মঙ্গলবার, ৩০ মে, ২০১৭, ০৪:৩৮:৩২

'আল্লাহ আমাদের সহায় হবেন'

'আল্লাহ আমাদের সহায় হবেন'

নিউজ ডেস্ক: কক্সবাজার শহরের উত্তর নুনিয়াছড়া ও সৈকত উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে ৮ শিশু হঠাৎ ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছে। সোমবার রাত ১টার দিকে তারা অসুস্থ হয়। তাদের সঙ্গে একজন বয়স্ক নারী আক্রান্ত হন। প্রচণ্ড বমি করছেন তিনি। সোমবার দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

আশ্রয়কেন্দ্রে কোনো ধরনের মেডিকেল টিম না থাকায় আশ্রয় নেয়া লোকজন চরম উদ্বিগ্ন। স্থানীয় বাসিন্দা এবি ছিদ্দিক খোকন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জরুরি ভিত্তিতে অন্তত একটি দাবিমেডিকেল টিম পাঠানোর  করেছেন।

কক্সবাজার জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এবং মোরা মোকাবেলায় জেলা প্রশাসকের কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ মো. সাইফুল ইসলাম তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শহরের নুনিয়ারছড়া এলাকার কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্রে হঠাৎ বেশ কয়েকজন শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে। এদের সঙ্গে একজন নারীও ছিল। খবর পেয়ে দ্রুত মেডিকেল টিম পাঠানো হয়। তারা তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। এদের কয়েকজন আগে থেকেই অসুস্থ ছিল, আশ্রয়কেন্দ্রে এসে তা বেড়ে যায়।

তিনি জানান, জেলার প্রায় তিন শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্রে রাত ৩টা নাগাদ প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের সবার কাছে যথাসম্ভব খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। আমরা খবর পেয়েছি ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজার উপকূল থেকে মাত্র ২০০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থান করছে।

এদিকে, রাত ২টা থেকে হালকা বৃষ্টির সঙ্গে হালকা দমকা হাওয়া শুরু হয়েছে। থেমে থেমে তা অব্যাহত রয়েছে। এরপরই অধিকাংশ লোকজন শেষ মুহূর্তে আশ্রয়কেন্দ্র মুখো হয়েছে।

অপর দিকে শহরের সৈকত বালিক উচ্চ বিদ্যালয়, তৈয়বিয়া মাদ্রাসা, উত্তর নুনিয়াছড়াসহ অন্য আশ্রয়কেন্দ্রে ঘূর্ণিঝড়কবলিত মানুষদের খোঁজ-খবর নেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। এ সময় তিনি আশ্রিত লোকজনকে আতঙ্কিত না হতে অনুরোধ জানিয়ে মনে সাহস রাখারর পরামর্শ দিয়ে বলেন, আল্লাহ আমাদের সহায় হবেন।

সূত্র মতে, ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ রাত ৩টা নাগাদ কক্সবাজার উপকূলেরর ২০০ কিমি কাছে অবস্থান করছে। এটি ক্রমান্বয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠছে। যেকোনো মুহূর্তে কক্সবাজার সাগর উপকূলবর্তী এলাকায় আঘাত হানার আভাস দিচ্ছে আবহাওয়াবিদরা।

সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় আবহাওয়া অধিদফতর ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করেছে।

আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক সোমবার রাত সাড়ে ১১টায় জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ কক্সবাজার থেকে ২৮০ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। রাত ৩টার দিকে তা কক্সবাজার থেকে মাত্র ২০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল এটি আঘাত হানা শুরু করলে স্বাভাবিকের চেয়ে পানি ৫/৭ ফুট বাড়তে পারে। এটি মঙ্গলবার সকালের দিকে কক্সবাজার উপকূলের আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬২ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে তীরে ফিরে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, উপকূলের ৫৩৭টি আশ্রায়ন কেন্দ্রকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া ঘোষণা দেয়া হয়েছে উপকূলবর্তী সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে অস্থায়ী আশ্রায়ন কেন্দ্র। পর্যাপ্ত পরিবহন ব্যবস্থার পাশাপাশি চার হাজারের অধিক স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মাঠে কাজ করছে ৮৮টি মেডিকেল টিম। খোলা হয়েছে উপজেলা পর্যায়েও কন্ট্রোল রুম।
এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে