নিউজ ডেস্ক: বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার চরহোগলপাতিয়া গ্রামের দরিদ্র পরিবারের সন্তান সিয়াম হোসেন লিমন (১৩)। ৬ বছর বয়সে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হয় সিয়াম।
ওই সময় সিয়াম বেঁচে গেলেও দুই হাত কেটে ফেলতে হয়। তবে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ও দরিদ্রতা বার বার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তার লেখাপড়ায়। কিন্তু দমার পাত্র নয় সিয়াম। তাই পা দিয়ে লিখেই চালিয়ে যাচ্ছে লেখাপড়া।
এবার উপজেলার আগরপুর ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় পা দিয়ে লিখে পরীক্ষা দিচ্ছে সিয়াম। সে আগরপুর আলতাফ মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র। সিয়ামের বাবা সামসুল হক ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। মা রুমা বেগম গৃহিণী। সিয়ামরা এক ভাই দুই বোন।
সিয়ামের মা রুমা বেগম বলেন, সিয়াম নানা বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। সেখান থেকে যে বেঁচে ফিরেছে আল্লাহর রহমতে। তবে দুটি হাত কেটে বাদ দিতে হয়েছে। শিশুকাল থেকেই সিয়ামের পড়াশোনার প্রতি খুব ঝোঁক। আমরা গরীব মানুষ। অনেক কষ্টে, এ অচল ছেলেকে পড়ালেখা করাচ্ছি।
আগরপুর আলতাফ মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক সাইদুর রহমান জানান, মেধাবী ছাত্র সিয়ামের স্কুলে শতভাগ উপস্থিতি রয়েছে। পড়াশোনার প্রতিও রয়েছে মনযোগ। এ ধরনের অদম্য মেধাবী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের পৃষ্ঠপোষকতায় সমাজের ধনী মানুষকে এগিয়ে আসা উচিত। উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে অনেক প্রতিবন্ধী মানুষ সমাজের বোঝা না হয়ে সম্পদ হয়েছেন, সিয়ামও তাদের একজন হতে চায়।
আগরপুর ডিগ্রি কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জানান, শারীরিক প্রতিবন্ধী সিয়াম অন্য শিক্ষার্থীদের মতো বেঞ্চে বসে পরীক্ষা দিতে পারেনি। তার দুই হাত অচল থাকায় সে পা দিয়ে লিখে পরীক্ষা দেয়। পা দিয়ে লিখলেও ওর লেখা ভালো। অন্যদের আগেই সিয়াম তার উত্তরপত্র লেখা শেষ করেছে।
পরীক্ষা কেমন হয়েছে জানতে চাইলে সিয়াম হোসেন লিমন জানায়, আজকের বাংলা পরীক্ষা ভালো হয়েছে। আমি লেখাপড়া শেষ করে ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই।
২ নভেম্বর ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর