শনিবার, ০৭ নভেম্বর, ২০১৫, ০২:০৯:৪৬

সংলাপ নাকচ: আওয়ামী লীগ

সংলাপ নাকচ: আওয়ামী লীগ

নিউজ ডেস্ক: বিএনপির সাথে কোন প্রকার সংলাপ হতে পারে না বলে মন্তব্য করলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ । বিএনপির সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনা আবারও নাকচ করে দিয়েছেন দলটির নেতারা। তাদের মতে, বিএনপি দেশে যে সংকটজনক পরিস্থিতির কথা বলছে, এজন্য বিএনপিই দায়ী। বিএনপি দেশে বিভিন্নভাবে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা অব্যাহত রেখে বার বার সংলাপের কথা বলছে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আজকের পৃথিবীতে সংলাপে বসতে হলে যোগ্যতা লাগে। যোগ্যতা ছাড়া সংলাপ হয় না। আন্দোলন করার যাদের শক্তি নেই, তারাই এখন ঘন ঘন সংলাপের কথা বলে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংগঠনটির সদস্য লেখকদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। দেশের চলমান সংকট উত্তোরণের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জাতীয় সংলাপের প্রস্তাবকে ‘রাবিশ’ বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। শুক্রবার সকালে সিলেট নগরীতে একটি অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সংলাপ প্রস্তাবকে ‘রাবিশ’ বলে উড়িয়ে দেন অর্থমন্ত্রী। লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বৃহস্পতিবার (০৫ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে বলেছেন, সরকার শুভবুদ্ধির পরিচয় দিয়ে দেশের এই ক্রান্তিকাল ও সঙ্কটজনক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে গণতন্ত্র বিকাশের ক্ষেত্রকে সংকোচন না করে কর্তৃত্ববাদী মনোভাব থেকে সরে এসে একটি জাতীয় সংলাপের সূচনার পরিবেশকে উন্মুক্ত করবে। খালেদা জিয়ার এই বক্তব্য প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিএনপির সঙ্গে সংলাপের প্রশ্নে আগের অবস্থানেই রয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি। বিএনপির সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো ধরনের সংলাপ হতে পারে না বলেও তারা মন্তব্য করেন। আওয়ামী লীগ নেতাদের মতে, দেশে বর্তমানে যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চলছে তা বিএনপিই ঘটাচ্ছে। তারা নির্বাচন বানচালের নামে অবরোধ দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে জামায়াতের সঙ্গে হরতাল-অবরোধ দিয়ে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। সরকার উৎখাতের নামে চলতি বছর ৫ জানুয়ারি থেকে ৯২ দিন অবরোধ করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেছে, ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। আন্দোলনের নামে ধ্বাংসাত্মক কর্মসূচি দিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। রাজনীতিতে ব্যর্থ হয়ে তারা এখন গুপ্তহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। সম্প্রতি দুই বিদেশি হত্যা, গাবতলীতে পুলিশের এএসআই হত্যা, প্রকাশক দীপন হত্যা এবং কবি, ব্লগার ও প্রকাশকের ওপর হামলার ঘটনার সঙ্গে বিএনপি যুক্ত বলে আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেন। গত ২ নভেম্বর জেলহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই বলেছেন, রাজনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়ে খালেদা জিয়া বিদেশে বসে গুপ্তহত্যা চালাচ্ছেন। খালেদা জিয়ার সংলাপের আহ্বান প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের মনোভাব জানতে চাওয়া হলে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এমটিনিউজকে বলেন, ধূর্ত শৃগালের সঙ্গে মুরগির সংলাপ হতে পারে না। শৃগাল তো মুরগিকে বধ করতে চায়। শেখ হাসিনা ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় খালেদা জিয়াকে দিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিলেন, নির্বাচনের আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তাকে ফোন পর্যন্ত করেছিলেন। তারপর কি হয়েছে সবাই জানেন। এরপর তার ছেলের মৃত্যুর পর খালেদার অফিসে গিয়েছিলেন সান্ত্বনা দিতে। প্রধানমন্ত্রী কখনও ছোট গেট দিয়ে ঢোকেন না, তাও ঢুকতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ঢুকতে দেওয়া হয়নি। গুপ্ত হামলা কোনো আন্দোলন নয়। তারা ধ্বংসের পথ বেছে নিয়েছে, আমরা শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছি। সংলাপের সম্ভাবনা প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ এমটিনিউজকে বলেন, সংলাপ করতে তো বাধা নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তো অনেক বার সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন। বিএনপি আসলে কী চায় সেটা আগে তাদের স্পষ্ট করতে হবে। জামায়াত যুদ্ধারাধীদের দল, সেই যুদ্ধাপরাধী দলের সঙ্গে জোট করে বিএনপি তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে, সহযোগিতা করছে। শুধু তাই নয়, জনসভা করে বিএনপি যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতাদের মুক্তির দাবি করেছে। যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্য অর্থ দিয়ে আন্তর্জাতিক লবিষ্ট নিয়োগ করেছে। সন্ত্রাসী তৎপরতা চালিয়ে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে। বিএনপি সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। এই অবস্থায় বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসা যায় কি না, তাদের সঙ্গে সংলাপ করা কতটুকু যৌক্তি সেটাই জনগণের প্রশ্ন। ০৭ নভেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/পিবি/পিপি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে