সুমন কান্তি চৌধুরী : গত ১ জুলাই ২০১৬ রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান-২ এর হলি আর্টিসান বেকারি সাক্ষী হয়েছে ইতিহাসের জঘন্যতম এক নৃশংস জঙ্গি হামলার। কিছু বিকৃত মতাদর্শের মানুষের পরিকল্পনায় বিপথগামি কয়েকজন তরুণ যার কুশীলব।
পবিত্র রমজান মাসের শেষ শুক্রবার ইফতারের পর অন্যান্য দিনের মত রাজধানীবাসী সেদিনও প্রস্তুতি নিচ্ছিল তারাবির নামাজ আদায়ের। ঠিক এমন সময়ে ঘৃণ্যতম এক নরহত্যার সূচনা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবি’র ক’জন সদস্য।
হলি আর্টিসান বেকারিতে খাবার খেতে আসা দেশি বিদেশি নাগরিকদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের নিষ্ঠুরতার প্রদর্শনী হতবাক করে দেয় বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্বকে। জনমনে আশংকা জাগিয়ে দেয় বাংলাদেশ কি তবে হতে যাচ্ছে ভয়াল জঙ্গিবাদের আরেকটি উত্থানমঞ্চ?
সেই হামলার পূর্ণ হল এক বছর। এখন পর্যন্ত পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে সেই হামলা সম্পর্কিত নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, তত্ত্ব ও সূত্র। সব মিলিয়ে কিভাবে, কতদূর এগোল মামলার তদন্ত? এ সব প্রশ্নের উত্তর জানাতেই আমাদের আজকের প্রতিবেদন।
ফিরে দেখা বিভীষিকা : নিস্তরঙ্গ গুলশান লেকের পাড়ে হলি আর্টিসান বেকারি চত্বরে সেদিন খোশগল্পে মেতে ওঠা অতিথিদের উপর অতর্কিত আক্রমণে যেন দোযখ নেমে আসে। রাতের নিস্তব্ধতা খান খান করে বাতাস ভারি করে তোলে হতভাগ্যদের কান্না আর ভয়ার্ত আর্তনাদ।
সেদিন হলি আর্টিসান বেকারির ভেতরে হামলাকারীদের নৃশংসতার বলি হয় দেশী-বিদেশী মোট ২০ জন নাগরিক। এদের প্রত্যেককেই কুপিয়ে জখম করে অথবা গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে হামলাকারীরা। নিষ্ঠুরতার শিকার হয়ে মারা যায় ৯ জন ইতালীয়, ৭ জন জাপানি, ১ জন ভারতীয়, ১ জন বাংলাদেশি/আমেরিকান এবং ২ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
রাতভর এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞের সাক্ষী হয় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর প্রতিরোধ অভিযানে উদ্ধার হওয়া জীবিত ৩২ জন। যার মধ্যে প্রথমে পুলিশের অভিযানে উদ্ধার হয় ২ জন বিদেশীসহ ১৯ জন, এরপর সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার হয় দেশী বিদেশী মোট ১৩ জন।
পুলিশের প্রথম প্রতিরোধ অভিযানে হামলাকারীদের বোমার আঘাতে নিহত হয় ডিবি’র এসি রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ওসি সালাউদ্দিন। সব মিলিয়ে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় ২২। এছাড়া গুরুতর আহত হয় পুলিশের বেশ কয়েকজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ অনেকে।
যেভাবে হয়েছিল হামলার ছক : কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের তদন্তে উঠে এসেছে হলি আর্টিসানে হামলার পরিকল্পনার পুরো ছক। গোয়েন্দা তথ্যসূত্র মতে গত বছরের এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে পরিকল্পনা করা হয় রাজধানী ঢাকায় এমন একটি বড় ধরনের নাশকতা ঘটানোর যাতে করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়া কাভারেজ পাওয়া যায় এবং একই সাথে বাংলাদেশে যে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেছে সেটিও প্রমাণ করা যায়।
এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ক্যাডার বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রথমে ৩ জন ঢাকার ছেলেকে বাছাই করা হয় যাদের ঢাকা শহর সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা আছে। শেষ পর্যন্ত যাতে নিষ্ঠুরতার মাত্রা ধরে রাখা যায় সেজন্য আরো ২ জন গ্রামের ছেলেকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় যাদের অতীতেও অপরাধের রেকর্ড আছে।
ঢাকায় হামলা করার জন্য এ ৫ জনকে গাইবান্ধায় নিয়ে গিয়ে দেয়া হয় বিশেষ প্রশিক্ষণ। গাইবান্ধার চর এলাকার একটি ক্যাম্পে ২৮ দিনের এ প্রশিক্ষণে মূল প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করে জাহিদ(পরবর্তী সময়ে রুপনগরে সোয়াটের অভিযানে নিহত)।
প্রশিক্ষণ শেষে তারা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকাসহ ঢাকার কয়েকটি স্থানে সাময়িক অবস্থান করতে থাকে। একই সাথে চলতে থাকে গুলশান-বারিধারার সুবিধাজনক এলাকায় টার্গেট বাছাই এর কাজ। এক পর্যায়ে হামলার উপযুক্ত টার্গেট হিসেবে বেছে নেয়া হয় গুলশান ২ এর ৭৯ নম্বর রোডের হলি আর্টিসান বেকারিকে।
বেকারিটি হামলার উপযুক্ত টার্গেট হবার মূল কারণ এটিতে প্রচুর সংখ্যক বিদেশী অতিথির আনাগোনা ছিল, আর শুক্রবারে এ আনাগোনা থাকত সবচেয়ে বেশি। টার্গেট চূড়ান্ত হবার পর নির্ধারিত দিনে অর্থ্যাৎ গত ১ জুলাই ২০১৬ শুক্রবার সন্ধ্যার পর হলি আর্টিসান বেকারিতে পূর্বপরিকল্পিতভাবে চালানো হয় হামলা। তার পরের ঘটনা সবার জানা।
সিসিটিভি ফুটেজ থেকে দেখা যায় হামলাকারীরা বসুন্ধরা এলাকার বাসা থেকে প্রথমে রিক্সা এবং পরবর্তী সময়ে পায়ে হেঁটে হলি আর্টিসানে হামলা চালাতে আসে। এ সময় তাদের কাঁধে ব্যাগ আর পরনে ছিল টিশার্ট-জিনস-কেডস। আউটফিট এমন ছিল যাতে প্রয়োজনের মুহূর্তে দ্রুত মুভ করা যায়।
তদন্তের সূত্রগুলো বলছে হামলাকারীরা সাথে করে নিজস্ব কোন মোবাইল বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে যায়নি। যতক্ষণ তারা হলি আর্টিসানের ভেতরে ছিল ততক্ষণ তারা ভিকটিমদের মোবাইল/আইপ্যাড ব্যবহার করে ছবি তুলে মিরপুরের শেওরাপাড়ায় অবস্থানরত তামিম চৌধুরী এবং নুরুল ইসলাম মারজানের( উভয়েই পরবর্তী সময়ে সোয়াট ও পুলিশের আলাদা অভিযানে নিহত) কাছে পাঠায়।
হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র ও বিস্ফোরকসমূহ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে এই অপারেশনটি ছিল তাদের একটি Low Cost অপারেশন যেখানে ৮/৯ লক্ষ টাকার বেশি খরচ হয়নি। অর্থের মূল যোগানদাতা ছিল তানভীর কাদেরী(পরবর্তী সময়ে আজিমপুরে সোয়াটের অভিযানে নিহত)।
তানভির কাদেরী পেশায় একজন বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা ও তার স্ত্রী খাদিজা (আজিমপুরে সোয়াটের অভিযানে গ্রেফতার) ছিল একটি মাল্টিন্যাশনাল এনজিও’র কর্মী। এ দুজন তাদের কথিত ‘হিজরত’ এর আগে নিজস্ব এপার্টমেন্ট এবং গাড়ি বিক্রি করে প্রাপ্ত অর্থ জঙ্গি অপারেশনের জন্য গঠিত কমন ফান্ডে জমা দেয়। এভাবেই হলি আর্টিসানে হামলার জন্য যোগান হয় অর্থের।
হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র ও বিস্ফোরকসমূহের মূল যোগান আসে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও যশোর সীমান্ত দিয়ে। এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান(পরবর্তী সময়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে গ্রেফতার হওয়া)। এছাড়া অন্য কোন উৎস থেকে অস্ত্রের যোগান এসেছিল কিনা সে বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।
তদন্তের অগ্রগতি : হলি আর্টিসান হামলার পর যৌথ অভিযানে নিহত ৬ জনসহ এ হামলায় সহায়তাকারীদের আসামী করে গুলশান থানায় মামলা দায়ের করা হয়। কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করার পর এখন পর্যন্ত তদন্তের অগ্রগতি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক।
বিভিন্ন পর্যায়ক্রমিক অভিযানে প্রাপ্ত তথ্যসূত্র ও সাক্ষ্য বিশ্লেষণ করে ইতোমধ্যে হামলার ছক, অর্থ ও অস্ত্রের উৎস সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া গেছে যা আগেই বলা হয়েছে। এ হামলায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত এমন ২০ জনেরও অধিক জঙ্গির পরিচয় পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। যার মধ্যে হলি আর্টিসানে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে মারা যায় ৬ জন।
ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন পর্যায়ক্রমিক অভিযানে নিহত হয় হামলার মূল পরিকল্পনাকারী তামিম চৌধুরীসহ ৮ জন। এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয় হামলার সাথে জড়িত অস্ত্র-বিস্ফোরকের মূল যোগানদাতা বড় মিজানসহ মোট ৪ জন।
গ্রেফতাকৃতদের মধ্যে ৩ জন ইতোমধ্যে জঙ্গি হামলায় নিজেদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। এছাড়া পুলিশ খুঁজছে এমন ৫ জন সন্দেহভাজনের মধ্যে রয়েছে হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে বড় ধরণের ভূমিকা রাখা সোহেল মাহফুজ, রাশেদ ওরফে র্যাশ ও বাসারুজ্জামান ওরফে চকলেট নামের ৩ জঙ্গি।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী হলি আর্টিসানে হামলার সময় হামলাকারীদের শরীরে কোন ধরণের ড্রাগস বা রাসায়নিক বস্তুর প্রভাব ছিল না। যৌথ অভিযানে নিহত ৬ জনের শরীর থেকে সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষাশেষে এ প্রতিবেদন প্রেরণ করা হয় বাংলাদেশ পুলিশের কাছে।
এদিকে হামলায় নিহত ২০ জন ভিকটিমের পোস্টমর্টেম রিপোর্টও গত ১৯ জুন ২০১৭ পুলিশের হাতে এসেছে। কিন্তু যৌথ অভিযানে নিহত ৬ জনের পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পুলিশে এখন পর্যন্ত হাতে পায়নি।
তদন্ত পূর্ণাঙ্গরূপে শেষ করতে এ রিপোর্টটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করছেন কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোঃ মনিরুল ইসলাম বিপিএম-বার, পিপিএম-বার।
এবছরই তদন্ত শেষ করে রিপোর্ট দাখিল করার ব্যাপারে তিনি অত্যন্ত আশাবাদী এবং সেলক্ষ্যে অগ্রসরও হওয়ার কথাও জানান তিনি।
ঘুরে দাঁড়ানো বাংলাদেশ : হলি আর্টিসানে জঙ্গি হামলার ঘটনার রেশ বুঝি থামিয়ে দেবে উন্নয়নের পথে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, হয়তো বন্ধ হয়ে যাবে বিদেশি বিনিয়োগ- বিশ্ব মিডিয়ায় ভেসে বেড়ানো এমন হাজারো আশংকাকে মিথ্যা প্রমাণ করতে একেবারেই সময় নেয়নি বাংলাদেশ। আরো নির্দিষ্ট করে বললে বাংলাদেশ পুলিশ।
এদেশের ইতিহাসে জিম্মি হত্যার এতবড় ঘটনা প্রথমবারের মত হওয়ায় প্রথমে নিজেদের গোছাতে একটু সময় নিলেও দ্রুত ঘুরে দাঁড়িয়ে পাল্টা আঘাত হেনেছে বাংলাদেশ পুলিশ। দেশেজুড়ে বিভিন্ন সময়ে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সোয়াট টিমের একের পর এক জঙ্গি আস্তানায় সফল অভিযান ব্যর্থ করে দিয়েছে জঙ্গিদের নাশকতার প্রচেষ্টা।
এখন পর্যন্ত ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহত হয়েছে তামিম চৌধুরী, নুরুল ইসলাম মারজান, জাহিদ, তানভীর কাদেরীসহ মোট ৫৭ জন জঙ্গি। ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম-বার, পিপিএম দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন CIMS এর মত ভাড়াটিয়া তথ্য নিবন্ধন কার্যক্রম ও Hello CT এর মত সহজে অপরাধ সম্পর্কিত তথ্য/অভিযোগ প্রদানের মোবাইল অ্যাপ কার্যত রাজধানীছাড়া করেছে জঙ্গি সদস্যদের।
তার মতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থান ও নজরদারীর পরিপ্রেক্ষিতে সংঘবদ্ধ হবার কোন সুযোগ না পাওয়ায় জঙ্গি সংঘটন নব্য জেমবি’র কার্যক্রম এখন অনেকটাই স্থবির। তবে এখনো একেবারে এই সংগঠনটির কার্যক্রম থেমে গেছে বলা যাচ্ছে না।
আবার কোন এক সুযোগে মাথাচাড়া দিয়ে উঠে আর কোন রক্তাক্ত অধ্যায় যাতে রচনা করতে না পারে সেজন্য যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় সদা প্রস্তুত বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত ‘সোয়াট’ টিম। এলক্ষ্যে প্রতিনিয়ত গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও সার্বিক পরিস্থিতির উপর কঠোর নজরদারী অব্যাহত আছে।
যেখানে ইউরোপ, আমেরিকার মত উন্নত দেশ সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ধারাবাহিক বড় বড় নাশকতার ঘটনা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে সেখানে মাত্র ১ বছরেই জঙ্গিবাদের মূলোৎপাটনে বাংলাদেশ পুলিশের সাফল্যকে বেশ ইতিবাচকভাবে দেখছে বিশ্ব মিডিয়া।
গত এপ্রিলে বিবিসি তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়- হলি আর্টিসান হামলার পর বাংলাদেশের ঢেলে সাজানো নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত্যন্ত কার্যকর, জঙ্গিবাদও দৃশ্যত নিম্মমুখী।
গত ২৮ জুন জাতীয় সংসদে অধিবেশনেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে বলেন, জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ আজ বিশ্বমানচিত্রে রোল মডেল। একথা সত্য যে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশের আপাত অর্জিত সাফল্য অভাবনীয়ই বলা যায়। বিপর্যয় পেছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়ানো এমন দুঃসাহসী বাংলাদেশের স্বপ্নই তো এতদিন দেখেছিল বাঙালি। ডিএমপি নিউজ
জুন, ২০১৭/এমটিনিউজ২৪ডটকম/এসএস