নিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এপ্রিলে ভারত সফরকে ‘সর্বোচ্চ কার্যকর ও ফলপ্রসূ’ করতেই পূর্ণ মনোযোগ উভয় পক্ষের। সরকার প্রধানের সফরে দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে ঝুলে থাকা তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান চায় ঢাকা।
একই সঙ্গে দেশের মেগা প্রকল্প গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণে ভারতের সহযোগিতার স্পষ্ট ঘোষণা চায় বাংলাদেশ। অন্যদিকে শেখ হাসিনার সফরে দিল্লির চোখ প্রতিরক্ষা সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা (রূপরেখা চুক্তি) সইয়ে। দু’দেশের প্রতিনিধি পর্যায়ে এ নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা চলছে বলে জানায় কূটনৈতিক সূত্রগুলো।
সম্প্রতি হিন্দুস্তান টাইমসসহ দিল্লি ডেটলাইনে প্রকাশিত গণমাধ্যমের খবরে এটি বেশ খোলাসা হয়েই জনসমক্ষে এসেছে। প্রধানমন্ত্রীর সফর সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কেবল তিস্তা, গঙ্গা বা প্রতিরক্ষা-ই নয়, হাই প্রোফাইল ওই সফরে দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অন্তত ২০’র বেশি চুক্তি, সমঝোতা ও ডকুমেন্ট সইয়ের প্রস্তুতি চলছে।
যার মধ্য রয়েছে- নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা, নিউক্লিয়ার, স্পেস, স্যাটেলাইট, বাণিজ্য সহযোগিতা ও বর্ডার হাট স্থাপন এবং উভয় দেশের জনগণের পর্যায়ে মধ্যে সম্পর্ক বাড়ানোর সংক্রান্ত বিষয় রয়েছে। ঢাকার কর্মকর্তাদের মতে, প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন দিল্লি সফরে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি কোনো শর্ত নয়, তারপরও প্রতীক্ষিত চুক্তিটি সইয়ে ব্যাপক আশাবাদী ঢাকা। এ নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে।
আগামী ৭-১০ই এপ্রিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি সফর করবেন জানা গেছে। এই সফরের দুই দেশের মধ্যকার ঝুলে থাকা বিষয়গুলোর নিষ্পত্তি করা গুরুত্ব আরোপ করা হবে। সেখানে তিস্তা বাংলাদেশের অগ্রাধিকার।
এছাড়াও স্বাধীনতা যুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী (শহীদ) ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের পরিবারকে সম্মাননা জানানোর সিদ্ধান্ত রয়েছে বাংলাদেশের। এ নিয়ে অনেক দিন ধরে কাজ চলছে। সর্বশেষ পাওয়া তথ্য মতে, ১৬৬৮ জন শহীদের নাম পেয়েছে বাংলাদেশ। সেই তালিকা ধরে পরিবারগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।
সম্ভাব্য সফরসূচি:কূটনৈতিক সূত্রগুলোর দেয়া তথ্য মতে, সেখানে আগামী ৯ই এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকটি হতে পারে। সেখাবেই শীর্ষ বৈঠক আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সফরের দিন-তারিখ ঠিক হলেও গতকাল পর্যন্ত শেখ হাসিনা-মোদি বৈঠকের সময়ক্ষণ ঠিক হয়নি বলে দাবি করে এক কর্মকর্তা জানান, সফরটি হবে ৩ দিনে।
ভারতের প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জির অতিথিশালায় থাকবেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের কোনো প্রধানমন্ত্রীকে এবারই ওই বিরল সম্মাননা জানাবে ভারত। সফরকালে প্রেসিডেন্ট মুখার্জির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন শেখ হাসিনা। দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গেও তার বৈঠক হতে পারে। এছাড়া, দিল্লির রাজঘাটস্থ গান্ধী সমাধিও পরিদর্শন এবং আজমীর শরিফ জেয়ারতে যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।
২১ মার্চ ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/এসএস