বুধবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৫, ০৩:০১:১৭

টিউলিপ চাষ ও পাতালরেল প্রকল্প তৈরির নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

টিউলিপ চাষ ও পাতালরেল প্রকল্প তৈরির নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

নিউজ ডেস্ক: পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি টিউলিপ ফুল উৎপাদন ও রপ্তানি করে নেদারল্যান্ডস। বিশ্বের মোট ফুল উৎপাদনের প্রায় ৬৫ শতাংশ হয় দেশটিতে। সম্প্রতি নেদারল্যান্ডস সফরে গিয়ে সেখানকার টিউলিপ বাগান ও এর রপ্তানি বাণিজ্য দেখে মুগ্ধ হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগ্রহ প্রকাশ করেন নিজ দেশেও বাণিজ্যিকভাবে টিউলিপ ফুলের চাষ ও রপ্তানিতে। নেদারল্যান্ডস থেকে দেশে ফেরার পর গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন বাণিজ্যিকভাবে টিউলিপ চাষ করতে। এ-সংক্রান্ত প্রকল্প তৈরি করে দ্রুত কাজ শুরু করার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নেদারল্যান্ডসের টিউলিপ ফুলের জাত এ দেশের জন্য উপযোগী হবে না। বাংলাদেশের উপযোগী করেই জাত উদ্ভাবন করতে হবে। সে জন্য নতুন জাত উদ্ভাবনেরও নির্দেশ দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনিও স্বপ্ন দেখেন, বাংলাদেশ একদিন টিউলিপ ফুল বাণিজ্যিকভাবে রপ্তানি করবে। এ ছাড়া বিশ্বের অপরাপর দেশের মতো বাংলাদেশেও পাতাল রেলের স্বপ্ন দেখার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। গতকালের একনেক সভায় তিনি সড়ক বিভাগের সচিব এম এন সিদ্দিককে নির্দেশ দেন রাজধানীর যানজট নিরসনের লক্ষ্যে পাতাল রেলের রুটসহ আনুষঙ্গিক সমীক্ষার কাজ শেষ করে দ্রুত এ-সংক্রান্ত একটি প্রকল্প নেওয়ার জন্য। বিশ্বব্যাংক এরই মধ্যে পাতাল রেল নির্মাণে আগ্রহ দেখিয়েছে। এ সময় সড়ক বিভাগের সচিব বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশ যেখানে বুলেট ট্রেন চালু করেছে, সেখানে বাংলাদেশ এখনো পুরনো ধ্যানধারণা নিয়েই পড়ে আছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পাতাল রেল চালু হবে। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। গতকালের একনেক সভায় ২৫০টি রেলওয়ে কোচ ও ১০টি ইঞ্জিন ক্রয়সংক্রান্ত একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে আশা করছে, কোচ ও ইঞ্জিন কেনা হলে রেলসেবার মান আধুনিকায়ন, নিরাপদ ও আরামদায়ক হবে। পৃথক দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে দুই হাজার ১০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বা এডিবি ঋণ দেবে এক হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা। বাকি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে জোগান দেওয়া হবে। একনেক বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য মিটারগেজ এবং ব্রডগেজ প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ সংগ্রহ শিরোনামের প্রকল্পের আওতায় ২০০টি মিটারগেজ এবং ৫০টি ব্রডগেজ কোচ কেনা হবে। এ ছাড়া কোচগুলো ধুয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য দুটি ট্রেন ওয়াশিং প্লান্ট এ প্রকল্পের আওতায় কেনা হবে। পরিকল্পনামন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য লোকোমোটিভ রিলিফ ক্রেন এবং লোকোমোটিভ সিমুলেটর সংগ্রহ নামক অন্য একটি প্রকল্পের আওতায় ১০টি ইঞ্জিন, চারটি অ্যাকসিডেন্ট রিলিফ ক্রেন এবং একটি লোকোমোটিভ সিমুলেটর কেনা হবে। ২০১৯ সাল নাগাদ এ দুটি প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, নতুন কোচ কেনা হলে তা ইন্টারসিটি ট্রেন হিসেবে চলবে। একই সঙ্গে পুরনো কোচগুলো নতুন কোচ দিয়ে স্থানান্তরিত হবে। সরকার আশা করছে, এতে করে যাত্রীরা নিরাপদ, উন্নত ও আরামদায়ক রেলসেবা পাবে। গতকালের একনেক সভায় ছয় হাজার ২৫১ কোটি টাকা ব্যয়ের মোট ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকারি কোষাগার থেকে আসবে দুই হাজার ৬৭৩ কোটি টাকা। বাকি তিন হাজার ৫৭৮ কোটি টাকা আসবে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ঋণ হিসেবে। অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে দুই হাজার ৯১২ কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের ২৪ জেলায় ৬১টি ছোট ও মাঝারি সেতু নির্মাণ, ৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক সুবিধাসহ ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশন (এনপিও) ও প্যাটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের (ডিপিডিটি) অফিস ভবন নির্মাণ, ২১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে শেরে বাংলানগরে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৪৪৮টি ফ্ল্যাট নির্মাণ, ২৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের উন্নয়ন, ১১১ কোটি টাকা ব্যয়ে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন (দ্বিতীয় সংশোধিত) এবং ২১০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্প (প্রথম সংশোধিত) উল্লেখযোগ্য।-কালের কণ্ঠ ১১ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/পিবি/পিপি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে