মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১০:০০:৫৬

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ১ লাখ রোহিঙ্গার জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করবে তুরস্ক

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ১ লাখ রোহিঙ্গার জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করবে তুরস্ক

নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ১ লাখ রোহিঙ্গার জন্য স্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করবে আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা রেড ক্রিসেন্টের তুর্কি শাখা। এ মর্মে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে এক চুক্তিতে সই করেছে সংস্থাটি। কক্সবাজার সীমান্তে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের বরাদ্দকৃত এলাকায় ১ লাখ লোক ধারণক্ষমতাসম্পন্ন শরণার্থী শিবিরটি নির্মাণ করা হবে। তুর্কি রেড ক্রিসেন্টের প্রেসিডেন্ট কেরেম কিনিক সম্প্রতি ওই অঞ্চলে রোহিঙ্গাদের দুঃখ-দুর্দশা নিজ চোখে প্রত্যক্ষ করেছেন এবং তাদের দুর্ভোগ দূর করার চেষ্টা করছেন। শরণার্থী শিবির তৈরির জন্য বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি।

প্রায় ২৪ হাজার রোহিঙ্গা পরিবারের জন্য স্টিল দিয়ে ঘরগুলো তৈরি করা হবে। প্রত্যেকটা ঘরের সঙ্গে একটি রান্নাঘর ও একটি পায়খানা থাকবে। শরণার্থী শিবিরটিতে একটি মসজিদ, স্কুল ও রোহিঙ্গাদের সেবা দিতে একটি হাসপাতাল থাকবে। এক সাক্ষাৎকারে কিনিক জানান, রোহিঙ্গাদের সহায়তায় বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে গত ১৪ সেপ্টেম্বর তিনি ঢাকায় একটি বৈঠক করেন। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে ওই বৈঠকে শরণার্থী শিবির নির্মাণে বাংলাদেশ সরকার সব ধরনের সহযোগিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, দীর্ঘ আলোচনার পর আমরা একটি চুক্তিতে পৌঁছেছি। কক্সবাজারে একটি অনুপম শরণার্থী শিবির তৈরি করা হবে। এটি বিশ্বে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

কক্সবাজারে এখন প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছে। অপ্রতুল ত্রাণ ও আশ্রয় নিয়ে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে। ত্রাণ সহায়তা সংস্থাগুলো রোববার হুশিয়ারি দিয়ে বলেছে, খাদ্য, আশ্রয় ও পানির অভাবে বহু রোহিঙ্গা শরণার্থী মারা যেতে পারে। তুরস্ক হচ্ছে রোহিঙ্গাদের জন্য শিবির নির্মাণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি পাওয়া প্রথম কোনো দেশ। বৃহত্তর কুতুপালং শরণার্থী শিবিরের ভেতরে এটি নির্মাণ করা হবে।

তুর্কি প্রকৌশলীরা শিগগিরই শিবিরটি নির্মাণে ভূমি জরিপ করবেন। সেভ দ্য চিলড্রেনের বাংলাদেশ শাখার পরিচালক মার্ক পিয়ার্স এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমি বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন এজন্য যে, রোহিঙ্গাদের সংখ্যাধিক্যের কারণে খাদ্য, আশ্রয়, পানি ও মৌলিক স্বাস্থ্যসেবার চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছে না।’

এদিকে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগান জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭২তম সম্মেলনে যোগদানের জন্য রোববার নিউইয়র্কের উদ্দেশে আঙ্কারা ছেড়েছেন। আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এ সম্মেলনে এরদোগানের জন্য একটি ব্যস্ত কূটনৈতিক কর্মসূচি অপেক্ষমাণ রয়েছে।

সম্মেলনে এরদোগানের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সংকট ও ইরাকে কুর্দিদের প্রস্তাবিত আসন্ন গণভোটের ইস্যু থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। নিউইয়র্কের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে ইস্তাম্বুলে সাংবাদিকদের এরদোগান বলেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের দুর্দশা নিয়ে জাতিসংঘের সম্মেলনে একটি গ্রুপ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, রাখাইনের মানবিক সংকটকে আন্তর্জাতিক এজেন্ডায় পরিণত করার ক্ষেত্রে এ বৈঠকটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।’
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস

 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে