নিউজ ডেস্ক : মিয়ানমারে সেনা নির্যাতনের মুখে বাবা-মা বা স্বজন ছাড়াই দলে দলে বাংলাদেশে আসছে রোহিঙ্গা শিশুরা।
ধারণা করা হচ্ছে, এসব শিশুর বাবা-মার দুজনকেই অথবা বাবাকে মিয়ানমারে মেরে ফেলা হয়েছে।
জাতিসংঘের একটি সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, বাবা-মা বা কোনও আত্মীয় স্বজন ছাড়া অন্তত ১ হাজার তিনশো শিশুকে তারা খুঁজে পেয়েছেন।
ইউনিসেফের কর্মকর্তা মাধুরী ব্যানার্জি বলছেন, ‘আজ পর্যন্ত ১৩১২ জন শিশুকে পাওয়া গেছে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় অর্থাৎ পিতা মাতা বা স্বজনদের ছাড়া। তাদের সহায়তার চেষ্টা করছি আমরা। মানসিক বা ট্রমা থেকে তারা যেন বেরিয়ে এসে স্বাভাবিক হতে পারে সে চেষ্টা করা হচ্ছে’।
মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের একজন মোহাম্মদ নুর বাংলাদেশে এসেছিলেন অনেক আগেই। তিনি বলছেন এসব শিশুদের বাবা মাকে মিয়ানমারের সেনারা মেরে ফেলেছে।
স্থানীয় একটি ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুরুল আবছার চৌধুরী জানান, তার ধারণা যতো শিশু এসেছে তার প্রায় অর্ধেকের সঙ্গেই বাবা নেই। অন্তত ৪০ শতাংশ আসছে অভিভাবক ছাড়া। তবে কেউ কেউ আসছে শুধু মা বা দাদির সঙ্গে।
কক্সবাজারের রেড ক্রিসেন্টের কর্মকর্তা সেলিম মাহমুদ বলছেন, বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা নারীদের অনেকেই তাদের জানিয়েছেন যে তারা সঙ্গে করে এমন অনেক শিশুকে এনেছেন যাদের পরিবারের সদস্যদের তারা আসার সময় খুঁজে পাননি।
সাহায্য সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা বলছেন এ দফায় পরিবার ছাড়া অন্যদের সঙ্গে আসা এমন অনেক শিশুকে পাওয়া গেছে যাদের বয়স মাত্র তিন কিংবা চার বছরের মধ্যে।
সঙ্গত কারণেই এসব শিশুদের অভিভাবকদের ভাগ্যে কী ঘটেছে সেটি তারা কিংবা তারা যাদের সাথে বাংলাদেশে এসেছে তারাও ঠিক মতো বলতে পারছে না।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা সংস্থার হিসেব অনুযায়ী এ দফায় নতুন করে আসা শিশু সংখ্যা দু লাখেরও বেশি। আর মোট রোহিঙ্গার সংখ্যা চার লাখ পেরিয়েছে কদিন আগেই।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা ও জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনারের হিসেব মতে প্রতিদিনই গড়ে দশ থেকে পনের হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসছে, যার একটি বড় অংশই শিশু।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস