বুধবার, ২৮ জুন, ২০১৭, ০৭:১৩:৫১

সারা বিশ্বে বাংলাদেশ আজ ‘রোল মডেল’ : প্রধানমন্ত্রী

সারা বিশ্বে বাংলাদেশ আজ ‘রোল মডেল’ : প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক : আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর জঙ্গি দমনে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা গ্রহণ করে জঙ্গি দমনে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ আজ ‘রোল মডেল’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বুধবার সংসদে তার জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এদেশের মানুষ সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদকে ঘৃণা করে। দেশের অগ্রগতি ও নিরাপত্তার জন্য সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বড় ধরনের অন্তরায়। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আইন-শৃংখলা বাহিনীর সফল অভিযানে শীর্ষস্থানীয় জঙ্গি নেতাসহ গুরুত্বপূর্ণ সদস্য গ্রেফতার ও নিহত হয় এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলা-বারুদ উদ্ধার করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, হোলি আর্টিজান হামলার পর এ পর্যন্ত যতগুলো অপারেশন পরিচালিত হয়েছে তার সবগুলো থেকেই জঙ্গিগোষ্ঠী আঘাত হানার পূর্বে আইন-শৃংখলা বাহিনী তাদের পরিকল্পনা নস্যাৎ করে জঙ্গি আস্তানাসমূহ গুড়িয়ে দিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ প্রো-অ্যাক্টিভ পুলিশিং-এর একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ফলে বর্তমানে জঙ্গি তৎপরতা বহুলাংশে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে এবং জঙ্গি দমনে এ সাফল্য আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।

তিনি বলেন, জনগণের নিরাপত্তা এবং দেশের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখার লক্ষ্যে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড দমনে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এলিট ফোর্স র‌্যাব, বিশেষায়িত ইউনিট সোয়াটসহ পুলিশের সকল ইউনিট ও গোয়েন্দা সংস্থাকে জঙ্গি বিরোধী অভিযান ও কার্যক্রম জোরদার করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় পর্যায়ে জঙ্গি দমনে কাজ করার জন্য পুলিশ হেডকোয়ার্টাসের অধীনে একটি পূর্ণাঙ্গ ‘এন্টি টেরোরিজম ইউনিট’ গঠনের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। জঙ্গি নির্মূলের লক্ষ্যে পুলিশ বাহিনীতে ডিএমপি’র অধীনে ‘কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম’ নামে পুলিশের নতুন একটি জঙ্গি দমন ইউনিট চালু করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ‘জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমন’ শীর্ষক সমাবেশের আয়োজন ও জঙ্গিবাদ বিরোধী পুস্তক প্রকাশনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রখ্যাত এক লাখ মুফতি, আলেম ও উলামার দস্তখত সম্বলিত সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী ফতোয়া এবং র‌্যাবের উদ্যোগে ‘কতিপয় বিষয়ে জঙ্গিবাদীদের অপব্যাখ্যা এবং পবিত্র কোরআনের সংশ্লিষ্ট আয়াত ও হাদীসের সঠিক ব্যাখ্যা’ শীর্ষক পুস্তিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জঙ্গিবাদ বিরোধী প্রচার ও সমাবেশ আয়োজন করা হয়েছে এবং তথ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জঙ্গিবাদ বিরোধী ডক্যুমেন্টারী, শর্টফিল্ম, বিজ্ঞাপন চিত্র, ভিডিও ক্লিপ ইত্যাদি তৈরি করে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচারের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, জননিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে বিবেচিত হওয়ায় ও জঙ্গিবাদের সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় এ পর্যন্ত ৭টি সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জঙ্গিবাদ এবং জঙ্গিবাদের অর্থায়নে জড়িতদের কার্যকরভাবে দমনের লক্ষ্যে সরকার সন্ত্রাস বিরোধী আইন-২০০৯ (সংশোধনী-২০১৩) এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ প্রণয়ন করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের আন্তরিকতা এবং বর্ণিত পদক্ষেপসমূহ গ্রহণের ফলে বর্তমানে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং সমাজ জীবনের সর্বক্ষেত্রে শান্তি শৃংখলা ও স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ দমনে এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
জুন, ২০১৭/এমটিনিউজ২৪ডটকম/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে