নিউজ ডেস্ক : মা দ্বিতীয় স্বামীর হাত ধরে উধাও। বাবাও আরেক নারীকে বিয়ে করে কোথায় আছেন জানা নেই। বাবা-মা বেঁচে থেকেও নেই মেরাজ আলমের জীবনে। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছে মেরাজ। রিকশা চালিয়ে অতিকষ্টে চলছে তার পড়ালেখা।
মেরাজ আলম বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ ৪.২০ পেয়ে এসএসসি পাস করে ২০১৫ সালে। পরে ভর্তি হয় কবি নজরুল সরকারি কলেজে। এখন এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র।
বাবা-মা থেকেও নেই। বর্তমানে রিকশা চালিয়ে নিজের লেখাপড়া চালাচ্ছেন এই উদ্দোমী তরুণ। তবে ঢাকায় থাকা খাওয়ার খরচ মিটিয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে মিরাজের পক্ষে। তাই একটি চাকরি চান তিনি। অবশ্য সমাজের বিত্তবানদের একটু সহায়তাই পারে মেধাবী এ তরুণের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়তে।
৪/১ ওয়াল্টার রোড, 'সূত্রাপূরের একটি মেসে একরুম ভাড়া করে মেরাজ ও তার দুই বন্ধু থাকে। দুপুর থেকে রাত অবধি রিকশা চালায় মেরাজ। কেন রিকশা চালায়, পরিবারে কে কে আছেন, রিকশা চালানো ছাড়া আর কী করে এমন বেশকিছু প্রশ্নের জবাবে মেরাজ বলে, রিকশা কী ভাই সাধে চালাই। খাবো কীভাবে। বাপ-মা থেকেও নেই। দুজনেই দ্বিতীয় বিয়ে করেছে। আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই।'
পড়ালেখার খরচ কীভাবে চলে জানতে চাইলে মেরাজ বলে, কলেজের এক বড় ভাই আছে। সে বলেছে তোর বেতন লাগবো না। আমি ব্যবস্থা করে দেব। কিন্তু এখনো কিছুই হয়নি। বইয়ের যে দাম।
রিকশা চালিয়ে আয় সম্পর্কে সে বলল, 'প্রতিদিন ৮০ টাকা জমা দিতে হয়। সপ্তাহে পাঁচ দিন রিকশা চালাই। যা হয় তাতে মোটামুটি চলে যায়। কিন্তু রিকশা চালিয়ে পড়ালেখা করতে আর ভালো লাগে না। জীবনের সঙ্গে আর পারছি না। কলেজে যেতে নিজের কাছেই কেমন যেন লজ্জা লাগে। অনেক সময় পরিচিত বন্ধু যাত্রী হিসেবে সামনে এসে দাঁড়ায়। তখন নিজের কাছে খুব ছোট লাগে।'
জুন, ২০১৭/এমটিনিউজ২৪ডটকম/এসএস