শনিবার, ০৭ নভেম্বর, ২০১৫, ০৪:৩০:৪৭

কোনো ষড়যন্ত্রই অগ্রগতি ঠেকাতে পারবে না

কোনো ষড়যন্ত্রই অগ্রগতি ঠেকাতে পারবে না

নিউজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোনো ষড়যন্ত্র বা ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। তিনি বলেন, তার সরকারের সঠিক নির্দেশনা ও পরামর্শ, জনগণের কাজের অদম্য স্পৃহা এবং প্রবাসীদের অব্যাহত সমর্থন আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং ২০২১ সালের আগেই বাংলাদেশ ক্ষুধা ও দারিদ্র্য দূর করে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে। প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ সকল ক্ষেত্রে অগ্রগতির সঙ্গে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশকে এখন আর কেউ উপেক্ষা করতে পারছে না। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সামাজিক উন্নয়ন লাভের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনের পথ থেকে কোনো ষড়যন্ত্রই দেশকে বিচ্যুত করতে পারবে না। নেদারল্যান্ডসে ৩ দিনের সরকারি সফরের শেষ দিন গত রাতে কুরহাউস হোটেলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেয়া এক সংবর্ধনা সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই সামরিক স্বৈরশাসকরা এবং মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তি বাংলাদেশে ষড়যন্ত্র করে চলেছে। এসব সত্ত্বেও বাংলাদেশের জনগণ যখনই সুযোগ পেয়েছে, তখনই তারা সামনে এগিয়ে যাওয়ার এবং মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে। সকল ষড়যন্ত্র কাটিয়ে উঠে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হবেই। বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীরা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন এবং তারা চলতি বছর প্রায় ২৭.২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এ সময় শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুর পক্ষে লড়াই করার জন্য প্রবাসীরা সে সময় স্যার টমাস উইলিয়ামকে পাঠিয়েছিলেন। তারা মুক্তিযুদ্ধকালে আন্তর্জাতিক জনমত গড়ে তুলেছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর সুইডেন ও ব্রিটেনে প্রতিবাদ জানাতে নেমে এসেছিলেন। তিনি আরও বলেন, তারা জাতির পিতার হত্যাকাণ্ড তদন্ত করার জন্য টমাস উইলিয়ামকে পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু জিয়াউর রহমান তাকে বাংলাদেশে আসতে দেননি। নেদারল্যান্ডসকে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এ দেশটি সব সময় প্রয়োজনে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে। তাই তিনি এই সম্পর্ককে জোরদার করার লক্ষ্যে প্রথম এই সরকারি সফর করছেন। বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতি লাভের বিবরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টির ওপর সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকারের রূপকল্প বাস্তবায়নে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা সরকারি অফিসগুলোর জন্য কম্পিউটার সংগ্রহ করার বিষয়ে একটি ডাচ কোম্পানির সঙ্গে সম্পাদিত একটি চুক্তি বাতিল করে দেয়ার জন্য বিএনপির সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, বিএনপি সরকারের ওই হঠকারী সিদ্ধান্তের কারণে ২০০১ সালে বাংলাদেশ সরকারের ৩২ কোটি টাকা জরিমানা দিতে হয়েছিল। বিগত বছরগুলোতে বিএনপি-জামায়াত জোটের ধ্বংসাত্মক রাজনীতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া আবার ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে লিপ্ত হয়েছেন এবং তার প্রতিটি পদক্ষেপের লক্ষ্য হচ্ছে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা। সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ড, নৈরাজ্য ও অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ডের পিছনেও তারাই রয়েছেন। শেখ হাসিনা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার জন্য বিদেশি উদ্যোক্তাদের উত্সাহ দিতে এবং বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ নিয়ে এগিয়ে আসার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্যও তাদের প্রতি আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম বীর প্রতীক, অল ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল দাশগুপ্ত, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান শরীফ, হল্যান্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহিদ ফারুক প্রমুখ বক্তৃতা করেন। শোক প্রকাশ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের বিশিষ্ট সংগঠক এবং সাবেক প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য শেখ আহমেদ আলীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী এক বার্তায় মুক্তিযুদ্ধে ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আলী আহমেদের ভূমিকার কথা স্মরণ করে বলেন, তার মৃত্যুতে জাতি একজন নিবেদিতপ্রাণ ও দেশপ্রেমী নেতাকে হারিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩ দিনের সরকারি সফর শেষে গতকাল বিকালে নেদারল্যান্ডস থেকে দেশে ফিরেছেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের আমন্ত্রণে শেখ হাসিনা নেদারল্যান্ডস সফর করেছেন। বাংলাদেশের কোনো সরকার প্রধানের প্রথম সফরকালে ডাচ সরকার প্রধানমন্ত্রীকে উষ্ণ আতিথেয়তা দিয়েছে। শেখ হাসিনা ৪ নভেম্বর ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। ফলপ্রসূ আলোচনার পর বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডস শিক্ষা ও কূটনৈতিক ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরো জোরদার করার লক্ষ্যে চারটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। শেখ হাসিনা নেদারল্যান্ডস রানী ম্যাক্সিমার সঙ্গেও সাক্ষাত্ করেন। রানী অর্থনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিস্ময়কর সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।-ইত্তেফাক ০৭ নভেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/পিবি/পিপি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে