দেশে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে : প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা : দেশে অধিকতর উন্নয়নে পর্যায়ক্রমে আরও ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় সরকারের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য স্থানীয় ও বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্টের লক্ষ্যে নতুন ধারণা নিয়ে কাজ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যে দেশে ২১টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিনিয়োগ, শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে এ সংখ্যা একশ’তে উন্নীত করার লক্ষ্যে তার সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এতে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি আরো গতিশীল হবে। বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের গভর্নিং বোর্ডের তৃতীয় বৈঠকে তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে কয়েকটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। আরো অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় এ ধরনের স্থান নির্ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বিভিন্ন অঞ্চলের সম্ভাবনার বিষয় বিবেচনায় নেয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংশ্লিষ্ট এলাকার সম্পদের পর্যাপ্ততার ভিত্তিতে বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ওইসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থাও বিবেচনায় নিতে হবে। শ্রমঘন শিল্প প্রতিষ্ঠার উপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, এ ধরনের উদ্যোগ বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। তিনি উত্পাদনের বহুমুখীকরণ, শিল্পায়ন এবং বাজারজাতের দিকে নজর দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালের আগেই বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে তার দৃঢ় আশাবাদের কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, বিভিন্ন ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী উদ্যোক্তারা তাদের নিজেদের উদ্যোগে বিদ্যুত্ উত্পাদন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারেন। এ প্রসঙ্গে তিনি কর্তৃপক্ষকে ভাল যোগাযোগ ব্যবস্থা বিবেচনায় নিতে এবং পানি সংরক্ষণাগার ও বৃষ্টির পানি ধরে রাখার বিধান সংযোজনের কথাও মনে করিয়ে দেন। পরিবেশ রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে জলাধার থাকার আবশ্যকতার কথাও বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের আয় অনেক বেড়েছে। একই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ বাজারও সম্প্রসারিত হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে তিনি আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের চাহিদার ভিত্তিতে স্থানীয়ভাবে শিল্প প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, বাংলাদেশের জমি খুবই উর্বর। এখানে আরো কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপন করতে হবে।
বৈঠকে অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের কর্মকাণ্ডের অগ্রগতি নিয়েও আলোচনা হয়। অন্যান্যের মধ্যে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক, ভূমি মন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, বিদ্যুত্, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সভায় উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. এস এ সামাদ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ এবং সংশ্লিষ্ট সচিবগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
২২ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে