মঙ্গলবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৫, ০৪:৪৩:০৯

অবশেষে ৬১ ঝুঁকিপূর্ণ সেতু পুনর্নির্মাণ হচ্ছে

অবশেষে ৬১ ঝুঁকিপূর্ণ সেতু পুনর্নির্মাণ হচ্ছে

জাহাঙ্গীর আলম: দেশের পশ্চিমাঞ্চলের ২৪ জেলায় ১৮৭টি সরু, অনিরাপদ ও ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর মধ্যে অবশেষে ৬১টি পুনর্নির্মাণ হতে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে ব্যয় হবে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) ঋণ সহায়তায় এর কাজ শেষ হবে ২০২০ সালের জুনে। এর ব্যয় অনুমোদনের জন্য আজ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হবে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র মতে, দেশের পশ্চিমাঞ্চলের ১৮৭টি ঝুঁকিপূর্ণ সেতু পুনর্নির্মাণে ২০১৩ সালে উদ্যোগ নেয়া হয়। এর মধ্যে ৬০টি সেতু মাঝারি আকারের। যেগুলোর দৈর্ঘ্য ১০০-৫০০ মিটার। বাকিগুলোর দৈর্ঘ্য ১০০ মিটারের কম ও তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ। পরবর্তী সময়ে ১০৬টি সরু, অনিরাপদ ও ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজের ওপর ঋণদাতা সংস্থা জাইকার প্রিপারেটরি সার্ভের ভিত্তিতে ৬১টি ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়। শেষ পর্যন্ত ওই সার্ভের ভিত্তিকে অগ্রাধিকার দিয়ে ছোট সেতুগুলো বাদ দিয়ে মাঝারি আকারের ৬০টি পুরনো ও একটি নতুন সেতু নির্মাণের জন্য ‘ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্প’ চূড়ান্ত করা হয়। সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের (সওজ) অধীনে দেশের পশ্চিমাঞ্চলে এ ৬১টি সেতু পুনর্নির্মাণ করা হবে। ২৪ জেলায় অবস্থিত পুরনো ও ঝুঁকিপূর্ণ সেতুগুলো পুনর্নির্মাণে ঋণ দিচ্ছে জাইকা। প্রকল্পটির আওতায় সওজের রংপুর, রাজশাহী, গোপালগঞ্জ, খুলনা ও বরিশাল জোনের ফরিদপুর, মাদারীপুর, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ, রাজশাহী, বগুড়া, রংপুর, জয়পুরহাট, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, দিনাজপুর, নীলফামারী, পঞ্চগড়, বাগেরহাট, যশোর, কুষ্টিয়া, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, নরসিংদী ও নড়াইল জেলায় ৬০টি সেতু পুনর্নির্মাণ করা হবে। এগুলো এশিয়ান হাইওয়ে ও দক্ষিণ এশিয়া উপ-আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা (সাসেক) করিডরভুক্ত। এছাড়া নরসিংদীতে নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চলের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য একটি বড় ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। উল্লেখ্য, জাইকার অর্থায়নে ইস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ২০০৯ সালে গৃহীত প্রকল্পটির আওতায় ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ১১৮টি সেতু পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে এক হাজার ১৮৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে জাইকা অর্থায়ন করছে ৬১৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা। আর ৫৭৩ কোটি ৩ লাখ টাকা দিচ্ছে সরকার। সূত্র জানায়, ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পটির উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) চূড়ান্ত করতে ৩১ মার্চ অভ্যন্তরীণ যাচাই কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। তাতে ব্যয় ধরা হয় দুই হাজার ৯১১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে জাইকার ঋণ হচ্ছে এক হাজার ৯০৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা এবং সরকারি অর্থায়ন হচ্ছে এক হাজার ৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। এর আর্থিক অনুমোদন পেতে প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হলে ৫ আগস্ট প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে চলতি বছরের অক্টোবর থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত। এর চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রকল্পটি আজ সকাল সাড়ে নয়টায় এনইসি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিতব্য একনেক সভায় উপস্থাপন করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য আরাস্তু খান বলেন, এই ব্রিজগুলো নির্মাণ হলে বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগের উন্নয়ন হবে। তাই একনেক সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, প্রকল্পটি অনুমোদিত হলে পরামর্শক নিয়োগের পর সেতুগুলোর বিস্তারিত নকশা প্রণয়নে ঠিকাদার নিয়োগে দরপত্র আহ্বান করা হবে।-মানব কণ্ঠ ১০ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/পিবি/পিপি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে