বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম : ১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির জন্য সবচেয়ে মর্মন্তুদ শোকের দিন। ব্যক্তিজীবনে আমার আর আমার পরিবারের ভয়াবহ বিপর্যয় ও সর্বনাশের দিন। মানব জীবনে কি করে মুহূর্তে দিন রাত উলট-পালট হয় তার জ্বলন্ত প্রমাণ ১৫ আগস্ট।
আমার জীবনে বিপর্যয় বহুবার এসেছে কিন্তু কোনোটাই ১৫ আগস্টের মতো নয়। বাড়ি পালানো মানুষ, স্কুল পালানো ছাত্র ছিলাম। কোনো কিছুই খুব একটা দাগ কাটতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যখন সবেমাত্র মানুষ হতে চলেছিলাম ঠিক তখনই জাতির ভাগ্যে নেমে আসে সেই মহাবিপর্যয়।
ওইভাবে অসময়ে বঙ্গবন্ধু নিহত না হলে জাতীয় উন্নতি, অর্থনৈতিক-সামাজিক মর্যাদা, বিশ্বে আমাদের রাজনৈতিক অবস্থান কোথায় থাকত অনেকে চিন্তাও করতে পারবে না। বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর অস্থিরতার মধ্য দিয়ে দেড়-দুই যুগ পেরিয়েছে। খন্দকার মোস্তাকের মাধ্যমে যে অস্থিরতা শুরু তা আজও পুরোপুরি দূর হয়নি। দেশ কখনো সুস্থির হতে পারেনি। নেতৃত্বের অদল-বদল হয়েছে কিন্তু মানুষের মধ্যে স্বস্তি আসেনি। স্বাধীনতার পরপরই বঙ্গবন্ধু যে ঐক্যবদ্ধ শক্তিশালী জাতি গঠন করতে চেয়েছিলেন সেটা আর হয়নি।
দোকানপাট, রাস্তাঘাট, গাড়ি-ঘোড়া, ঘরবাড়ি হয়েছে কিন্তু মানসিকভাবে বিভক্ত, জাতিগতভাবে বিভক্ত হয়ে ন্যায়-অন্যায় বিচারবোধ আমরা হারিয়ে ফেলেছি। জবরদখলের সংস্কৃতি চলছে আমাদের মাঝে। সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদে জনগণ দেশের মালিক। মালিকের কর্মচারীদের যে সম্মান মর্যাদা বা ক্ষমতা থাকে জনগণের তাও নেই। জনগণ কী ভাবছে, জনগণের ইচ্ছা-অনিচ্ছা, তাদের হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনার প্রতি কারও কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে জাতির পিতাসহ সব কিছু জিয়াউর রহমান— এই হলো আমাদের অবস্থা। আমরা মনেপ্রাণে কবে বাঙালি হব সেই সঙ্গে বাংলাদেশের নাগরিক— আল্লাহ রাব্বুল আল আমিন জানেন, আমরা কেউ জানি না। নিজেকে নিয়ে অনেক দিন থেকেই তেমন ভাবতাম না, এখন তো আরও ভাবি না। বঙ্গবন্ধু ৫৫ বছরে চলে গেছেন। ’৭১-এ পা দিয়ে এখন আর নিজেকে নিয়ে ভাবতে ইচ্ছে করে না।
বার বার মনে হয় কেন দুনিয়ায় এসেছিলাম, কি আমার মঞ্জিল, তার কতটা কি করেছি, আল্লাহ যে দায়িত্ব দিয়ে পাঠিয়েছিলেন তার কিছু কি করতে পেরেছি। মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানুষের কষ্টে কতটা কী করেছি। দয়াময়ের সামনে কোন মুখে দাঁড়াব। পাকিস্তানের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রাত-দিন লড়াই করে দেশ স্বাধীন করে নিজেদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে কতটা কী করতে পারছি। এসব সত্যিই খুব ভাবিয়ে তোলে। বিশেষ করে ১৫ আগস্ট এলে ভাবনাটা আরও বেশি করে ক্ষুরধার তীব্র হয়।
জন্মের পর মৃত্যু স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। সে থেকে কারও মুক্তি নেই। বঙ্গবন্ধু এখনো বেঁচে থাকলে ৯৭ বছর বয়স হতো। সচল থাকলে তবু ভালো কথা, অচল হলে কেমন হতো। আর তিনি বেঁচে থাকতে যদি এমন অত্যাচার অরাজকতা দেখতেন আমাদের মতো কিছুই করতে পারতেন না, তখন তার কেমন লাগত। তার চেয়ে যেভাবেই হোক চলে গেছেন, আমরা এখনো তার জন্য কাঁদি, ভাবিকালে অনেক মানুষ কাঁদবে— সেটাই ভালো। মানুষের সার্থকতা তার বেঁচে থাকার মধ্যে নয়, কে কত বছর বেঁচে থাকল তা কেউ বিচার করে না, মানুষ বিচার করে ইতিহাস বিচার করে তার কর্ম।
কবি সুকান্ত ২০-২২ বছর বেঁচে ছিলেন। ওর মধ্যেই তার কর্ম তাকে বাঁচিয়ে রেখেছে। কবি নজরুল বেঁচেছিলেন অনেক দিন, কিন্তু তারও কর্মকাল কবি সুকান্তের মতো ২০-২২ বছর। সুকান্তের জীবন যতটা কবি নজরুলের কাব্যচর্চা ততটা। ’৪২ সালে আকাশবাণীতে শিশুদের অনুষ্ঠান করতে গিয়ে বাকরুদ্ধ হয়েছিলেন। তারপর কত বছর বেঁচে গেছেন। তিনি যদি তার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত লিখতে পারতেন তাহলে আমাদের কত কিছু দিতে পারতেন। তাই সক্ষম থাকতেই বিখ্যাত মানুষকে চলে যাওয়া উচিত। বঙ্গবন্ধুর জন্য তার সমস্ত পরিবারের জন্য বুক কাঁদে, খানখান খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে যায়। তবু এখন যা দেখি, তা দেখে মনে হয় চলে গিয়ে ভালোই করেছেন।
বঙ্গবন্ধু যখন নিহত হন তখন বড় গুমোট পরিবেশ ছিল। দেশে একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনার জন্য তিনি পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। ৬২ জেলায় দেশকে ভাগ করেছিলেন। প্রশাসন বিকেন্দ্রিক করার জন্য জেলা গভর্নর পদ্ধতি করেছিলেন। এসব কারণে একদিকে যেমন বঙ্গবন্ধু অনুসারীদের মধ্যে আনন্দের বান ডেকেছিল, অন্যদিকে স্বাধীনতাবিরোধী বঙ্গবন্ধু বিরোধীরা প্রমাদ গুনছিল। স্বীকার করি আর না করি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সামর্থ্যবান অনেকেই মেনে নেয়নি।
পাকিস্তানি পোষ্যরা তো নয়-ই, মাথা গুনতিতে সাধারণ মানুষ ৯০ ভাগ স্বাধীনতার পক্ষে থাকলেও অর্থ-বিত্ত-ক্ষমতা-বিদ্যা-বুদ্ধি-প্রতিপত্তিবান শতকরা ৯০ জন ছিল পাকিস্তানের পক্ষে। অত বিপুল ক্ষমতা শক্তি থাকার পরও তারা কেন কীভাবে আমাদের কাছে হেরে গিয়েছিল সেটা এখনো বুঝতে পারি না। কখনো কখনো দক্ষিণা বাতাস যে কত প্রবল হয় তাকে যে কেউ রোধ করতে পারে না— সেটাই হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। চীন চায়নি, আমেরিকা চায়নি, মধ্যপ্রাচ্য চায়নি অথচ আমরা ছোট্ট একটি ভূখণ্ড, আমাদের হাতে কিছুই ছিল না।
আমরা সবাই চেয়েছি আল্লাহ রাজিখুশি হয়েছেন বিজয় লাভ করেছি। সেই সময় সারা পৃথিবীকে কাঁপিয়ে দেওয়া বিজয়ী নেতা আমেরিকার চক্ষুশূল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর খুব বেশি দিন বেঁচে থাকা সত্যিই কঠিন ছিল। আধুনিক জগতে শুধু আজরাইল-ই জান কবজ করে না, কিছু কিছু জান আমেরিকা সিআইএ-ও করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর তালিকা ছিল পেন্টাগনে। বঙ্গবন্ধু একজন বিশাল আত্মবিশ্বাসী মানুষ ছিলেন। তার তেমন আত্মবিশ্বাসেরও কারণ ছিল।
প্রতি পদে পদে তার কাছে শেষ পর্যায়ে শাসকরা হেরেছে, জনগণ বিজয়ী হয়েছে। তাই কেন তিনি জনগণের শক্তির ওপর বিশ্বাস করবেন না? জনগণের নেতা হয়ে যথার্থ জনগণকে বিশ্বাস করেছেন— সেটাই ছিল স্বাভাবিক। তার দারুণ আত্মবিশ্বাস ছিল কোনো বাঙালি তাকে হত্যা করবে না। প্রকৃত বাঙালি তাকে হত্যা করেওনি। যারা হত্যা করেছে তাদের বাঙালি বলা চলে না।
বাঙালির ঘরে জন্ম বলা গেলেও তারা বাঙালি ছিল না। আর কেউ কেউ বলার চেষ্টা করেন তারা মুক্তিযোদ্ধা। পাকিস্তান থেকে এসে কয়েক দিন ভারতে মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে ঘোরাফেরা করলে তারা মুক্তিযোদ্ধা হয় না। ডালিমরা কবে কোথায় মুক্তিযুদ্ধ করেছে আমরা কেউ জানি না। তাই তারা বাঙালিও না, মুক্তিযোদ্ধাও না। তারা মানুষরূপী ঘাতক। পৃথিবীর বহু দেশে এমন নরঘাতকদের জন্ম হয়, আমাদের দেশেও হয়েছে।
দু-এক বছর যাবৎ দেখছি শোকের মাস আগস্টের প্রথম দিন থেকেই মনে হয় যেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ইহজগতে ছিলেন না। পত্রপত্রিকা, রেডিও-টেলিভিশন সব জায়গায় শোকের মাতম। আওয়ামী কর্মীদের মধ্যে শোকের প্রচার বেশি হওয়ার পেছনে বড় কারণ ১৫ আগস্ট উপলক্ষে ব্যাপক অর্থ সমাগম। অনেকেই বলে সারা বছরের খরচ ১৫ আগস্টেই উঠে যায়। ঠিক জানি না, ওসব কি বা কেন করা হয়।
তবে ১৪ আগস্ট শেষ রাতেও কোনো বাঙালি শোকাহত ছিল না। আমাদের ভেঙে খানখান টুকরো টুকরো করে দিয়েছে ১৫ আগস্ট সকাল থেকে। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছিল। কেউ ভাবতেও পারেনি বাংলাদেশে কোনো কারবালার মর্মান্তুদ ঘটনা ঘটতে পারে। আগেই বলেছি, সামাজিক রাজনৈতিক অর্থনৈতিক বৈপ্লবিক পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু গভর্নর পদ্ধতি প্রবর্তন করেছিলেন। ১ আগস্ট থেকে বঙ্গভবনে প্রশিক্ষণ চলছিল। ১৫ আগস্ট ছিল শেষ দিন। মনোনীত গভর্নর হিসেবে প্রতিদিন সকাল ৭টায় মোহাম্মদপুর থেকে বঙ্গভবনে যেতাম। ৮টা থেকে ২টা পর্যন্ত প্রশিক্ষণ চলত।
প্রথম প্রথম প্রশিক্ষণে তেমন আগ্রহ না থাকলেও যে কোনো প্রশিক্ষণই যে জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ সেটা সেখানেই বুঝেছিলাম এবং খুবই আগ্রহী হয়ে উঠেছিলাম। সে সময় মা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পিজিতে ছিলেন। যেতে একবার আবার ফেরার পথে মা’র কাছে যেতাম। মাই ছিল আমার জীবন, প্রাণের বোঁটা। অন্যদিনের মতো ১৪ আগস্ট ১২টা-সাড়ে ১২টার দিকে মা’র কাছে গিয়েছিলাম। কথাবার্তা সেরে বেরুতেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মোড়ে ট্যাংক ঘোরাফেরা করতে দেখি।
কেন যেন ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট কাকরাইলের মোড় হয়ে ঘুরে এসেছিলাম। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট ও কাকরাইলের মোড়ে পরপর তিনটি ট্যাঙ্ক দেখতে পাই। শেরাটন ঘুরে একটা, সোনারগাঁওয়ের কাছে আরেকটা, ফার্মগেট পার হতে আরও দুটি ট্যাঙ্ক এগিয়ে যেতে দেখি। মনে প্রশ্ন জাগে শহরে ট্যাঙ্ক কেন। বিজয় সরণি পার হয়ে এমপি হোস্টেলের কোনায় রক্ষীবাহিনীর অফিস। সেখানে আনোয়ারুল আলমকে দেখতে পাই। আনোয়ারুল আলম কাদেরিয়া বাহিনীতে ছিল।
রক্ষীবাহিনীর প্রথম গোড়াপত্তন হয়েছিল কাদেরিয়া বাহিনীর চার হাজার সদস্য নিয়ে। আনোয়ারুল আলমকে যখন জিজ্ঞেস করি, শহরে ট্যাঙ্ক কেন? তিনি বলেন, ‘জানেন না? বঙ্গবন্ধু কাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং পুরান ঢাকায় বোমা ফেটেছে। তাই তিনটি ট্যাঙ্ক নামার অনুমতি দিয়েছেন।’ আঁতকে উঠে বলেছিলাম, কি বলেন? পিজি হাসপাতাল থেকে এ পর্যন্ত আমিই তো ৫-৬টা দেখে এলাম। ‘না, তেমন হওয়ার কথা না। আমাদের কাছে তিনটা ট্যাঙ্কের খবর আছে।’
না, তিনটি না, আরও বেশি ট্যাঙ্ক ঘুরছে। আনোয়ারুল আলম বলেন, ‘এইমাত্র রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। ইচ্ছা করলে আপনি নিজে গিয়ে শুনে আসতে পারেন।’ এখনকার মতো তখন অত জ্যাম ছিল না। সংসদ ভবনের কাছ থেকে ধানমন্ডি ৩২-এ যেতে ৪-৫ মিনিটের বেশি লাগত না। গিয়েছিলাম ধানমন্ডিতে। গেটে কিছু বলেনি।
রিসিপশনে যে ছিল সে বলেছিল, ‘স্যার, আমি রিং দেব, না আপনি দেবেন?’ বলেছিলাম, না, আপনিই দিন। দুই রিংয়ের বেশি হবে না ওদিক থেকে সাড়া পাওয়া গিয়েছিল। ‘স্যার, কাদের সিদ্দিকী সাহেব এসেছেন। ’ বলেছিলেন, ‘ওকে নিয়ে এসো।’ দোতলায় সিঁড়ির মুখে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা। লুঙ্গি পরা গেঞ্জি গায়ে হাত ধরে দক্ষিণের বারান্দায় নিয়ে জিজ্ঞেস করেছিলেন—
— এত রাতে?
— পিজিতে মাকে দেখতে গিয়েছিলাম।
— হ্যাঁ, আমিও তোর মাকে বিকালে দেখে এসেছি। কেমন আছেন তিনি।
— না, মা ভালোই আছেন।
— তাহলে এত রাতে কেন?
— হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে রাস্তায় ট্যাঙ্ক দেখলাম। তাই ট্যাঙ্ক কেন জানতে এলাম।
— ও তুই জানিস না? আমি কাল বিশ্ববিদ্যালয়ে যাব। কে বা কারা বোমা ফাটিয়েছে তাই ল অ্যান্ড অর্ডার শান্ত রাখতে তিনটি ট্যাঙ্ক বেরুতে বলেছি।
— আমি তো তিনটির বেশি দেখলাম।
— আরে না, সব কিছুতেই তোর সন্দেহ। একটা বিশাল মুক্তিযুদ্ধ করে তুই সব কিছুতে সন্দেহ করিস। তিনটার বেশি হবে কেন? জোর দিয়ে বলেছিলাম,
- মোটেই তিনটি নয়। অনেক বেশি। আমি অঙ্কে অত কাঁচা ছিলাম না। তিন গুনতে কখনো ভুল হয় না। পিঠে হাত বুলিয়ে বলেছিলেন,
— যা ঘুমা গিয়ে। পারলে সকালে আসিস। বঙ্গবন্ধুকে কিছু বলতে কখনো দ্বিধা হতো না। বলেছিলাম,
— আমার ভালো লাগছে না। আপনি তো অনেক কিছু বিশ্বাস করেন না। তবু বলছি, আমার খারাপ লাগছে। আপনি বেরিয়ে দেখে আসুন। একবার বঙ্গভবন হয়ে আসতে পারেন। ইচ্ছা করলে ওখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারবেন। একটু হেসে ধমক দিয়ে বলেছিলেন,
— তুই আমাকে হারুনুর রশিদ বানাতে চাস? রাষ্ট্রপতি ইচ্ছা করলেই যেখানে সেখানে যেতে পারে? তার একটা প্রটোকল আছে না?
— প্রটোকল আছে জানি। কিন্তু কিছু দিন আগে গভীর রাতে টাঙ্গাইল গিয়েছিলেন। সেখানে প্রটোকল কোথায় ছিল? সন্তোষে হুজুর মওলানা ভাসানীকে যেদিন দেখতে গিয়েছিলেন সেদিন তো প্রটোকল বাধা হয়নি? তবে কেন আজ শহরে বেরুতে প্রটোকল বাধা হবে? বঙ্গবন্ধু অবাক হয়ে বলেছিলেন,
— আমি টাঙ্গাইল গিয়েছিলাম তুই কীভাবে জানলি?
— কেন জানব না? আমি নিজে দেখেছি। সমস্ত সময়ই ছিলাম।
— ও ড্রাইভার যে বলেছিল কোন গাড়ি ফলো করছে। তাহলে সেটা তুই?
— হ্যাঁ। আবারও পিতার মতো পিঠে হাত দিয়ে বলেছিলেন,
— যা চিন্তা করিস না। ঘুমা গিয়ে।
রাত ১টা ৪০ মিনিটে চলে এসেছিলাম। সেই ঘুমই যে আমার শেষ ঘুম না হয়ে বঙ্গবন্ধুকে হারানোর ঘুম হবে সেটা কখনো ভাবিনি। বিডি প্রতিদিন
লেখক : রাজনীতিক।
এমটিনিউজ/এসবি