মঙ্গলবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৭, ১০:৩১:২১

‘নদী হামাক ফকির করিল বাহে’

‘নদী হামাক ফকির করিল বাহে’

নিউজ ডেস্ক : ‌‘ঘুমোত থাকি উঠি দেখং ঘর-দুয়ার নদীত ভাসি যাবার নাকছে। কোনো মতন জীবনটা নিয়া রাস্তাত উঠি বাঁচি আছুক। হামার যে আর কিছুই নাই? সবে ভাসি গেইছে। নদী হামাক ফকির করিল বাহে।’

এভাবেই কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ছকিনা বেওয়া (৬০)।

এবার ভয়াবহ বন্যায় ইউনিয়নের তালেব মোড় এলাকায় পাকা সড়ক ভেঙে ওই গ্রামের ছকিনা বেওয়ার (৬০) ২টি টিনের ঘরসহ ধান, চাল, আটা, দুইটি ছাগল নদীর পানিতে ভেসে যায়। নিরূপায় হয়ে ভেঙে যাওয়া বসতভিটের উপর কান্না করতে দেখা গেছে তাকে।

ছকিনা বেওয়ার ছেলের বউ কহিনুর বেগম (২৮) বলেন, ‘নদীতে সব ভেসে গেছে কোনোকিছু আটকাতে পারিনি। এখন মানুষের দেয়া খাবার খেয়ে বেঁচে আছি।’

সোমবার সরেজমিনে দেখা গেছে, তিস্তার পানি প্রবেশ করে গড্ডিমারী ইউনিয়নের সঙ্গে একমাত্র পাকা সড়কটি ভেঙে হাতীবান্ধা-বড়খাতা যোগাযোগ বিছিন্ন রয়েছে। এতে কয়েক হাজার মানুষ কষ্টে চলাচল করছেন। বন্যার্ত পরিবারগুলো সড়কে আশ্রায় নিয়েছেন।

তিস্তার পানি প্রবেশ করে কয়েক হাজার হেক্টার ধান ক্ষেত, মাছের প্রজেক্ট পানিতে ভেসে গেছে। পানি কিছুটা কমলেও বাড়ছে দুর্ভোগ।

তিস্তা নদীতে ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে সড়কে পড়ে আছেন গড্ডিমারী ইউনিয়নের রাশিদুল ইসলাম, শাহ আলম, নজরুল ইসলাম, মুকুল মিয়া, হাফিজার, মকবুল হোসেনসহ শতাধিক পরিবার।

পানিবন্দি অসংখ্য পরিবার ঘরে ফিরতে না পেরে স্থানীয় গড্ডিমারী উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।

নিচ গড্ডিমারী গ্রামের মুকুল মিয়া জানান, ‘তিনদিন ধরে পরিবার নিয়ে হাইস্কুলে পড়ে আছি কেই সাহায্য দিতে এগিয়ে আসেনি।’

গড্ডিমারী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য আ. আজিজ জানান, ‘তিস্তার পানি হঠাৎ আমাদের এলাকায় প্রবেশ করে প্রায় দুইশত ঘরবাড়ি নদীতে বিলিন হয়েছে।’
এমটিনিউজ২৪ডটকম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে