বুধবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৫, ০৪:৪২:৫৬

সুবিধাভোগীর তালিকায় যাচ্ছেন ওরা

সুবিধাভোগীর তালিকায় যাচ্ছেন ওরা

নিউজ ডেস্ক : স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে করার বিধান হওয়ায় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট আয়োজন করা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার ওপর প্রচারণায় জাতীয় সংসদের সদস্য ও সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অংশগ্রহণ নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশকে ব্যাহত করতে পারে। তাই সংসদ সদস্য ও মেয়রদের 'সুবিধাভোগী'র তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার চিন্তাভাবনা করছে ইসি। পৌরসভা নির্বাচনের বিধিমালা প্রায় প্রস্তুত। এই বিধিমালায় এমপি ও মেয়রদের সরকারি সুবিধাভোগীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হলে পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদের কোনো প্রার্থীর পক্ষে তাঁদের প্রচারণা চালানো সম্ভব হবে না। ইসির একজন উপসচিব বলেন, 'পৌরসভার আচরণবিধিতে সংসদ সদস্য ও মেয়রদের সরকারি সুবিধাভোগীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করাসহ অনেক পরিবর্তন হতে পারে বলে শুনেছি। কমিশন সভায় বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে কী ধরনের পরিবর্তন আনা হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।' ইসি সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার আচরণবিধিতে পদে থেকে নির্বাচন করার ক্ষেত্রে নির্বাচনকালে প্রার্থীরা কী কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবেন তা স্পষ্ট করা হচ্ছে। জাতীয় সংসদ সদস্য, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়ররা নিজ নিজ পদে থেকেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। কিন্তু নির্বাচনকালীন তাঁরা কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন বা পারবেন না, তা নিজ নিজ আচরণবিধিতে নির্ধারণ করা নেই। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হিসেবে পদে থেকে নির্বাচন করার বিষয়ে কিছু বিধিনিষেধ আছে। এ ছাড়া সংশোধিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আচরণ বিধিমালার ২২(ক) ধারায় উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পরই উপজেলা অফিস ও যানবাহন, উপজেলা পরিষদের আওতাধীন ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা এবং এনজিওর কোনো কার্যক্রম বা অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার ওপর বিধিনিষেধ রয়েছে। কিন্তু পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের বিষয়ে এ ধরনের কোনো বিধিনিষেধ নেই। নির্বাচনকালে তাঁরা পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের অফিস এবং যানবাহন ব্যবহার করতে পারবেন কি না সে বিষয়ে আইনে কিছু উল্লেখ নেই। এবার তা স্পষ্ট হচ্ছে। ইসির কর্মকর্তারা জানান, সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধির সঙ্গে সমন্বয় রেখেই স্থানীয় নির্বাচনের জন্য আচরণবিধি করতে হবে। সে ক্ষেত্রে দলীয় প্রধানের ছবি, দলীয় প্রতীক ব্যবহারের সুযোগ থাকছে। পাশাপাশি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সুবিধাভোগী ব্যক্তির তালিকা নির্ধারণ করে বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে। বিদ্যমান স্থানীয় সরকারের সর্বস্তরের আচরণবিধিতে স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, চিফ হুইপ, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সমমর্যাদার ব্যক্তিদের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনের আচরণবিধিমালায় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির তালিকায় প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধীদলীয় উপনেতা, সংসদ সদস্য ও সিটি করপোরেশনের মেয়রকেও যুক্ত করা হয়। সংসদ সদস্য ও মেয়ররা সংশ্লিষ্ট উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন। আবার অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির দায়িত্বও পালন করছেন তাঁরা। ফলে স্থানীয় নির্বাচনে তাঁদের সরকারি সুবিধাভোগীর তালিকায় আনার চিন্তাভাবনা করছে কমিশন। প্রসঙ্গত, সরকারি সুবিধাভোগী ব্যক্তিরা সব ধরনের সুবিধা ছেড়ে শুধু নির্বাচনী এলাকার ভোটার হলে ভোট দিতে এলাকায় যেতে পারবেন। ইসির কর্মকর্তারা আরো জানান, সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, হুইপ ও পদমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা প্রচারণায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়ে থাকেন। উপজেলা, পৌরসভাসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে এ সুযোগ দেওয়া হবে কি না সে বিষয়ে আলোচনা চলছে। সংসদ সদস্য ও মেয়রদের বিষয়টিও বিবেচনা করা হচ্ছে। ইসির একজন উপসচিব জানান, সময় কম থাকায় স্থানীয় সরকার আইন সংশোধন-সংক্রান্ত অধ্যাদেশ জারি করা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আচরণবিধিতেও বেশ কিছু সংশোধনী আসবে। নির্বাচনকে প্রভাবমুক্ত রাখার জন্য আচরণবিধিতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। আর অধ্যাদেশের গেজেট হলেই বিধিমালা সংস্কারে হাত দেবে ইসি।-কালেরকণ্ঠ ২১ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে