বৃহস্পতিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৫, ১২:৩৩:১১

ফের নিরাপত্তা সংশয়ে কূটনীতিকরা

ফের নিরাপত্তা সংশয়ে কূটনীতিকরা

ঢাকা : নিরাপত্তা নিয়ে এখনও বিশ্বাসযোগ্য হুমকি রয়ে গেছে। তাই বিদেশীদের সতর্ক থাকতে হবে। বুধবার চার দেশের রাষ্ট্রদূতরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কথাই জানিয়েছেন। তারা কিছুটা বিস্ময় প্রকাশ করেন- আসলে দুই বিদেশী হত্যা নিয়ে কি হতে যাচ্ছে? তদন্ত অগ্রগতি সম্পর্কেও তারা জানতে চান। এ সময় তারা তাদের সংশয়ের কথা মন্ত্রীকে জানান। বার্নিকাট ছাড়াও যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট গিবসন, কানাডার হাইকমিশনার বেনওয়া পিয়েরে লারামে ও অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার গ্রেগ উইলকক প্রায় দেড় ঘণ্টা আলোচনা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে। সাম্প্রতিক সময়ে দুই বিদেশি নাগরিক ইতালিয়ান তাভেলা সিজার ও জাপানি নাগরিক হোশি কোনিও হত্যাকাণ্ডসহ সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির বিষয়ে তারা দীর্ঘ আলোচনা করেন। এ সময় দুই বিদেশি হত্যা নিয়ে কী হতে যাচ্ছে সে বিষয়েও আলোচনা করেন কূটনীতিকরা। আলোচনা শেষে বের হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বলেছেন, বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্র সন্তুষ্ট। তবে এখনো তারা এ ব্যাপারে শঙ্কামুক্ত নয়। মার্কিন রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বিদেশিদের নিরাপত্তা দিতে বাংলাদেশ সরকার যেসব নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে তাতে তারা সন্তুষ্ট হলেও বিদেশিদের ওপর আরও হামলা হতে পারে। এমন সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকার কারণেই দূতাবাসের পক্ষ থেকে মার্কিন নাগরিকদের সতর্ক করা হয়েছে। তাদের সতর্ক করা আমাদের দায়িত্ব। তাই আমরা তাদের সতর্ক করে দিচ্ছি। তবে তার মানে এই নয় যে, আমরা তাদের এদেশে আসতে বা চলাফেরা করতে নিষেধ করছি। সরকার নিরাপত্তার যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি। অন্যদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে চার দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা বলেছেন, প্রত্যন্ত এলাকায় বিদেশিরা এখন আর নিরাপত্তাহীন বোধ করছেন না এবং রাস্তায় পুলিশি টহল তৎপরতা দেখে তারা সন্তুষ্ট। তিনি বলেন, সতর্কতা জারি করলেও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা বা অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূতরা বাংলাদেশ সরকারকে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দিতে পারেননি। চার রাষ্ট্রদূত বের হয়ে যাওয়ার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমরা তাদের কাছে বারবার জানতে চেয়েছি, কোথায় হামলা হতে পারে- আমাদের জানান। কিন্তু হামলা হতে পারে-এমন সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য তারা দিতে পারেননি। তিনি বলেন, কোন বিষয়ে শঙ্কা রয়েছে, তা জানতে চেয়ে রাষ্ট্রদূতদের বলেছি, আপনারা তথ্য দেন কোন কোন জায়গায় আপনাদের অনিশ্চয়তা রয়েছে। আমাদের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা সেসব জায়গা খুঁজে বের করবে। জবাবে রাষ্ট্রদূতেরা বলেছেন, যেসব জায়গায় শঙ্কা রয়েছে, সেসব জায়গায় তাদের নিজেদের গোয়েন্দারাই কাজ করছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি তাদের একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেছি, আমরা যদি একসঙ্গে কাজ করি, তাহলে সমস্যাটা বেরিয়ে আসবে। সরকার বিদেশিদের নিরাপত্তায় যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তা বজায় থাকবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, বর্তমানে বিদেশিদের যে নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে তা নিয়মিত দেওয়া হবে কি না বৈঠকে রাষ্ট্রদূতেরা এমন প্রশ্ন করলে আমি বলেছি, আপনাদের যত দিন নিরাপত্তা দেওয়া প্রয়োজন, তত দিনই নিরাপত্তা দেওয়া হবে। বর্তমানে আমাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, দুই বিদেশি হত্যায় আইএস বা মৌলবাদী জঙ্গি গোষ্ঠীর জড়িত থাকার কোনো ‘ক্লু’ পাওয়া যায়নি। এ পর্যন্ত আমরা যা পেয়েছি সিম্পলি কন্সপিরেসি। আমরা ঘটনা দুটির কাছাকাছি এসে পৌঁছেছি, খুব শিগগিরই আমরা আপনাদের তা জানাব। প্রসঙ্গত, গত ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশান-২ এর ৯০ নম্বর সড়কে ইতালিয়ান নাগরিক তাভেলা সিজারকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। এরপর মোটরসাইকেল যোগে পালিয়ে যায়। এর পরে ৩ অক্টোবর রংপুর শহরের উপকণ্ঠের একটি গ্রামে গুলিতে নিহত হন জাপানি নাগরিক হোশি কোনিও। সেখানেও দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেল যোগে এসে খুনের ঘটনা ঘটায়। ২২ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে