সোমবার, ০৩ জুলাই, ২০১৭, ১২:০৪:০২

নিজের অপকর্ম ঢাকতে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ

নিজের অপকর্ম ঢাকতে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: গাজীপুরের কালীগঞ্জের সমগ্র এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ মাদকের একক আধিপত্য বিস্তার করে আসছিল উপজেলার বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের দক্ষিণবাগ গ্রামের আবু সাইদের ছেলে মাসুম মিয়া। আর এমনই অভিযোগ থানা পুলিশের। আর পুলিশ যখন মাসুমকে ধরল তখন সে রাতারাতি মাদক ব্যবসায়ীর খোলস পাল্টে হয়ে গেল পল্ট্রি ব্যবসায়ী। থানা থেকে বেড়িয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতনদের কাছে করলো ক্রস ফায়ারের অভিযোগ।

রোববার সকালে থেকে দুপুর পর্যন্ত অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ২৫ জুন (ঈদের আগের দিন রাতে) উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের ছৈলাদি গ্রামের মানুষ হাফিজুল্লাহ, গেলমান ও নাঈম নামের তিন যুবককে ২ পিস ইয়াবা ও ১ পুরিয়া গাঁজাসহ আটক করে। পরে তাদের স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক শেখের কাছে সোপর্দ করলে তিনি তাদের জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদে আটকে রেখে থানা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ তাদের থানায় নিয়ে আসে এবং দ্রæত তদন্ত স্বাপেক্ষে ঈদের আগের দিন রাতে মানবিক কারণে আটককৃতদের ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ছেড়ে দেওয়ার আগে আটকৃতরা মাদক ব্যবসায়ী মাসুমের নাম উল্লেখ্য করে। সেই প্রেক্ষিতে থানা পুলিশ মাসুমকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। কিন্তু ওই সময় তার কাছে মাদক না পাওয়ায় মুচলেকা নিয়ে তাকেও ছেড়ে দেয় পুলিশ।

মাসুম ছাড়া পেয়ে নিজেকে একজন পল্ট্রি ব্যবসায়ী দাবি করে উল্টো থানা পুলিশের বিরুদ্বে অভিযোগ তোলে। সে অভিযোগে জানায়, পুলিশ তাকে ক্রস ফায়ারের ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে মোটা অর্থ আদায় করেছে।

সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান, থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আলম চাঁদ ও কালীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পঙ্কজ দত্তের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মাসুম উপজেলার একজন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্বে কালীগঞ্জ থানায় রয়েছে অস্ত্র ও মাদকসহ একাধিক মামলা। ওইসব মামলায় তাকে একাধীকবার আটকও করা হয়। কিন্তু পরে জামিনে বেড়িয়ে পূনরায় আগের কাজে ফিরে যায়। সাম্প্রতিককালে তার এলাকায় একটি খুনের ঘটনার সাথে জড়িত বলেও অভিযোগ উঠেছে মাসুমের বিরুদ্ধে। তবে এ ব্যাপারে তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবেন বলেও জানান ওসি মো. আলম চাঁদ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাসুম এলাকার একজন মাদক ব্যবসায়ী হয়েও বিভিন্ন সময় থানা পুলিশের সোর্সের কাজ করতো। আর সেই ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্থানীয়ভাবে মাদক ব্যবসায় তাকে যারা বাধা প্রদান করতো তাদেরকে সে বিভিন্ন সময় থানা পুলিশ দিয়ে হয়রানী করতো।

সূত্র আরো জানায়, অতি সম্প্রতি উপজেলার বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের দক্ষিণবাগ গ্রামের সাখাওয়াৎ নামের এক যুবক প্রথমে গুম ও পরে খুন হয় মাদককে কেন্দ্র করে। শাখাওয়াৎ ছিল উপজেলার মাদক চক্রের মূলহোতা হুমায়ূন ও মাসুমের একজন সহযোগী। আর খুন হওয়া শাখাওয়াৎ তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলে মাদক ব্যবসায়ী মাসুমের ইয়াবা আনা নেওয়ার কাজ করতো। কিন্তু এলাকায় মাদক চক্রের হোতা হয়েও মাসুম বর্তমানে থানা পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করায় হতাশা প্রকাশ করেন স্থানীয়রা।

এদিকে স্থানীয় আরেকটি সূত্রে জানায়, উপজেলার বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের দক্ষিণবাগ গ্রামটি জুয়া এবং মাদকের জন্য প্রায়ই বিভিন্ন ঘটনা ঘটে থাকে। আর ওইসব ঘটনার নেতৃত্ব দেন মাদক ব্যবসায়ী মাসুম।

মাদক ব্যবসায়ী মাসুম তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে জানায়, পুলিশ তাকে কয়েকদিন পর পর ধর-পাকর করে হয়রানী করছে। কিন্তু টাকা দিলে আবার ছেড়ে দেয়।-সূত্র : জুমবাংলা
০২ জুলাই ২০১৭/এমটিনিউজ২৪ডটকম/আ শি/এএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে