শনিবার, ০৭ নভেম্বর, ২০১৫, ০১:০৩:৫৩

ক্ষমতায় থাকলে জঙ্গি দমন হবে না: মওদুদ

ক্ষমতায় থাকলে জঙ্গি দমন হবে না: মওদুদ

ঢাকা: আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে জঙ্গিবাদকে দমন করতে পারবেনা বলে মন্তব্য করলেন বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ, জঙ্গি দমনে দেশে ‘গণতন্ত্র ফিরিয়ে’ আনতে হবে। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে শুক্রবার প্রয়াত জাতীয় পার্টির নেতা কাজী জাফর আহমদের স্মরণে এক নাগরিক সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ বলেন, “আজকে ঐক্যের প্রয়োজন। যদি মনে করেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে জঙ্গিবাদকে দমন করতে পারবেন, সেটা সম্ভবপর নয়। কারণ সরকারের মধ্যেই ... ইমরান বলেছেন, সরকারের মধ্যেই জঙ্গিবাদ রয়েছে। তিনি আরো বলেন যে, জঙ্গিবাদ দমন করতে হলে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে । তা না হলে কখরনা জঙ্গিবাদ দমন করা সম্ভব না । “সন্ত্রাসবাদ,জঙ্গিবাদকে প্রতিরোধ ও নির্মূল করার জন্য সরকার যদি সত্যিকারভাবেই আন্তরিক হন,তাদের উচিত হবে, জাতীয় পর্যায়ে আলোচনার ব্যবস্থা করা এবং তার ভিত্তিতে একটি জাতীয় ঐকমত্যে আসা।” বিএনপিপন্থি পেশাজীবী নেতা অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা একটু একটু করে স্বাধীনতা হারাচ্ছি, হারাতে বসেছি। কারণ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, জনগণের শাসন যদি না থাকে, ক্ষমতার রাজনীতি যদি প্রতিষ্ঠিত থাকে, তাহলে জঙ্গিবাদের উত্থানতো হবেই।” জঙ্গিবাদের উত্থান হলে সময়ের সঙ্গে রাষ্ট্রের একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা জাগে মন্তব্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই উপাচার্য বলেন, “এটাই ক্ষমতার রাজনীতির সঙ্গে জনকল্যাণমুখী রাজনীতির পার্থক্য।” গত ২৭ অগাস্ট হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান কাজী জাফর। চিকিৎসা চলাকালে তিনি অস্ট্রেলিয়ার ওয়েস্ট সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচার দিয়েছেন জানিয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, “বিদেশ যাকে শ্রদ্ধা করে, আমার দেশে তাকে শ্রদ্ধা করা হলো না। এটা কি কেবল রাজনৈতিক ভিন্নতার জন্য? এটা যদি রীতি হয়ে যায়, দেশের জন্য ভয়াবহ সংকেত।” দশম সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিকল্প ধারার সভাপতি বদরুদ্দোজা বলেন, “সবাই জানে, নির্বাচন হয়েছিল কিন্তু মানুষ ভোট দিতে যায় নাই। অর্ধেকের বেশি এমপি অনির্বাচিত ছিল। এটা কি গণতন্ত্র? কোনো রকমে গণতন্ত্র হতে পারে? “অনিয়মের মাধ্যমে করা নিয়মরক্ষার নির্বাচনকে আর পরে শুদ্ধ করা হল না। একের পর এক গণতন্ত্র হত্যা চললো।” কাজী জাফর বেঁচে থাকলে শরীর যতই খারাপ হোক তিনি সংগ্রাম চালিয়ে যেতেন মন্তব্য করে বদরুদ্দোজা বলেন, “তাই তার প্রতি সর্বশ্রেষ্ঠ শ্রদ্ধা জানাতে হলে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এর চেয়ে বড় কোনো শক্তি নাই।” সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, “অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রতিজ্ঞায় যখন মানুষ ঐক্যবদ্ধ হবে, তার চেয়ে বড় শক্তি থাকতে পারে না।” সরকারকে ‘মাটিতে নেমে’ আসার, ‘মানুষের মাঝে’ আসার আহ্বান জানান তিনি। আবার নতুন নির্বাচন দেওয়ার আগ পর্যন্ত জাতীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়ে সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলে, “এটাই হলো দেশ রক্ষার একমাত্র উপায়।” আলোচনায় কাজী জাফরের সঙ্গে রাজনৈতিক জীবনের স্মৃতিচারণ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি যখন জয়দেবপুর মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি শ্রমিক ইউনিটের সভাপতি তখন কাজী জাফর টঙ্গীর ‘বড়’ শ্রমিক নেতা ছিলেন জানিয়ে নজরুল বলেন, “আমরা তার সঙ্গে দেখা করতে যেতাম। কোথায় দেখা করতে যেতাম জানেন? তিনি শ্রমিকদের বস্তিতে থাকতেন, সেখানেই তার সঙ্গে দেখা করতে যেতাম। “শ্রমিকদের বস্তিতে থাকতেন, খেতেন, তাদেরকে নিয়ে রাজনীতি করতেন। এই রকম নেতা আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।” স্মরণসভায় তার মেয়ে কাজী জয়া বাবার স্মৃতি লেখনিতে ধরে রাখতে বাবার সহকর্মী ও উপস্থিত নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানান। সেন্টার ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্টের সেক্রেটারি জেনারেল মাহফুজ উল্লাহর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে মিজানুর রহমান শেলী, অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, অধ্যাপক তারেক শামসুর রহমান, শফিউল আলম প্রধান, অধ্যাপক টিআইএ ফজলে রাব্বী, নিতাই রায় চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। ০৭ নভেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/পিবি/পিপি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে