রবিবার, ০৮ নভেম্বর, ২০১৫, ০১:০৭:২৫

প্রবাসীদের অর্থ হাতিয়ে দুদকের মুখোমুখি জামায়াত নেতা

প্রবাসীদের অর্থ হাতিয়ে দুদকের মুখোমুখি জামায়াত নেতা

নিউজ ডেস্ক : সৌদি প্রবাসীদের প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে ডায়ানামিক মিশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা (রুকন) শিরতাজ আহমেদ এখন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মুখোমুখি। যদিও ভোল পাল্টে বর্তমানে আওয়ামী লীগে নাম লিখিয়েছেন ওই নেতা। দ্বিগুন মুনফার প্রলোভন দেখিয়ে সৌদি প্রবাসী ২৮ জন বাংলাদেশি শ্রমিকের কাছ থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে তিনি দেশে পালিয়ে এসেছেন- এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। দুদকের একটি ঊর্ধ্বতন সূত্র বিষয়টি এমটিনিউজকে নিশ্চিত করেছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে আসা এমন অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষে আমলে নেয় কমিশন। একই সঙ্গে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. মাসুদুর রহমানকে অনুসন্ধান কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে কমিশন। আর অনুসন্ধান কাজ তদারক করবেন দুদকের উপপরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সিলেট সুনামগঞ্জের মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়ার ছেলে শিরতাজ আহমেদ সৌদি আরবের খামিছ এলাকায় ব্যবসা করতেন। তিনি জামায়াতে ইসলামী সৌদি শাখার রুকন (সদস্য) ছিলেন। এক পর্যায়ে বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়ে ডায়নামিক মিশন লিমিটেড নামে একটি সমিতি গড়ে তোলেন। বছরে দ্বিগুণ লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে ২৮ জন শ্রমিকের কাছ থেকে জনপ্রতি ৫ লাখ টাকা করে নেন। সমিতিকে আইনগত ভিত্তি দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে রেজিস্ট্রিও করান তিনি। কিন্তু নিজে কোনো অর্থ বিনিয়োগ না করলেও নিজের এবং স্ত্রীর নামে নেন দুটি শেয়ার। নিজেকে অধিষ্ঠিত করেন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এবং চেয়ারম্যান পদে। ঘনিষ্ঠ দুই বন্ধুকে রাখেন ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে। বাকিদের দেন সাধারণ পরিচালকের পদ। এভাবে দেড় কোটি টাকা সংগ্রহ করে ২ বছর আগে দেশে পালিয়ে আসেন শিরতাজ আহমেদ। যার পাসপোর্ট নম্বর হলো- ১৯৭৮৯০১৮৯৩৬০০১২২৫। এরপর ওই সমিতির পরিচালকরা (প্রবাসী শ্রমিকরা) বারবার তার সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তিনি তাতে সায় দেননি। বরং ফোন করলে তিনি দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অথচ কষ্টার্জিত সঞ্চয় হারিয়ে দিশেহারা শ্রমিক এবং পরিবারের সদস্যরা। অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, শিরতাজ আহমেদ ইসলামী ব্যাংকের সুনামগঞ্জ শাখায় কোম্পানির অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন করে ব্যক্তিগত গাড়ি কিনেছেন। ওই গাড়ি তিনি ভাড়া খাটাচ্ছেন। এ ছাড়া কিনেছেন বেশ কয়েকটি দোকান। কোম্পানিটি নিবন্ধিত হলেও নিয়মনীতির কোনো তোয়াক্কা করছেন না বলেও অভিযোগে বলা হয়েছে। অভিযোগকারী পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সম্প্রতি কয়েকজন আমানতকারী ও পরিচালক দেশে এসে অর্থ ফেরত চাইলে উল্টো তাদের ইমিগ্রেশন পুলিশ দিয়ে আটকে দেওয়ার ভয় দেখান শিরতাজ আহমেদ। স্থানীয়ভাবে তাকে যাতে কিছু করা না যায়, এ জন্য দেশে ফিরেই জামায়াত নেতা বর্তমানে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন। তবে গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদ না পেলেও নিজের ব্যবসা-বাণিজ্যে যুক্ত করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের। ফলে প্রশাসনের হাত থেকে রেহাই পেয়ে যাচ্ছেন তিনি। তাই আইনগত প্রতিকার চেয়ে দুদকে অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীরা। এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের এক কর্মকর্তা এমটিনিউজকে বলেন, ইতিমধ্যে অনুসন্ধানের আদেশ পাওয়ার পর ডায়ানামিক মিশন ও শিরতাজ আহমেদের ঠিকানায় অভিযোগসংশ্লিষ্ট নথিপত্র তলব করা হয়েছে। সব নথিপত্র হাতে পেলে প্রয়োজনে তাকে তলব করা হবে। ০৮ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/পিবি/পিপি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে