শনিবার, ০২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ০৬:৩৯:১১

যেমন চলছে এবারের চামড়ার বাজারের হালচাল

  যেমন চলছে এবারের চামড়ার বাজারের হালচাল

নিউজ ডেস্ক: কোরবানি পশুর চামড়ার বেচাকেনা এবার জমজমাট চলছে।  চামড়া ব্যবসায় জড়িয়েছেন ছাত্র, যুবক, চাকরিজীবী, রাজনৈতিক কর্মী থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সী মানুষ।  মৌসুমি ব্যবসায়ী নামে পরিচিত এসব লোকজন বিভিন্ন পাড়া থেকে চামড়া সংগ্রহ করে  নগরের চৌমুহনীর মোড়ের বাজারে জড়ো করছেন।  সেখান থেকে কয়েক হাত বদল হয়ে আতুরার ডিপোর চামড়ার আড়তে আজ শনিবার রাতের মধ্যে চামড়া চলে যাবে।  

সকালে কোরবানির পরপরই বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় স্থানীয় তরুণেরা চামড়া সংগ্রহ শুরু করেন।  দুপুর ১২ দিক থেকে সংগ্রহ করা চামড়া তাঁরা ভ্যান, রিকশা ও পিকআপে করে চৌমুহনী এলাকায় নিয়ে যেতে থাকেন।  সেখানে রাস্তার ওপর সারি সারি স্তূপ করে রাখা হয় কাঁচা চামড়া।  এর পর সেখান থেকে চামড়া কিনতে শুরু করেন বিভিন্ন ব্যবসায়ী।
 
চৌমুহনী এলাকার কামাল আহমেদ ছোট একটি চাকরি করেন।  কিন্তু প্রতিবছর কোরবানি ঈদে তিনি নেমে পড়েন চামড়া ব্যবসায়।  এবার তিনি ১৭টি চামড়া নিয়ে আসেন চামড়া বিক্রি করতে।  তাঁর সঙ্গে শনিবার বেলা দুইটায় চৌমুহনীর চামড়া বাজারে কথা হয়।
 
তিনি জানান, বাড়তি আয়ের জন্য প্রতিবছর চামড়া সংগ্রহ করে বিক্রি করি।  এবার ১৭টি কিনেছি।  সব বড় চামড়া।  তবে দাম চাচ্ছে অনেক কম।  প্রতিটি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকার বেশি চাচ্ছে না’
চৌমুহনীর বাজারে চামড়া মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চামড়া কেনার জন্য চেয়ার নিয়ে কয়েকজন বসে রয়েছেন।  তাঁদের একজন মো. হাসান।  তিনি জানান ছোট চামড়া ৩০০ টাকায় এবং বড় চামড়া ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  

বেলা সোয়া দুইটার দিকে মোটরসাইকেল চালিয়ে দুই যুবক আসেন।  পরনে হাফপ্যান্ট, চোখে সানগ্লাস।  আনোয়ার হোসেন নামে এক যুবক চালাচ্ছিলেন।  ছাত্র রাজনীতি করেন তিনি।  তার সাথে পেছনের জনও একজন ছাত্র।  বালা সওদাগর নামে এক চামড়া ক্রেতাকে আনোয়ার বললেন, তাঁর কাছে ৬০টি চামড়া রয়েছে।  কত করে দেবেন দাম জানতে চাইলেন তিনি।

বালা সওদাগর ৩০০ থেকে ৬০০ টাকার বেশি দিতে রাজি হলেন না। মোটরবাইকের যুবকটি বললেন, আমার কেনা পড়েছে গড়ে ৯০০ টাকা করে।  
বিস্ময়ের হাসি দিয়ে মোটরবাইকে চওড়া শব্দ করে চলে গেলেন দুই যুবক।  
কদমতলীর মো. এরশাদের তিন বন্ধু মিলে এলাকা থেকে ২২টি চামড়া সংগ্রহ করে বেচতে আসেন চৌমুহনী বাজারে।  কিন্তু প্রতিটি ৭০০ টাকার বেশি কেউ দাম দিতে রাজি হচ্ছেন না।  এরশাদ বলেন, ‘প্রতিটি ১ হাজার ১০০ টাকায় কেনা পড়েছে।  বেপারিরা দাম দিতে চাচ্ছে না।  সময় গড়ালে দাম বাড়বে। ’
এরশাদও চাকরি করেন।  তাঁর অপর দুই বন্ধুর একজন ছাত্র।  অপরজন কিছু করেন না।
 
ব্যবসায়ীরা জানান, মৌসুমি সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে চামড়া কিনবেন চৌমুহনীর ব্যবসায়ীরা।  এরপর সেখানে আরও এক হাত বদল হয়ে রাতের মধ্যে চামড়া যাবে আতুরা ডিপোর আড়তে।  তারপর সেখানে চামড়ায় লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা হবে।  আড়ত থেকে চামড়া যাবে ঢাকার ট্যানারিতে।  
এবার প্রতি বর্গফুট কাঁচা চামড়ার দর নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়।  এভাবে কয়েক হাত বদল হয়ে চামড়া আড়তে যেতে যেতে ৪৫ টাকার বেশি পড়বে বলে একাধিক আড়তদার প্রতিবেদককে জানান।

চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমবায় সমিতির সহসভাপতি আবদুল কাদের বলেন, আতুরার ডিপোর আড়তে চামড়া আসবে রাতে।  তবে যে দর দিয়েছে ওই দরে চামড়া কেনা কঠিন হয়ে যাবে।  কারণ মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া সংগ্রহ করতে বেশি দাম দিয়ে ফেলে।  ছাত্র-যুবকেরা অভিজ্ঞতা ছাড়া চামড়া ব্যবসায় আসেন বলে সমস্যা।  
২ সেপ্টেম্বর ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে