শনিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৫, ১১:৫৩:৩৫

ছেলে হত্যার বিচার চান না দীপনের বাবা

ছেলে হত্যার বিচার চান না দীপনের বাবা

ঢাকা, ৩১ অক্টোবর : এদেশের কোর্ট-কাচারিতে বিচার হয় না মন্তব্য করে দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনের বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেছেন, আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই না। বিচার চেয়ে লাভ কোনো নেই। আজ শনিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দীপনের বাবা বলেন, তবে এটুকু বলতে পারি, নিয়ম অনুযায়ী আমি হয়তো ছেলে হত্যার একটি মামলা করব। এ দেশে সুবিচার বলে কিছু নেই উল্লেখ্য করে আবুল কাশেম ফজলুল হক আরও বলেন, উভয়পক্ষের শুভবুদ্ধির উদয় হোক এটাই কামনা করি। নিহত ফয়সালের বাবা জানান, আজ দুপুর দেড়টা পর্যন্ত ফয়সাল তাঁর সঙ্গেই বাসায় ছিলেন। পরে তিনি শাহবাগে তাঁর প্রকাশনী প্রতিষ্ঠানে যান। খোঁজ নেওয়ার জন্য তিনি কয়েকবার ছেলেকে ফোন করেন। কিন্তু ছেলে ফোন ধরেননি। বিকেল চারটার দিকে তিনি আজিজ সুপার মার্কেটের তিন তলায় ১৩১ নম্বর রুমের সামনে যান। এটি তাঁর ছেলের কার্যালয়। নিহতের বাবা আরও বলেন, ওই সময় তিনি কার্যালয়ের দরজা খুলতে গিয়ে বন্ধ পান। এ সময় কাচের দরজা দিয়ে ভেতরে আলো জ্বলতে দেখেন। ছেলে বাইরে গেছে ভেবে তখন তিনি সেখান থেকে চলে যান। পরে ছেলের বউকে ফোন করলে জানতে পারেন, দুর্বৃত্তরা লালমাটিয়ায় শুদ্ধস্বর প্রকাশনীর মালিক আহমেদুর রশীদ টুটুলসহ তিনজনকে কুপিয়ে জখম করেছে। এই কথা শুনে তিনি লোকজন নিয়ে আবার ছেলের কার্যালয়ে গিয়ে দরজা ভেঙে দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁর ছেলে পড়ে আছে। ওই অবস্থায় ফয়সাল আরেফিনকে উদ্ধার করে তাঁরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সন্ধ্যা সাতটার দিকে হাসপাতালের আবাসিক সার্জন রিয়াজ মোর্শেদ তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। ফয়সাল আরেফিন দীপনের স্ত্রী চিকিৎসক। তাঁর দুই ছেলে-মেয়ে। তাঁর অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা কাল সোমবার থেকে শুরু হবে। আর মেয়েটি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিসি মুনতাসিরুল ইসলাম বলেন, প্রায় একই সময়ে লালমাটিয়া ও আজিজ সুপার মার্কেটে হামলা হতে পারে। দু’টি ঘটনার ধরন ও আলামতের কিছু মিল রয়েছে। এই ঘটনার পেছনে কারা জড়িত তা খুঁজে বের করতে পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে। দীপনের স্ত্রী ডা. রাজিয়া রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হলের চিকিৎসক। স্বামী ও দুই সন্তান রিদান ফারহান ও হৃদমাকে নিয়ে তিনি হলের কোয়ার্টারে থাকতেন। আর দীপনের বাবা অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক পরীবাগে বসবাস করেন। শনিবার শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে নিজ কার্যালয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হল দীপনকে। প্রায় একই সময়ে একই কায়দায় লালমাটিয়ায় শুদ্ধস্বর প্রকাশনীর স্বত্ত্বাধিকারী আহমেদুর রশীদ চৌধুরী টুটুলসহ তিনজন লেখক ও ব্লগারকে কুপিয়ে ও গুলি করে গুরুতর আহত করা হয়। অন্য দু'জন হলেন-তারেক রহিম ও রণদীপম বসু। তাদের মধ্যে টুটুল ও তারেক আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দু'টি ঘটনায় দুর্বৃত্তরা হামলার পর কক্ষের বাইরে থেকে দরজা তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যায়। ৩১ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে