রবিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৫, ১২:২৩:২২

যে কারণে কঠিন সংকটে বিএনপি

যে কারণে কঠিন সংকটে বিএনপি

মাহমুদুল হাসান : ক্ষমতাসীনদের নানামুখী চাপ ও অভ্যন্তরীণ কোন্দলে কুপোকাত বিএনপি। মামলা ও গ্রেফতার আতঙ্ক, দল পুনর্গঠনের ঘোষণা দিয়েও এখনো দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন নেই। ফলে কঠিন সংকটময় সময় পার করছে দলটি। দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এবং তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চার দেয়ালেই যেন বন্দী হয়ে গেছে বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড। অভ্যন্তরীণ কোন্দলসহ নানামুখী চাপে কোণঠাসা হয়ে মাঠের রাজনীতি থেকে অনেকটাই ছিটকে পড়েছে দলটি। এ ছাড়া মামলা, জেল-জুলুম ও শারীরিক অসুস্থতার কারণে নীতি-নির্ধারণী ফোরামের পাশাপাশি শীর্ষ নেতাদের মধ্যে এখন বেশীরভাগই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে কেউ কেউ কয়েক দফা কারাভোগের পর রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়েছেন। অনেকেই আবার কারাগারে আছেন। কেউবা দীর্ঘদিন আত্মগোপনে রয়েছেন। সীমিত পরিসরে কেউ কেউ রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলেও অনেকেই সময় পার করছেন নীরবে-নিভৃতে। দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য দেশে বাইরে অবস্থান করছেন। ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চিকিৎসার জন্য দুই দফায় দেশের বাইরে যান। বুধবার রাতে তিনি দেশে ফিরেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনিও দলকে পুরোপুরি সময় দিতে পারছেন না। সব কিছু মিলে সাংগঠনিকভাবে অনেকটা স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এদিকে দুই বিদেশী নাগরিক হত্যা মামলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের জড়ানোর চেষ্টা, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল দুর্নীতি মামলা সাজা দিয়ে নির্বাচন থেকে বাইরে রাখতে দ্রুত সাক্ষ্যগ্রহণ করা হচ্ছে দলের পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ করা হচ্ছে। এ ছাড়া আছে দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যাওয়া-না যাওয়া নিয়ে জটিলতা। এ-সব নিয়েই নানামুখী চাপের মধ্যে আছে দেশের অন্যতম বৃহৎ এ দলটি। বিএনপির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী ড. মিজানুর রহমান শেলী প্রতিবেদককে বলেন, গত জাতীয় নির্বাচনে অংশ না নেওয়া, আন্দোলনে সফল না হওয়ায় বড় একটি রাজনৈতিক দলের হিসেবে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে একটা ভাটা চলে আসছে। এ ছাড়া বর্তমানে দলটির শীর্ষনেতা চিকিৎসার জন্য বিদেশে অবস্থান করছেন। কবে ফিরে আসবেন নেতাকর্মীদের কাছে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। এমন অবস্থায় সাংগঠনিক দুর্বলতা কীভাবে কাটানো যায় সেটার জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে দলের শীর্ষ নেতাদের। তিনি আরও বলেন, দলটিকে শক্তিশালী করার জন্য তৃণমূল থেকে সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্গঠন করা ভাল। এক্ষেত্রে সরকার নানাভাবে হয়রানি করবে, করছেও, জেল-জুলুমও দিচ্ছে। এ-সব উপেক্ষা করে এগিয়ে যেতে হবে। তা না-হলে রাজনীতির মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যাবে। সত্যিকার বিরোধী দল বলে কিছু থাকবে না। যদি এমনটা হয় তাহলে একনায়কতন্ত্র হবে। যেখানে জনপ্রতিনিধি থাকবে না। ফলে অপকর্ম হলে বাধা দেওয়ার কেউ থাকবে না। দলীয় অবস্থান জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. মাহবুবুর রহমান এই প্রতিবেদককে বলেন, দল পুনর্গঠনের কাজ চলছে। দৃশ্যমান হবে। আকাশে চাঁদ উঠলে সবাই দেখতে পাবে। দলীয় প্রধানের অনুপস্থিতে নেতাকর্মীরা হতাশ কী না— এমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দল আছে, দলের নেতারা আছেন, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দল চলছে। এতে হতাশ হওয়া কিছু নেই। এদিকে দল পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে দু’জন নতুন দায়িত্ব দেওয়া হলে হামলার শিকার হন। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকে নতুন দায়িত্বপ্রাপ্তসহ সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ ও সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুর ওপর পৃথকভাবে হামলা করা হয়। যদিও এ হামলার ঘটনা দুর্বৃত্তরা ঘটিয়েছে বলে দাবি করা হয়। তবে দলীয় সূত্রে জানা যায় এ-সব ঘটনার সঙ্গে বিএনপির নেতারাই জড়িত। গত ১৩ অক্টোবর ১০-১২ জন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় দফতর বিভাগে ঢুকে টিপুর ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা তাকে মারধর করে দ্রুত পালিয়ে যায়। এর আগে গত ১৪ জুন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালামের ওপরও হামলা চালানো হয়। এ-সব ঘটনা তদন্তে দলীয় শীর্ষ পর্যায়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে আপাতত কেউ মুখ খুলতে নারাজ। এদিকে তৃণমূল নেতাদের দাবি, সরকারের মামলা-হামলা, জেল-জুলুম, নির্যাতনের কারণে দল পুনর্গঠনের একটু সময় বেশী লাগছে। এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু বকর সিদ্দিক নান্নু প্রতিবেদককে বলেন, সরকারের জুলুম-নির্যাতনের ফলে কমিটি পুনর্গঠনে একটু সময় বেশী সময় নিতে হচ্ছে। তারপরও আশা করছি আমরা নভেম্বরের ১৫-২০ তারিখের মধ্যে কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি গঠনের কাজ শেষ করতে পারব। তিনি আরও বলেন, সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে কমিটি গঠনের কাজ শেষ করতে হবে। খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু ইউসুফ চৌধুরী এই প্রতিবেদককে বলেন, দীর্ঘ ৮ বছর আমরা ক্ষমতার বাইরে। বর্তমানে আমরা আন্দোলনেও নেই। সেক্ষেত্রে দল পুনর্গঠনের কাজটা করতে হচ্ছে। কিন্তু এটাও সঠিকভাবে হচ্ছে না। এতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরী হচ্ছে। এমনিতে সময়টা অনেক খারাপ। অনেক নেতাকর্মী জেলে আছেন, মামলা-হামলার শিকার অনেকই। তিনি আরও বলেন, শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি কর্মীদের আস্থাও কমে যাচ্ছে। পুনর্গঠনের ঘোষণা দিয়ে বার বার সময় পেছানো হচ্ছে, সুনির্দিষ্ট কোনো দিকনির্দেশনাও নেই— কবে কাউন্সিল হবে? আমরা জেলা কাউন্সিল করতে পারছি না। অথচ ওয়ার্ড-ইউনিয়ন, থানা কমিটি করা হয়ে গেছে। শুধু ঘোষণা বাকী আছে। আবু ইউসুফ চৌধুরী আরও বলেন, আওয়ামী লীগের নানা চাপের কারণে আমাদের কাজ করা অনেক কঠিন। তারপরও করতে হবে। না হয় সামনে আরও বিপদের সম্মুখীন হতে হবে। এদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বুধবার দলীয় কার্যালয়ে এক সভাতে বলেন, নির্বাচন থেকে বিএনপি নেতাদের বাইরে রাখার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে। কিন্তু নির্বাচনে জেতার জন্য বড় নেতার প্রয়োজন হয় না। দুই বিদেশী হত্যায় বিএনপি নেতাদের জড়িয়ে বক্তব্য দেওয়ার নিন্দা জানিয়ে ওই সভাতে নজরুল ইসলাম বলেন, ঢাকা মহানগরের সদস্য সচিবসহ অনেককে জড়িয়ে বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু উপযুক্ত প্রমাণ ছাড়া কাউকে অভিযুক্ত করা ঠিক নয়। দলের শীর্ষ নেতাদের অবস্থান : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যের মধ্যে মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন ২০১১ সালে ইন্তেকাল করেন। এদিকে দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছেন নীতি-নির্ধারণী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. আর এ গনি। দলীয় সভা ছাড়া কোনো কর্মকাণ্ডে তাকে দেখা যায় না। কমিটির আরেক সিনিয়র সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন কারাগারে। মানি লন্ডারিং মামলায় ২০১৪ সালের ১৩ মার্চ গ্রেফতার হন তিনি। কাশিমপুর কারাগারে বন্দী আছেন এই নেতা। অসুস্থ অবস্থায় কারাগারে দিন কাটছে তার। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী সদস্য। সম্প্রতি তার ছেলের মৃত্যুতে তিনি শোকাহত। স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা। তা ছাড়া তিনি শারীরিকভাবেও তেমন সুস্থ নন। ফলে দলের জন্য তিনিও তেমন সময় দিতে পারছেন না। স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য এম শামছুল ইসলাম অসুস্থ। দীর্ঘদিন তিনি দলের নীতি-নির্ধারণী ফোরামরে বৈঠকেও অংশ নিতে পারছেন না। আরেক সদস্য বেগম সারোয়ী রহমানও বয়সের ভারে ন্যুব্জ। লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান এবং নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় স্বল্প পরিসরে ঘরোয়া অনুষ্ঠানগুলো যোগ দিচ্ছেন। স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য এম কে আনোয়ারও আছেন কারাগারে। কমিটির আরেক সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার নীতি-নির্ধারণী বৈঠকে অংশগ্রহণ ও উচ্চ আদালতে দলের নেতাকর্মীদের মামলায় সহযোগিতা করছেন। স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া দলীয় কর্মসূচিতে সরব উপস্থিতি থাকলেও মামলায় থাকায় প্রকাশ্যে আসতে পারছেন না। কমিটির আরেক সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান ফোরামের বৈঠকের বাইরে ঘরোয়া আলোচনা সভাগুলো ও বিএনপির কূটনীতিক উইংয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। গ্রেফতার আতঙ্কে দীর্ঘদিন প্রকাশ্যে আসেন না স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। ১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নীতি-নির্ধারণী ফোরামের আরেক সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী দীর্ঘদিন কারাগারে আটক আছেন। দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে স্থায়ী কমিটির সদস্য তারেক রহমান ওয়ান-ইলেভেনের পর দীর্ঘদিন কারাভোগ শেষে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে অবস্থান করছেন। এদিকে দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডনে আছেন। ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শারীরিক অসুস্থতার কারণে দলকে পুরোপুরি সময় দিতে পারছেন না। এ ছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মধ্যে খন্দকার মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, সাঈদ এস্কান্দার ও মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন মারা গেছেন। বার্ধক্যজনিত কারণে হারুনার রশিদ খান মুন্নু, উকিল আব্দুস সাত্তার, ফজলুর রহমান পটল রাজনীতিতে সক্রিয় নয়। চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল মান্নান অকেনটাই নীবর। আরেক উপদেষ্টা গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নান কারাগারে। খালেদা জিয়ার ছোট ছেলের মৃত্যুর পর মোসাদ্দেক আলী ফালুর সরব দেখা যায়। পরবর্তীকালে কারাভোগ পর এখন অনেকটাই নীরব তিনি। চেয়ারপারসনের উপদেষ্টাদের মধ্যে— আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, এ্যাডভোকেট আহমদ আজম খান, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন তারাও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারছেন না। বিদেশে অবস্থান করছেন ড. ওসমান ফারুক। শওকত মাহমুদ কারাগারে, আব্দুল আউয়াল মিন্টু প্রকাশ্যে নেই। এ ছাড়া নূরুল ইসলাম দাদু ভাই, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, অধ্যাপক মাজেদুল ইসলাম, এ এস এম আব্দুল হালিম, জহুরুল ইসলাম, ব্যারিস্টার মুহাম্মদ হায়দার আলী, খন্দকার শহিদুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন সুজাউদ্দিন ও আব্দুল মান্নানের সাংগঠনিক, রাজনৈতিতে উপস্থিতি নেই বললেই চলে। আদালত অঙ্গনে আছেন এ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নাল আবেদীন। চেয়ারপারসনের নিরাপত্তা সংক্রান্ত দেখভালে এম এ কাইয়ূম সক্রিয় রয়েছেন। এ ছাড়া মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান, মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, শাহজাহান ওমর বীরউত্তম, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, মুশফিকুর রহমান, মনজুর আলম প্রমুখ চেয়ারপারসেন উপদেষ্টা। দলের ভাইস চেয়ারম্যান বিচারপতি টি এইচ খান বার্ধক্যজনিত কারণে নিষ্ক্রিয়। বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের আইনী পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। এম মোরশেদ খান ও হারুন অর রশীদ অসুস্থতায় রাজনীতিতে সক্রিয় নয়। ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ। ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার চার্জশিটে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তিনি এখন দেশের বাইরে আছেন। ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকাও চিকিৎসার জন্য অবস্থান করছেন যুক্তরাষ্ট্রে। সম্প্রতি তাকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম স্বল্প পরিসরে সক্রিয়। শমসের মবিন চৌধুরী বীরবিক্রম কারাভোগ পর মুক্তি পেয়ে নিজেকে গুটিয়ে রেখেন। আরেক ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টু কারাগারে আছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রাবেয়া চৌধুরী কুমিল্লায় অবস্থান করছেন। আরেক ভাইস চেয়ারম্যান রাজিয়া ফয়েজ মৃত্যুবরণ করেন। অবশ্য শামসুজ্জামান দুদুকে নয়াপল্টনে সংবাদ সম্মেলনে দেখা যায়। এ ছাড়া, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টাদের মধ্যে রিয়াজ রহমান, সাবিহ উদ্দিন কূটনীতিকদের নিয়ে কাজ করেন। যুগ্ম-মহাসচিবদের মধ্যে মোহাম্মদ শাহজাহান সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড নিয়ে কাজ করছেন। এদিকে আমানউল্লাহ আমান কারাগারে, বরকতউল্লাহ বুলু আত্মগোপনে, মিজানুর রহমান মিনু মুক্তি পেয়ে নীবর আছেন। দফায় দফায় কারাভোগ করেছেন আরেক যুগ্ম-মহাসচিব এ্যাডভোকেট রহুল কবির রিজভী আহমেদ। দীর্ঘদিন নিখোঁজ থাকার পর রহস্যজনভাবে ভারতে সন্ধান মিলে সালাহউদ্দিন আহমেদের। অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে কয়েকদিন কারাভোগের পর বর্তমানে তিনি টাউন জামিনে (শিলং শহর না ছাড়ার শর্ত) রয়েছেন। আইনী জটিলতা কাটিয়ে কবে তিনি আপাতত দেশে ফিরতে পারছেন না। সাংগঠনিক সম্পাদকদের মধ্যে এম ইলিয়াস আলী প্রায় চার বছর ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। এদিকে ফজলুল হক মিলন, মজিবুর রহমান সারোয়ার, হারুনুর রশীদ ও আসাদুল হাবিব দুলু, গোলাম আকবর খন্দকার কৌশলে গ্রেফতার এড়িয়ে চলছেন। এ ছাড়া জাতীয় নির্বাহী কমিটির অধিকাংশ সদস্যই গা বাঁচিয়ে চলছেন।-দ্য রিপোর্ট ২৫ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে