সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৪:১৭:৫৪

ভারতের সিদ্ধান্তে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ

ভারতের সিদ্ধান্তে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ

নিউজ ডেস্ক : ভারতের নিষেধাজ্ঞায় উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ। সরকার চায় পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির ওপর থেকে ভারত আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিক। এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হলে ভারতের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি আরও বাড়বে। এ ব্যাপারে ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণকে গতকাল রোববার ফোনে বিষয়টি অবহিত করেছেন পাট ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী মির্জা আযম।

তিনি বলেন, ভারত পাট ও পাটজাত পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তাতে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিষয়টি নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সাথেও পাট ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী বৈঠক করেছেন। এসময় পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিকারক সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দরাও উপস্থিত ছিলেন। পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিকারকদের পক্ষ থেকে বাণিজ্য মন্ত্রীকে জানানো হয়, এই নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বেন।

বৈঠকে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ বলেন, ভারতের এমন সিদ্ধান্তের কারণে প্রায় ৮শ’ কোটি টাকার পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি ঝুঁকির মুখে পড়েছে। সেই সাথে গত ১০ সেপ্টেম্বর ভারত এরকম নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর থেকে পাট ও পাটজাত পণ্য বোঝাই শতাধিক ট্রাক বেনাপোলে আটকে রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাণিজ্যমন্ত্রী এ বিষয়টি নিয়ে ভারতের পাট ও বস্ত্রমন্ত্রীর সাথে আলোচনার জন্য দিল্লীতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকশিনারকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিকে পাটজাত পণ্য রপ্তানিকারকদের সংগঠনের এক নেতা জানান, ভারতের এমন নিষেধাজ্ঞার কারণে তাদের দেশের ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত। আর সে কারণেই ভারতীয় এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের নির্দেশনা চেয়ে সেখানকার পাটজাত পণ্য আমদানিকারকরা আদালতে মামলা করতে যাচ্ছেন।

জানা যায়, বাংলাদেশ থেকে পাটজাত পণ্য নেয়ার জন্য ভারতীয় ব্যবসায়ীরা অগ্রিম অর্থ দিয়ে থাকেন। এই নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তবে বাংলাদেশের কাঁচাপাট রপ্তানিকারকরা ভারতে রপ্তানির জন্য যে এলসি খুলেছেন- এই নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা বড় ধরনের লোকসানের কবলে পড়বেন।

উল্লেখ্য, গত ১০ সেপ্টেম্বর ভারতের বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পাট কমিশন এক আদেশে ভারতের কাঁচাপাট ও পাট পণ্য আমদানিকারকদের লাইসেন্স বাতিল করে দিয়েছে। ভারতের এমন শর্তের কারণে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানির জন্য প্রস্তুতকৃত কাঁচাপাট ও পাটজাত পণ্য সবই এখন স্থবির হয়ে গেছে। ভারতের জারি করা ওই নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছে, ভারতীয় জুটমিলগুলোকে কাঁচাপাট আমদানি করে তাদের পাটকলে সরবরাহ এবং তাদের নিজস্ব গুদামে মজুদ করতে হলে ভারতীয় পাট কমিশন থেকে অনুমতি নিতে হবে।

এ প্রসঙ্গে ভারতে কাঁচাপাট রপ্তানিকারক ও বাংলাদেশ শিপার্স কাউন্সিল এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম প্রতিবেদককে বলেন, ভারতের এই সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশের শতভাগ রপ্তানি নির্ভর কাঁচাপাট ও পাট পণ্য হুমকির মুখে পড়েছে।

তিনি বলেন, আসন্ন ঈদুল আযহার পূর্বে ভারতের এমন সিদ্ধান্ত দেশের পাট ব্যবসায়ী ও পাট চাষীদের জন্য মরণফাঁদ। তিনি অবিলম্বে এমন সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে দ্রুত সরকারি পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান।বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০১৪-২০১৫ সালে মোট ৬৫০ কোটি ডলারের বাণিজ্য হয়েছে।

এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানির পরিমাণ মাত্র ৫০ কোটি ডলার। একই বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৮৬ কোটি ৫০ লাখ ডলারের কাঁচাপাট ও পাট পণ্য রপ্তানি হয়েছে। যার মধ্যে ভারতে রপ্তানি হয়েছে ১০ কোটি ৪৪ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য।-ইনকিলাব
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে