নিউজ ডেস্ক : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশে আগামী বছর একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে এ দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ভারপ্রাপ্ত মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যালিস ওয়েলস গত বুধবার ওয়াশিংটনে কংগ্রেসীয় সাব কমিটিতে উপস্থাপিত লিখিত বিবৃতিতে এ কথা বলেন।
গতকাল মার্কিন কংগ্রেসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে খবরটি প্রকাশ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে অ্যালিস ওয়েলস বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে যেন ২০১৮ সালে দেশটিতে অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করা হয়, নাগরিক সমাজের জন্য গণতান্ত্রিক চর্চার অবারিত সুযোগের নিশ্চয়তা থাকে এবং গণমাধ্যম যাতে স্বাধীনভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে পারে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং তীব্র বৈদেশিক অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা সত্ত্বেও দুই দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ গড়পড়তা ছয় শতাংশের বেশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে সমর্থ হয়েছে বলে উল্লেখ করে রিপোর্টে বলা হয়, এটা দেশটির দৃঢ়তার পরিচয় বহন করে।
ভারতীয় উপমহাদেশে সক্রিয় আইএস এবং আলকায়েদা বাংলাদেশে প্রায় ৪০টি হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেছে বলে উল্লেখ করে এতে বলা হয়, গত বছর জুলাইয়ে (রাজধানী ঢাকার গুলশানে) হোলে আর্টিজান বেকারিতে আইএসের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সাথে নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদার করে চলেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার মার্কিন কংগ্রেসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল সংক্রান্ত সাব কমিটিতে ‘দক্ষিণ এশিয়ায় মার্কিন প্রভাব বজায় রাখা : ২০১৮ অর্থবছরের বাজেট’ শিরোনামে আরেকটি শুনানিতে হাজির হওয়ার কথা রয়েছে সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যালিস ওয়েলসের।
ঢাকার ভূমিকার প্রতি ইইউর একাত্মতা
কূটনৈতিক প্রতিবেদক
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের ভূমিকার প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
রাখাইন পরিস্থিতির ওপর গতকাল ইইউর হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) ফেডিরিকা মোঘারিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, সঙ্কট থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া উদ্বাস্তুদের স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সাথে ইইউ একাত্মতা প্রকাশ করছে। তিনি বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সব পক্ষের উত্তেজনা প্রশমন খুবই জরুরি, যাতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করা যায়। সহিংসতার শিকার মানুষেরা যাতে সহায়তা পেতে পারেন, সে জন্য ত্রাণকর্মীদের অবাধ প্রবেশাধিকার প্রয়োজন। রাখাইন রাজ্যের সঙ্কট নিরসনে আনান কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে মিয়ানমার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কোনো ধরনের বিলম্ব ছাড়াই এই সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন প্রয়োজন। এ জন্য ইইউ সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতিকে অত্যন্ত গুরুতর অভিহিত করে হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ বলেন, আজ আমি ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদির সাথে কথা বলেছি, যিনি সবেমাত্র মিয়ানমার ও বাংলাদেশ সফর করে এসেছেন। মিয়ানমার ও আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষের সাথে আমরা ইয়াঙ্গুনে অবস্থিত ইইউ ডেলিগেশনসহ অন্যান্য মিশনের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখছি। রাখাইন পরিস্থিতির দিকে আমাদের পূর্ণ মনোযোগে রয়েছে।
তিনি বলেন, টেকসই শান্তি, স্থিতিশীলতা, অগ্রগতি ও জনগণের কল্যাণের জন্য একটি পথ খুঁজে বের করতে মিয়ানমার ও সকল অংশীদারদের সমর্থন দিতে ইইউ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। গত ২৫ আগস্ট উত্তর রাখাইনে মিয়ানমার নিরাপত্তাবাহিনীর ওপর হামলা এবং পরবর্তী সহিংসতার নিন্দা জানায় ইইউ। আইনের শাসন সমুন্নত রেখে দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হবে বলে আমরা আশা করি।
রাখাইনে নিরাপত্তা অভিযানের সাথে সংশ্লিষ্টদের সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন ও বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষার দায়িত্ব রয়েছে বলে মন্তব্য করেন ফেডিরিকা মোঘারিনি।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস