নিউজ ডেস্ক: ‘তুমি কি প্রধানমন্ত্রীর নাম জানো?’
—জানি। ওনার নাম শেখ হাসিনা।
‘তিনি তোমার চিকিৎসার সব দায়িত্ব নিয়েছেন। চিন্তা করো না। তুমি ভালো হয়ে যাবে। ’
—ওনাকে আমার সালাম দেবেন। আমার জন্য দোয়া করতে বলবেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক ডা. জুলফিকার আলী লেনিন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন বিরল রোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার শিশু মুক্তামনিকে দেখতে গেলে দুজনের মধ্যে এসব কথা হয়।
এরপর বিকেলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম হাসপাতালে মুক্তামনিকে দেখতে গেলে মন্ত্রীর কাছে সে আকুতি জানিয়ে বলে, ‘স্যার, আমার জন্য দোয়া করবেন। আমি সুস্থ হতে চাই। ’ স্বাস্থ্যমন্ত্রী মুক্তার চিকিৎসার খোঁজখবর নেন এবং তাকে সুস্থ করতে যা যা করণীয় সব কিছু করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘আবুল বাজনদারের মতো শিশু মুক্তারও চিকিৎসা সফলভাবে সম্পন্ন হবে। মুক্তাও সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পারবে বলে আশা করছি। ’ এ সময় জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে মুক্তার সম্ভাব্য রোগ সম্পর্কে ধারণা দেন। তিনি জানান, বুধবার মেডিক্যাল বোর্ড মুক্তার পরিস্থিতি দেখে চিকিৎসা নিয়ে কাজ শুরু করেছে। আজ-কালের মধ্যেই মুক্তার শরীরে রক্ত দেওয়া হতে পারে।
এর আগে ডা. জুলফিকার আলী লেনিন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মুক্তামনির চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। তার সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ওষুধপত্র হাসপাতাল থেকে বিনা মূল্যে দেওয়া হবে। হাসপাতালে মুক্তামনির সঙ্গে থাকা পরিবারের সদস্যদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এর বাইরে পরিবারটির একান্ত ব্যক্তিগত খরচের জন্য হাতখরচ হিসেবে মুক্তামনির বাবা মো. ইব্রাহিম হোসেনের হাতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পাঠানো নগদ টাকাও দেওয়া হয়েছে। ’
প্রসঙ্গত, শিশু মুক্তামনি গত ৯-১০ বছর ধরে বিরল এক রোগে ভুগছে। তার ডান হাত ফুলে পচন ধরে গেছে, যা বুকের একাংশসহ শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে তার দিন পার হতো। সম্প্রতি কয়েকটি গণমাধ্যমে তাকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নজরে আসে। গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাকে ঢাকায় এনে বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
এদিকে মুক্তাকে দেখে বেরিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে বলেন, চিকুনগুনিয়া পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। এটা মূলত মশার মাধ্যমে ছড়িয়েছে, আর মশা নিধনের দায়িত্ব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নয়, সিটি করপোরেশনের। এ ছাড়া সীতাকুণ্ডে অজানা রোগে শিশু আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও মন্ত্রী জানান।
এমটিনিউজ২৪/এম.জে