নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার পঙ্কজ সরন বলেছেন, সীমান্ত চুক্তির পর তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সইয়ের ওপর দুই দেশ গুরুত্ব দিচ্ছে। এ মুহূর্তে এ বিষয়ে অগ্রগতি হচ্ছে। তবে অগ্রগতি ফলাও করে প্রচারের চেয়ে নেপথ্যে কাজ করাই ভালো।
সোমবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস-বিস) আয়োজিত এক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে পঙ্কজ সরন এসব কথা বলেন। বিস মিলনায়তনে সংস্থাটি আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-ভারত সাম্প্রতিক সম্পর্কের অগ্রগতি ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি বক্তব্যে দেন।
বিসের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মুন্সি ফয়েজ আহমদের সঞ্চালনায় সংস্থার মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম আব্দুর রহমান স্বাগত বক্তব্য দেন। এরপর নির্ধারিত আলোচক হিসেবে প্রায় এক ঘণ্টা বক্তব্য দেন ভারতের হাইকমিশনার। পরে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে অতিথিদের প্রশ্নের উত্তর দেন।
তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি ও অববাহিকাভিত্তিক পানি ব্যবস্থাপনার সম্ভাবনা নিয়ে জানতে চাইলে পঙ্কজ সরন বলেন, তিস্তা নিয়ে রয়েছে আশা-নিরাশার ইতিহাস। বর্তমানে এ নিয়ে অগ্রগতি হচ্ছে। কিন্তু অগ্রগতি কী হচ্ছে সেটি ফলাও করে প্রচারের চেয়ে জোরালোভাবে কাজ করাটাই ভালো। তিনি বলেন, চুক্তি সই নিয়ে তিনি আশাবাদী।
ভারতের হাইকমিশনার বলেন, অববাহিকা ভিত্তিক পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) বাইরে দুই দেশের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক পর্যায়ে কথা হচ্ছে। তবে এই আলোচনা যতটা জোরালোভাবে হওয়া উচিত ছিল, সেভাবে হচ্ছে না। আমি মনে করি, সম্পর্কের ক্ষেত্রে পরবর্তীতে এ বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের পথে এ বিষয়টি নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
দুই প্রতিবেশীর সম্পর্ক এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক নিয়মিতভাবে হওয়া উচিত কী না জানতে চাইলে পঙ্কজ সরন বলেন, দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে ঘন ঘন টেলিফোনে আলাপ অত্যন্ত ফলপ্রসূ বলে মনে করি। শুধু সংকটকালীন সময়েই নয়, ভালো কিংবা খারাপ যেকোনো সময়ে সরাসরি এ ধরনের কথা বলার সুযোগ থাকা উচিত। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ সফরটি নিয়ে আমরা আশাবাদী।
সীমান্ত হত্যাকাণ্ডকে তিনি ‘দুর্ভাগ্যজনক’ অভিহিত করে তা পুরোপুরি ‘শূন্যের’ কোঠায় নামিয়ে আনার ব্যাপারে ভারতের প্রত্যয়ের কথা উল্লেখ করেন। পঙ্কজ সরন বলেন, সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা নিয়ে দুই দেশের হিসেবে তারতম্য থাকতে পারে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে সীমান্ত হত্যা উল্লেখজনক হারে কমেছে। ভারত সীমান্ত হত্যা পুরোপুরি বন্ধ করতে চায়। তবে সীমান্ত ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে দুই দেশের যৌথ দায়িত্ব রয়েছে। সীমান্ত কীভাবে শান্তিপূর্ণ হবে সেটি নিশ্চিত করতে দুই দেশের সীমান্ত রক্ষীদের বোঝাপড়া ও সমন্বয় খুঁজে বের করতে হবে।
ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, দুই দেশের সীমান্তের প্রধান অপরাধমূলক তৎপরতা গরু চোরাচালান। আর এটি অনেক সমস্যা ও অপরাধের উৎস। এ বিষয়টি কারও অজানা। কিশোরী ফেলানী হত্যাকে দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে তিনি ‘দুর্ভাগ্যজনক’ ঘটনা হিসেবে অভিহিত করেন।-প্রথমআলো
১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে