সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০২:০৯:৩৬

শিগগিরই শুদ্ধি অভিযানে আওয়ামী লীগ

শিগগিরই শুদ্ধি অভিযানে আওয়ামী লীগ

আলী আসিফ শাওন : আগামী ডিসেম্বরে ত্রিবার্ষিক জাতীয় সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ। এর আগে আগামী এক মাসের মধ্যে সব জেলা ও উপজেলায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার মধ্য দিয়ে দলকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি।

দলটির নেতাকর্মীরা আশা করছেন, সম্মেলনের মধ্য দিয়ে দলের ভেতরে এক ধরনের শুদ্ধি অভিযান চলবে। যাদের কারণে দলকে দুর্নাম কুড়াতে হয়েছে তাদের ছাঁটাই করা হবে। অপেক্ষাকৃত কিন ইমেজের নেতাদের নিয়ে আসা হবে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ে। অন্যদিকে সম্মেলনের খবরে চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন ক্ষমতাসীন দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটিতে তেমন কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি ২০১২ সালের ৩১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সর্বশেষ জাতীয় সম্মেলনে। পুরনো কমিটির প্রায় সব নেতাই বহাল রয়েছেন। কিছু নেতার পদবিতে রদবদল আর কয়েকজন নতুন মুখ সংযোজন হয় সে সম্মেলনে। কিন্তু এবার দুর্নীতি, অপকর্ম, অপরাধ ও পদবাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে যেসব নেতার নামে তাদের কপাল পোড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মূলত তারাই বাদ পড়তে পারেন কমিটি থেকে। তাদের স্থলে আসতে পারেন একঝাঁক মেধাবী ও নতুন মুখ।

শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদেও পরিবর্তন আসতে পারে। সম্পাদকম-লীতে সৃষ্টি হতে পারে নতুন কিছু পদ, ঝরে পড়তে পারেন কয়েকজন। সদস্য হিসেবে যোগ দিতে পারেন একঝাঁক নবীন মুখ।

দলের নেতাকর্মীদের জাতীয় কাউন্সিলের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, যত সমস্যাই আসুক না কেন, আগামী ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক জাতীয় সম্মেলন হবে। এর আগে এক মাসের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ জেলাগুলোয় সম্মেলন এবং যেসব জেলায় সম্মেলন হয়েছে সেখানে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন তিনি।

গত শুক্রবার রাতে গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা প্রতিবেদককে এ তথ্যগুলো নিশ্চিত করেছেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আগামী ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হবে। এরপর নতুন করে কেন্দ্রীয় সম্মেলন করা হবে।

একই বিষয়ে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ গতকাল শনিবার বিকালে বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, তাই আমাদের দলের মধ্যেও গণতান্ত্রিক চর্চার একটি প্রতিফলন নির্ধারিত সময়ে জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করা। এবারও তিন বছর পূর্ণ করে আগামী ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা আশাবাদী সম্মেলনের মাধ্যমে দল আরও চাঙ্গা হবে, নেতাকর্মীরা নতুন করে উজ্জীবিত হবেন।

দলের সর্বোচ্চ ফোরামের এ সিদ্ধান্তে চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। গত শুক্রবার গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের বৈঠকের এই সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশের আগেই গতকাল শনিবার বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরের কল্যাণে এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলাপচারিতায় ইতোমধ্যেই জেনেছেন আওয়ামী লীগের জেলা ও তৃণমূলের দায়িত্বশীল নেতারা।

তাদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, টানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার কারণে অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে এখন নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। এই প্রতিযোগিতা রয়েছে ওয়ার্ড-থানা পর্যায় থেকে শুরু করে জেলা ও কেন্দ্রীয় পর্যায় পর্যন্ত। আর সম্মেলন মানে দলে নতুন রক্ত সঞ্চালন। এ কারণে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বেশ উৎফুল্ল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক আলী আজগর টগর এমপি বলেন, কেন্দ্রীয় সম্মেলনের খবরে আমরা বেশ উৎফুল্ল। কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আগে জেলা সম্মেলন হবে। জেলা পর্যায়ে নতুন ও পুরনো নেতাদের সমন্বয়ে কমিটির মাধ্যমে দলের গতি সঞ্চার হবে বলে আমরা আশাবাদী।-আমাদের সময়
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে