বুধবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৫, ০২:৩৩:১৮

দুই জোটেই অসন্তোষ, দল ছেড়েছেন শরিক নেতারা

দুই জোটেই অসন্তোষ, দল ছেড়েছেন শরিক নেতারা

মাহবুব হাসান ও হাবিবুর রহমান খান : অভ্যন্তরীণ অসন্তোষের শিকার ১৪ দল। প্রতিটি দলের নেতাদের মধ্যে বিরোধকে কেন্দ্র করে এ অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে দল ত্যাগের মাধ্যমে। শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টি এবং সাম্যবাদী দল ছেড়ে চলে গেছেন উল্লেখযোগ্য অনেক নেতা। মূলত রাষ্ট্রীয় ইস্যুতে দলের অবস্থান, আদর্শ, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সমুন্নত রাখতে না পারাই এ ক্ষোভের উৎস বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। আরেক শরিক দল জাসদেও চলছে অস্থিরতা। ১৪ দলের শরিকদের মাঝে প্রথম অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ দেখা দেয় ২০০৮-এর নির্বাচনের আগে। সে সময় নৌকা প্রতীকে নির্বাচন না করার দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদসহ বেশ কয়েকটি দল। কিন্তু জোটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সবাই নৌকা প্রতীকেই নির্বাচন করে। এ সিদ্ধান্ত সবাই মেনে নেননি। এর প্রতিবাদে ওয়ার্কার্স পার্টি ছেড়ে যান পলিট ব্যুরোর সদস্য হায়দার আকবর খান রনো। এরপর ২০১৩ সালে অস্থিরতা শুরু হয় সাম্যবাদী দলে। দিলীপ বড়ুয়া সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দলের আদর্শ, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য জলাঞ্জলি দিয়ে সরকারের সাফাই গাইছেন এমন অভিযোগ আনেন সাঈদ আহমেদ, হানিফুল কবির, কাজী মোস্তফা কামাল, এরশাদ আলী, আরিফুল হক সুমনসহ একাধিক জেলার নেতারা। একপর্যায়ে দিলীপ বড়ুয়া এবং দল ত্যাগকারী পক্ষ একে অপরকে বহিষ্কার করে। ২০১৩ সালের মাঝামাঝি এ ধরনের কিছু নেতা চট্টগ্রাম, রাজশাহী, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, কুমিল্লা এবং রাজবাড়ী জেলা নিয়ে আলাদা সাম্যবাদী দল গড়েন। এছাড়া সাম্যবাদী দলের পলিট ব্যুরোর সদস্য হারুন চৌধুরী ঢাকা দক্ষিণের ২০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে ছাড় না দেয়ায় তিনি আওয়ামী লীগের পাশাপাশি নিজ দলের ওপরও ক্ষুব্ধ। অবশ্য সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া মঙ্গলবার প্রতিবেদককে বলেন, আদর্শ, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য সবকিছু সমুন্নত রেখে দল সঠিকভাবেই চলছে। তিনি বলেন, আমি কী করছি, তা পুরো দেশবাসী দেখছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে যোগ দেয়ার প্রশ্নে আরেকবার টালমাটাল হয়ে ওঠে ওয়ার্কার্স পার্টি। জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এবং ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননকে এ সরকারের মন্ত্রী হিসেবে যোগদানের আহ্বান জানানো হয়। ইনু যোগ দিতে পারলেও দলের বিরোধিতায় নিজের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও মন্ত্রিসভায় যোগদান থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হন রাশেদ খান মেনন। তখন দলের পলিট ব্যুরোর সদস্য বিমল বিশ্বাস এবং সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা মেননের মন্ত্রী হওয়ার বিপক্ষে শক্ত অবস্থান তুলে ধরেন। মন্ত্রী না হয়ে পরিস্থিতি সামলাতে পারলেও এর অল্প কিছুদিন পরেই দলের কয়েকজন নেতার দলত্যাগ ঠেকাতে পারেননি মেনন। ২০১৪ সালের পাঁচ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার বিষয়ে মত তুলে ধরেন সাবেক রাকসু ভিপি ও ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা রাগীব আহসান মুন্না, তুষার রায়, আবদুস সাত্তার, আজিজুর রহমান এবং মোজাম্মেল হক তারা। এই ইস্যুতে তারা শেষ পর্যন্ত দল ত্যাগ করেন। দল ত্যাগের ধারাবাহিকতা এখনও অব্যাহত আছে বলে এই প্রতিবেদককে জানান মুন্না। তিনি বলেন, আমরা বলেছিলাম, ওই নির্বাচনে অংশ নিলে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রশ্নবিদ্ধ হবে। তাই দল ত্যাগ করি। এছাড়া একটি প্রগতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ, মুক্তচিন্তার আবহসহ যেসব রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের শর্তে ১৪ দল গঠিত হয়েছিল জোটে সেসবের অনুপস্থিতি রয়েছে বলেও মনে করেন তিনি। এরপরও অসন্তোষ থামেনি ওয়ার্কার্স পার্টিতে। নাশকতার আসামিদের আওয়ামী লীগে যোগ দেয়া নিয়ে দলের সভাপতি কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেননি। কিন্তু সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এ বিষয়ে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ ঝাড়েন। তাছাড়া খাদ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখা, জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তেও ওয়ার্কার্স পার্টিতে অসন্তোষ আছে। সর্বশেষ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সমর্থন না দেয়াতেও অনেকে ক্ষুব্ধ। যদিও ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য বিমল বিশ্বাস মনে করেন, তেল-গ্যাস, বিদ্যুৎ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবহন ভাড়া, জাতীয় সম্পদ রক্ষার প্রশ্নে ওয়ার্কার্স পার্টি আগের অবস্থানেই আছে। তিনি বলেন, তার দল রাষ্ট্র এবং জনবিরোধী যে কোনো ইস্যুতেই প্রতিবাদ করে থাকে। তবে, সেটা যে মাত্রায় প্রচার করলে দৃশ্যমান হওয়ার কথা, ঘাটতি সেখানেই। এ প্রসঙ্গে তিনি গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি এবং সুন্দরবন রক্ষা প্রশ্নে তার দলের সংসদ সদস্যদের স্মারকলিপির উদাহরণ তুলে ধরেন। জাসদের তেমন সংকট দৃশ্যমান না হলেও সম্প্রতি দলটি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এর গঠনতন্ত্র এবং স্লোগান সংশোধন প্রশ্নে। দলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ নুরুল আম্বিয়া দলের স্লোগান ‘বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র’-এর স্থলে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ করা এবং গঠনতন্ত্রে কিছু সংশোধনী আনার প্রস্তাব দেয়ায় এরই মধ্যে এ নিয়ে একচোট আলোচনা হয়েছে। সামনের সম্মেলনে তা নিয়ে আবারও উত্তপ্ত আলোচনার আশংকা রয়েছে। এছাড়া জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্তত দু’জন নেতা সরকারের ইস্যুর সঙ্গে সুর মিলিয়ে জাসদ সভাপতি বক্তব্য দেয়ায় ক্ষুব্ধ বলে একটি সূত্র প্রতিবেদককে নিশ্চিত করে। ক্ষোভ রয়েছে অপর দুই শরিক গণতন্ত্রী পার্টি ও ন্যাপেও। গণতন্ত্রী পার্টির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রেসিডিয়াম সদস্য এই প্রতিবেদককে বলেন, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন ইস্যুতে দলের অবস্থান আর আগের মতো নেই। আদর্শ, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অনেকটাই নমনীয়। এসব নিয়ে আসন্ন বৈঠকে আলোচনা করবেন বলে জানান তিনি। একই অভিযোগে ন্যাপ ছেড়েছেন আবদুল গণি। আরেক নেতা শফিকুর রহমান নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। টানাপোড়েন চলছে ২০ দলে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে নানা ইস্যুতে চলছে টানাপোড়েন। জোটগতভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা সে বিষয়ে কোনো আলোচনাও হচ্ছে না। গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে শরিকদের যথাযথ মূল্যায়ন না করায় শরিকদের মধ্যে বিরোধ বাড়ছেই। সরকারবিরোধী কর্মসূচি প্রণয়ন, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাসহ গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোতে জোটের অবস্থান কি হবে সে বিষয়ে ঐকমত্যে ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। অন্যতম শরিক জামায়াতকে নিয়ে সন্দেহ, অবিশ্বাসের কারণে জোট নেতাদের অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে। জোটের শরিকরা নিজেদের মধ্যে দূরত্ব কমাতে উদ্যোগ নেয়ার জন্য বিএনপির নীতিনির্ধারকদের আহ্বান জানাচ্ছেন। কিন্তু বাস্তবে এ লক্ষ্যে কেউ এগিয়ে আসছেন না। স্থানীয় সরকার আইন সংশোধন হওয়ার পর এ প্রসঙ্গে জোটের অবস্থান কি হবে তা নিয়ে এখনও অন্ধকারে শরিক নেতারা। তারা জানেন না ২০ দলীয় জোট স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা। অংশ নেয়া বা না নেয়ার বিষয়ে জোটবদ্ধ সিদ্ধান্ত গ্রহণের উদ্যোগ না নেয়ায় শরিকদের মাঝে নতুন করে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এসব কারণে অনেকটা উদ্দেশ্যহীনভাবে চলছে জোটের কার্যক্রম বলে মনে করেন জোটের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, দু’দফা সরকারবিরোধী আন্দোলনে ব্যর্থতার পর অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছেন শরিক দলের নেতারা। জোটগতভাবে কোনো কর্মসূচি দূরে থাক একসঙ্গে তারা বসছেনও না। ভবিষ্যতে জোটের কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে কারও কোনো ধারণাই নেই। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কোনো তোড়জোড়ও লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। যে যার মতো করে চলছে। সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে বিএনপি অধিকাংশ সময় জোটের শরিকদের এড়িয়ে চলে এমন অভিযোগ করেন কয়েক নেতা। একাধিক নেতা প্রতিবেদককে বলেন, যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে জোটগতভাবে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন হলেও কার্যত তা হচ্ছে না। সিদ্ধান্ত নেয়ার পর নিয়মরক্ষার স্বার্থে তাদের অবহিত করা হয়। তখন কিছুটা আলোচনা হয়। তবে সেই আলোচনা সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলে না। এ কারণে নামে ২০ দলীয় জোট হলেও কার্যত একদলীয় জোটের মতোই চলছে। জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান এই প্রতিবেদককে বলেন, জোটের ভেতর কিছু সমস্যা থাকতে পারে। তাই বলে ২০ দল অকার্যকর বা টানাপোড়েন চলছে তা বলা যাবে না। তিনি বলেন, ২০ দলীয় জোট মূলত আন্দোলন ও নির্বাচনমুখী জোট। এ মুহূর্তে দেশে সেরকম কোনো পরিস্থিতি নেই। তাই স্বাভাবিকভাবেই জোটগতভাবে কার্যক্রম তেমন থাকার কথা নয়। এ ছাড়া জোট নেত্রীও অনেক দিন ধরে দেশের বাইরে। তিনি দেশে ফিরে আসার পর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বসবেন। জানা গেছে, শরিকদের যথাযথ মূল্যায়ন না করায় দীর্ঘদিন ধরে নেতাদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। এ কারণে বিভিন্ন সময় জোট ভাঙনের গুঞ্জনও শোনা গেছে। তবে প্রকাশ্যে এসব টানাপোড়েনকে পাত্তা না দিলেও বিষয়টিকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে নেয় বিএনপি। শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলাদা বৈঠকসহ তাদের অভিযোগ আমলে নিয়ে তা সমাধানের আশ্বাস দেয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে এর কোনো প্রতিফলন নেই। তিন মাস টানা আন্দোলনের পরপরই জোটের বৈঠক ডাকা হয়নি। আন্দোলনে ব্যর্থতা ও ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়ে হয়নি কোনো বিশ্লেষণও। সর্বশেষ ১২ আগস্ট জোট নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন খালেদা জিয়া। ওই বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ওই সময় লন্ডন যাওয়ার আগে সৌজন্য সাক্ষাতের অংশ হিসেবেই এ বৈঠক ডাকা হয়। নেতারা বলেন, জোটকে সক্রিয় করতে দলীয় প্রধান ও মহাসচিবদের নিয়ে আলাদা দুটি কোর কমিটি গঠনসহ বেশকিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার দাবি ওঠে। কিন্তু এ দাবিও বাস্তবায়িত হয়নি। সময় স্বল্পতা ও নানা কারণে অনেক সময় জোটের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক সম্ভব হয় না। তাছাড়া কম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে তাদের বৈঠকও প্রয়োজন নেই। সে ক্ষেত্রে দলীয় প্রধানের পরিবর্তে মহাসচিবদের নিয়ে এ ধরনের কমিটি করা যেত। এতে মহাসচিবরা বসেই যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। কিন্তু সেটাও হয়নি। এ ছাড়া জোটকে সক্রিয় ও কার্যকর করতে একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠনেরও প্রস্তাব করা হয়। তাও এখন পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি। ফলে জোটের কার্যক্রমে গতি আসছে না। এসব কারণে জোটে ক্ষোভ-অসন্তোষ কমছেই না। এদিকে জামায়াতকে নিয়ে জোটের মধ্যে সৃষ্ট সন্দেহ-অবিশ্বাস এখনও কাটেনি। সম্প্রতি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান জামায়াতে ইসলামীর জোটে থাকা না থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তার এমন মন্তব্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখায় জামায়াত। দলটির নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি হামিদুর রহমান আযাদ এক বিবৃতিতে বলেন, মাহবুবুর রহমান জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে যে ধরনের বিরূপ মন্তব্য করেছেন তা অন্যায়, অযৌক্তিক ও অপ্রত্যাশিত। তিনি (মাহবুব) জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে যে ভিত্তিহীন মিথ্যা মন্তব্য করেছেন তা ২০ দলীয় জোটের ঐক্যের পরিপন্থী এবং জাতীয় স্বার্থবিরোধী। জোটে থাকা না থাকা প্রশ্নে আযাদ বলেন, তিনি যে মন্তব্য করছেন তা উসকানিমূলক এবং ২০ দলীয় জোটের ঐক্যবিরোধী। ২০ দলীয় জোটের শরিক দলের একজন নেতা হয়ে তিনি এ ধরনের স্ববিরোধী মন্তব্য করতে পারেন না। সরকারের এজেন্ট হিসেবে যারা ২০ দলীয় জোট ভাঙতে চায় তারাই এ ধরনের আত্মঘাতী বিরূপ মন্তব্য করতে পারে। এ ধরনের মন্তব্য থেকে বিরত থাকতে তাকে আহ্বান জানানো হয়। জানতে চাইলে জোটের শরিক শফিউল আলম প্রধান প্রতিবেদককে বলেন, জোটের মধ্যে অভিমান, ক্ষোভ বা ভিন্নমত থাকতে পারে। কিন্তু বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে বাধ্য করছে বা করবে। বর্তমানে হয়তো সবাই একটু ঝিমিয়ে পড়েছেন বা নিষ্ক্রিয়তা দেখা দিয়েছে। কিন্তু জোট উদ্দেশ্যহীন চলছে তা বলা যাবে না। তিনি বলেন, জোট নেত্রী বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছেন। লন্ডনে ছেলের সঙ্গে তাদের দল ও জোটের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করবেন। তিনি (খালেদা জিয়া) দেশে ফেরার পরই জোটের বৈঠক ডেকে পরবর্তী করণীয় চূড়ান্ত করবেন। সেখানে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেয়াসহ আরও গুরত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে। ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী বলেন, এ মুহূর্তে জোটগতভাবে কোনো কর্মসূচি নেই এটা সত্য। তার মানে জোট নিষ্ক্রিয় সেটা বলা যাবে না। জোটভুক্ত দলগুলো তাদের নিজ নিজ সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধিতে কাজ করছে। তারা নিজ নিজ দল গোছাচ্ছে। সর্বশেষ জোটের বৈঠকেও এ সিদ্ধান্ত হয়।-যুগান্তর ২১ অক্টোবর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে