন্টেক্স থেকে জানানো হয়, এ বছরের জুলাই পর্যন্ত সেন্ট্রাল মেডিটেরিয়ান পথে ৩৮৭৬ জন, ওয়েস্টার্ন বলকান রুট দিয়ে ১৭৬৭ জন, ইস্টার্ন মেডিটেরিয়ান রুট দিয়ে ৪২৯ জন, ইস্টার্ন বলকান রুট দিয়ে ৭জন এবং ওয়েস্টার্ন মেডিটেরিয়ান রুট দিয়ে ৬জন ইউরোপে প্রবেশ করেছেন।
ফ্রন্টেক্সের তথ্য অনুযায়ী, সেন্ট্রাল মেডিটেরিয়ান রুট বলতে উত্তর আফ্রিকার দেশগুলো থেকে ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইউরোপের দেশ ইতালি কিংবা মাল্টা আসা বোঝায়। সাম্প্রতিক সময়ে এই পথ দিয়েই সবচেয়ে বেশি লোক ইউরোপে প্রবেশ করছে। এর মধ্যে ইরিত্রিয়া ও নাইজেরিয়ার লোক বেশি।
জাতিসংঘের শরণার্থী-বিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালে এভাবে সাগরপথে আসতে গিয়ে অন্তত ৩৫০০ লোক মারা গেছে। কিন্তু তারপরেও চলতি বছর এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২১ হাজার লোক এভাবে ইতালি প্রবেশ করেছে।
এই তালিকার শীর্ষ দশ দেশের নাগরিকদের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। গত ২৭ আগস্ট এভাবে লিবিয়া যেতে গিয়ে ২৪ বাংলাদেশিসহ ১১৮ জন মারা যান।
ইউএনএইচসিআরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে মে—এই সময়ে ১২৬৭ জন ইউরোপে অবৈধভাবে প্রবেশ করে আশ্রয় চেয়েছেন। ২০১৪ সালে এই সংখ্যা ছিল ৪০১৮ জন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ফ্রন্টেক্সের তথ্য পুরোপুরি বস্তুনির্ভর। তবে বাংলাদেশ আগ বাড়িয়ে এই বিষয়ে কথা বলতে চায় না।