মাছুম বিল্লাহ ও অাজিজুল হক, কুতুপালং (উখিয়া) থেকে : চারদিকে হত্যা আর ধংসলীলার মধ্যে সব রোহিঙ্গারা যখন নিজের প্রাণ নিয়ে পালিয়ে আসছিলেন, তখন রোহিঙ্গা যুবক তার বৃদ্ধ মা-বাবাকে ফেলে আসেন নি। কাঁধে করে মিয়ানমার থেকে পাহাড়, জঙ্গল, ঝোপঝাড় পেরিয়ে ৫ দিন ধরে গর্ভধারিণী মা ও বাবাকে কাঁধে নিয়ে উলুবনিয়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে অাকিয়াবের মো: অায়ুব(২৫)।
তার কাঁধে ৮০ বছরের বৃদ্ধ পিতা দুদু মিয়া এবং ৬৫ বৃদ্ধ মা অাছিয়া খাতুন। বয়সের কারণে অায়ুবের বাবা খুব একটা হাঁটতে পারেননা,মা অসুস্থ। তাই ছেলে অায়ুব ৫ দিন ধরে মা,বাবা কাঁধে নিয়ে বয়ে বেড়িয়েছেন সীমান্তের বিভিন্ন অঞ্চল। কখনো জঙ্গলে, কখনো পাহাড়ে রাত কেটেছে অায়ুবের মা-বাকে নিয়ে। মিয়ানমার থেকে সঙ্গে আনা যৎসামান্য শুকনো খাবার বৃদ্ধ মাকে খাইয়েছেন।
তাও আবার ২দিন। ৩ দিন ধরে অভুক্ত তারা। আর ছেলে অভুক্ত ৫ দিনের। তাই সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করা মাত্রই খিদের জ্বালায় কান্না জুড়ে দেন উলুবনিয়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করার পর কিছু । গত শনিবার কুতুপালং রাস্তার পাশে দেখা হলে অায়ুব বলেন অনেক কষ্ট ও খিদের যন্ত্রণা সহ্য করে ৫ দিন হেটে মা বাবাকে নিয়ে মায়ানমার থেকে বাংলাদেশ প্রবেশ করেছে অায়ুব।
অায়ুব অারও জানান মিয়ানমার বাহিনী যখন একের পর এক গ্রাম পেট্রল দিয়ে জ্বালিয়ে দিচ্ছিল, তখন সে মা, বাবা ২ জনকে জুড়ি নিয়ে কাঁধে করে পালাতে থাকে, ৫ দিন ধরে বিভিন্ন জঙ্গল পেরিয়ে অবশেষে উলুবনিয়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। শুধু এই পরিবার নয়, সীমান্তজুড়ে এখন অসংখ্য কাহিনী। কেউ বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে এসেছেন, কেউ কাঁধে করে নিয়ে এসেছেন প্রতিবন্ধী বোনকে। সবার মুখে হতাশা ও আতঙ্কের ছাপ। স্থানীয় জনগণ নতুন আসা রোহিঙ্গাদের শুকনো খাবার দিলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। তারা চায় সুন্দর জিবন,বাচাঁর মত মাথা গোজার ঠাই।-আমাদের সময়
এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস