নিউজ ডেস্ক : জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক হলে তার নেতৃত্বেই মুক্তিযুদ্ধ হতো, আর জিয়া হতেন প্রবাসী সরকারের প্রধান বা মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক। কিন্তু জিয়া এর কোনটিই ছিলেন না। তিনি ছিলেন প্রবাসী সরকারের বেতনভুক্ত একজন যোদ্ধা বলে মন্তব্য করেছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
অফিসার্স ক্লাব ঢাকা আয়োজিত স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় রোববার মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। সে ঘোষণার কপি তিনি চট্টগ্রামে পাঠিয়ে দেন। চট্টগ্রামের তৎকালিন আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নান ২৬ মার্চ কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে এ ঘোষণা একাধিকবার পাঠ করেন। ২৭ মার্চ জিয়া বেতারে একটি বিভ্রান্তিকর ঘোষণা দিলে চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ তার ওপর রুষ্ঠ হন। ২৮ মার্চ একই কাজ করলে নেতৃবৃন্দ জিয়াকে ডেকে কৈফিয়ত চান। তখন জিয়া তার ভুল স্বীকার করেন। পরে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ একটি ঘোষণা লিখে দেন এবং ২৯ মার্চ জিয়া তা বেতারে আবারো পাঠ করেন।
তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন থেকেই বঙ্গবন্ধু ছয়দফা ঘোষণা করেন। সে সময়ে অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ছয়দফা পক্ষে দাঁড়াতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু ছয়দফার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেন। তাঁর দূরদৃষ্টিতা দিয়ে ছয়দফার পক্ষে জনগণের রায় গ্রহণের লক্ষ্যেই ৭০’এর নির্বাচনে অংশ নেন। এ নির্বাচন ছিল মুলত ছয়দফার প্রতি বাংলার জনগণের সমর্থন আদায় করা। তার ভিত্তিতেই তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামকে মুক্তির সংগ্রামে রূপ দেন। ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমেই তিনি জাতিকে সুস্পষ্টভাবে তা জানিয়ে দেন এবং সারাদেশ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতি শুরু হয়। ২১ বছর ধরে স্বাধীনতা বিরোধীরা এ কাজ চালায়। এ সময়ে নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ভুল ইতিহাস শেখানো হয়। মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের সংখ্যা নিয়েও বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া প্রশ্ন তোলেন। স্বাধীনতার ৪৬ বছরে বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিনবছরসহ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকেছে মাত্র ১৬ বছর। দেশের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি হয়েছে এ সময়ের মধ্যেই।
অফিসার্স ক্লাবের সভাপতি মন্ত্রীপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. ইব্রাহীম হোসেন খান ও ক্লাবের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপকমিটির আহ্বায়ক রশিদুল আলম। পরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক এক গীতিনাট্য মঞ্চস্থ হয়।
২৭ মার্চ ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/এসএস