নিউজ ডেস্ক: শিক্ষার্থী মূল্যায়নে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পরিবর্তন আনার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
নতুন এ ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত নম্বর বাড়িয়ে-কমিয়ে মূল্যায়ন করা হবে। নম্বরের ভিত্তিতে নয়, সরকার নির্ধারণ করে দেবে জিপিএ-৫-এর সংখ্যা।
এ ছাড়া মাত্র চার বছরের মধ্যে ফের কারিকুলাম এবং এক বছরের মধ্যে পাঠ্যবই পরিবর্তনের প্রস্তুতি চলছে। কারিকুলাম, পাঠ্যবই ও পরীক্ষা পদ্ধতি পরিবর্তনের অগ্রগতি পর্যালোচনায় ২৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বৈঠক বসছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুধু কারিকুলাম, পাঠ্যবই আর পরীক্ষা ও মূল্যায়ন পদ্ধতিই নয়, শিক্ষার অন্যান্য দিকেও ঘন ঘন কাটাছেঁড়া চলছে।
কোটি কোটি টাকার প্রকল্পে এক শ্রেণীর আমলা ও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষক বিদেশ ঘুরে আসেন। দেশে ফিরে জাতীয় পরিবেশ-পরিস্থিতি এবং আর্থসামাজিক দিক বিবেচনায় না নিয়ে বিদেশ সফরের লব্ধ জ্ঞানের আলোকে তৈরি নতুন পদ্ধতি চাপিয়ে দিচ্ছেন।
ফলে বিদেশ থেকে ধার করা ওইসব পদ্ধতি অনেক সময় ত্রুটিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। অসঙ্গতি ধরা পড়লেও অনেক ক্ষেত্রে তা টেনেহিঁচড়ে ছয়-সাত বছর চালু রাখতে দেখা যায়। যদিও নয়া সৃজনশীল পদ্ধতি বহুল সমালোচনার পরও ধরে রাখা হয়েছে।
কোনো ক্ষেত্রে সমালোচনার মাত্রা বাড়লে একপর্যায়ে তা বাতিল করা হয়। পরিবর্তে ফের চালু হয় নতুন কোনো পদ্ধতি। এভাবে ঘন ঘন এই পরিবর্তনের সঙ্গে শিক্ষার্থী-অভিভাবক এবং বেশিরভাগ শিক্ষকই খাপ খাওয়াতে পারেন না।
এতে বিপাকে পড়েন শিক্ষার সঙ্গে জড়িত সবাই। ফলে খুঁড়িয়ে চলে লেখাপড়া। জোড়াতালির ক্লাস কার্যক্রমের ক্ষতি পোষাতে শিক্ষার্থীকে হতে হয় কোচিং আর প্রাইভেটমুখী।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, শিক্ষার্থী মূল্যায়নে প্রস্তাবিত নতুন পদ্ধতি প্রবর্তনের উদ্দেশ্য ফলের গুণগত মান নিশ্চিত করা। এটা হলে একজন শিক্ষার্থী প্রকৃত অর্থে কতটা মেধাবী তা নিরূপিত হবে।
তিনি বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থায় ঘন ঘন পরিবর্তনের কোনো ঘটনা নেই। ১৯৯৬ সালের পর ২০১২ সালে কারিকুলাম পরিবর্তন হয়েছে। পাঠ্যবইও নতুন হয়েছে দু’বার। পাঠ্যবইয়ে মাঝখানে যা হয়েছে তা শুধু ইতিহাস বিকৃতি দূরের কাজ। সেটা একটা বড় কাজ ছিল।
এখন কারিকুলাম ও পাঠ্যবই পর্যালোচনা চলছে। প্রত্যেক দেশেই নির্দিষ্ট সময় পর এটা করা হয়। তিনি স্বীকার করেন, শিক্ষায় মৌলিক পরিবর্তন এনেছে সৃজনশীল পদ্ধতি।
ছাত্রছাত্রীদের সৃজনশীল, চিন্তাশীল এবং স্বাধীনভাবে লেখার সক্ষমতা তৈরির জন্যই এটি আনা হয়েছে। এটি বাস্তবায়নে সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে, তা উত্তরণে কাজ চলছে।
এমটিনিউজ২৪ডটকম/এম.জে