নিউজ ডেস্ক : খালেদা জিয়া বেশকিছু দিনের জন্য লন্ডন যাচ্ছেন। আর এ সময় দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও চিকিৎসার জন্য আমেরিকায় রয়েছেন। এ অবস্থায় দল পরিচালনার দায়িত্ব কে পালন করবেন এ প্রশ্ন এখন দলটির প্রায় সর্বস্তরের নেতাকর্মীর মনে। এ ব্যাপারে দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বশীল পর্যায়ের কেউ কিছু না জানালেও সিনিয়র এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায় দলের দায়িত্ব পালন করবেন।
জানা গেছে, আজ ঢাকা ত্যাগের আগে বিমানবন্দরে এ সিদ্ধান্তের কথা তিনি দলীয় নেতাদের জানিয়ে দেবেন। যুগ্ম মহাসচিব মো. শাহজাহান সাংগঠনিক দায়িত্বে আছেন। তিনি নজরুল ও গয়েশ্বরকে সহযোগিতা করবেন। তিনি আরো বলেন, মির্জা আলমগীর আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক থেকে সিঙ্গাপুরে আসবেন। সেখান থেকে ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় আসবেন। তখন স্বাভাবিকভাবে তিনিই দলের দায়িত্ব পালন করবেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আজ রাত ৯টায় এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে লন্ডন যাচ্ছেন। সেখানে অবস্থানরত বড় ছেলে তারেক রহমানসহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তিনি পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করে দেশে ফিরবেন।
বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, লন্ডন সফরে খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী থাকবেন তার একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার ও গৃহকর্মী ফাতেমা।
জানা গেছে, খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাচ্ছেন বিএনপির পক্ষ থেকে এমন কথা বলা হলেও এ সফরের রাজনৈতিক গুরুত্ব অনেক। কমনওয়েলথ মহাসচিবসহ ব্রিটেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে তার বৈঠক হওয়ার কথা আছে। দুই দফায় আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ার পর দল ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করছে বিএনপি। দলে বেশকিছু পরিবর্তনও আসতে পারে। এ ব্যাপারে দলের দুই শীর্ষ নেতা মা ও ছেলের বিশদ আলাপ-আলোচনার ব্যাপার রয়েছে।
বিএনপি সূত্রমতে, খালেদা জিয়ার লন্ডন সফর পারিবারিক হলেও রাজনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ড. ওসমান ফারুক ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী লন্ডনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন।
দলের একাধিক নেতা বলছেন, লন্ডনে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে তার মা খালেদা জিয়ার বৈঠকে দল পুনর্গঠন, আগামী জাতীয় কাউন্সিল, ছাত্রদলের কমিটি, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনসহ দলের গুরুত্বপূর্ণ কিছু পদে বেশকিছু পরিবর্তনের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। বিশেষ করে, দলের মহাসচিব কে হবেন, সে বিষয়ে চার বছরের বিতর্কের অবসান হতে পারে।
গত মাসেই খালেদা জিয়ার লন্ডন সফল করার কথা ছিল, কিন্তু সফরের দিনক্ষণ নিয়ে সে সময় ব্যাপক ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়। তখন বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, চোখের চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া লন্ডন যাবেন। ১০, ১১ অথবা ১২ আগস্ট খালেদা জিয়া লন্ডন যাচ্ছেন এমন ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে ২৬ আগস্ট কাউন্সিলের নির্বাচনের জন্য খালেদা জিয়ার তার সফল স্থগিত করেন বলে জানা যায়। এছাড়া ওই সময় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচারকের কাছে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা তার চোখের চিকিৎসার কথা জানিয়ে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছিলেন। এবার অবশ্য সে ধরনের কোনো আবেদন করা হয়নি। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট-সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় ১৭ সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য আছে। খালেদা জিয়া এ মামলার অন্যতম আসামি। তার উপস্থিতিতে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।
এ বিষয়ে আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, ওই তারিখে বেগম জিয়ার আদালতে উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক নয়।-যাযাদিন
১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে