শনিবার, ১২ আগস্ট, ২০১৭, ০১:০৩:৫০

ঢাকায় নারীদের ভিড় বাড়ছে জিমে

ঢাকায় নারীদের ভিড় বাড়ছে জিমে

তামান্না মোমিন খান : আশির দশকে নারীরা রূপ-সচেতন হয়ে বিউটি পার্লারে যাওয়া শুরু করেন। কিন্তু নারীরা কখনও জিমে যাবেন- এটা হয়তো তখনও ভাবেনি কেউ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নারীরা স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে উঠেছেন। এ কারণে ফাইভ স্টার  হোটেল থেকে শুরু করে ওলিতে-গলিতে গড়ে উঠেছে ফিটনেস সেন্টার। আর এই সেন্টারগুলোয় দিন দিন ভিড় বাড়ছে নারীদের।

বসুন্ধারা সিটির গোল্ডজিমে গিয়ে দেখা গেল ট্রেডমিল করছেন শাহিন আনোয়ার। দুই সন্তানের জননী শাহীনের বয়স ৪০ বছর। থাকেন লালবাগে। দুই বছর থেকে নিয়মিত জিমে আসছেন তিনি। শাহিন বলেন,  দুই  বছর ধরে এই জিমের আমি সদস্য। নিয়মিত সাঁতার ও ট্রেডমিল ইয়োগা করি এখানে। হঠাৎ ওজন বেড়ে যাওয়াতে জিমে আসার সিদ্ধান্ত নিই। জিমে আসার আগে আমার ওজন ছিল ৮৬ কেজি। এখানে আসার পর ১০ কেজি কমেছে।

আগে সকালে পার্কে হাঁটতে যেতাম। কিন্তু অনেক সময়ই বৃষ্টি জন্য হাঁটতে পারতাম না। আবার ধুলাবালি আর গাড়ির শব্দে পার্কে হাঁটতে ভালো লাগে না। জিমে এসব ঝামেলায় পড়তে হয় না। এখানে ঝড় বৃষ্টি বাদল হলেও শরীর চর্চায় কোনো ঝামেলা হয় না। সুন্দর পরিবেশে নিরিবিলি শরীরচর্চা করা যায়। দশ বছর থেকে জিম করছেন খোরশেদা। তিনি থাকেন মণিপুরীপাড়ায়।

খোরশেদা বলেন, আমি এই জিমের প্রথম দিকের সদস্য। সপ্তাহে ছয়দিন জিমে আসি আমি। এখানে এসে আমি সুস্থ রয়েছি। এখন তো মানুষের চল্লিশ বছর পরেই পেসার ডায়াবেটিসসহ নানা রোগ দেখা দেয়। আমার বয়স পঞ্চাশের বেশি হলেও জিমে আসার কারণে আমি সুস্থ আছি; মাঝখানে কিছুদিন না আসলেই দেখা যায় দশ থেকে পনের কেজি বেড়ে গেছি। নারীদের শরীরচর্চার জন্য জিম নিরাপদ। কারণ, পার্কে গিয়ে নারীরা দৌড়ালে বা শরীরচর্চা করলে মানুষ তাকিয়ে থাকে। এতে নিজের মধ্যে অস্বস্তি কাজ করে।

তিনি বলেন, ‘নিজেও স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যায়াম করতে পারি না। কিন্তু জিমে সে সমস্যা হয় না; এখানে ওয়েট ট্রেডিং, ইয়োগা, আরবিক সুইমিং সব করতে পারি। সুইমিং পুলের কাছে গিয়ে দেখা গেল সাঁতার কাটছেন রোজিনা। রোজিনা জানান, তার সাঁতার কাটতে ভালো লাগে। সাঁতার কেটে তার ওজন আগের থেকে কমেছে। ত্রিশ বছর বয়সী রোজিনা তিন মাস থেকে জিমে আসছেন। জিমে আসলে শরীরের সঙ্গে সঙ্গে মনও ভালো থাকে। হাজারো ব্যস্ততার মাঝে প্রতিটি মানুষের একান্ত সময় থাকা দরকার। আর জিমে আমার সেই একান্ত সময়।’

গোল্ডজিমের ট্রেইনার ইয়াসমিন হক বলেন, আমাদের এখানে প্রতিদিনই নারীসদস্য বাড়ছে। প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ জন  নারী এখানে আসেন জিম করতে। তরুণী থেকে শুরু করে মধ্য বয়সী, বেশি বয়সী- সব ধরনের নারীসদস্য রয়েছেন এখানে। আমাদের সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ নারীসদস্যের বয়স ৭৫ বছর।

আরেক ট্রেইনার মাইসা দেওয়ান আঁখি বলেন, আমাদের খাদ্যাভাস পরিবর্তন হওয়াতে মানুষের যেমন রোগ বাড়ছে তেমনি ওজনও বাড়ছে। আগে নারীরা নিজেদের স্বাস্থ্যের প্রতি সচেতন ছিলেন না। কিন্তু দিন দিন নারীদের সচেতনতা বাড়ছে। এ কারণেই নারীদের জিমের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। এখন প্রতিটি জিমেই নারী জন্য রাখা হয় আলাদা ব্যবস্থা। আমাদের গোল্ডজিমেও নারীদের জিম করার জন্য রয়েছে সব ধরনের ব্যবস্থা। দুপুর বারোটা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত শুধু নারীরা এখানে জিম করতে পারেন। এই সময় কোনো পুরুষ এই জিমে প্রবেশ করতে পারবেন না। এমজমিন

এমটিনিউজ/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে