বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৫, ০৫:৪৮:০৪

ভোট দিতে ভুলে গেছি

ভোট দিতে ভুলে গেছি

নিউজ ডেস্ক: ভোট দিতেই ভুলে গেছেন আড়াই ডজন পৌরসভার মানুষ। রংপুরের গঞ্চগড় জেলার বোদা পৌরসভা ও বগুড়ার সোনাতলা পৌরসভাতে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল ২০০১ সালে। ওই বছরে এ দুটি পৌরসভা গঠন হলেও নতুন পৌরসভা গঠন এবং এলাকা বৃদ্ধির বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে আদালতে রিট করে দেন সংক্ষুব্ধ এক ব্যক্তি। এরপর ১৪টি বছর পেরিয়ে গেলেও এ দুটি পৌরসভায় নির্বাচন করতে পারেনি কমিশন। একইভাবে গত ১১ বছর ধরে নির্বাচন বন্ধ রয়েছে পাবনা জেলার বেড়া পৌরসভায়। ২০০০ সালের ৩১ জানুয়ারি সাঁথিয়া উপজেলার দুটি এলাকা এ পৌরসভা থেকে বাদ দেয়া হয়। এলাকা সংকুচিত করা হয়েছে এমন অভিযোগে সংক্ষুব্ধ এক ব্যক্তি আদালতে রিট করেন। এ কারণে ২০০৪ সালের ১৪ এপ্রিল এ পৌরসভা মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেলেও নির্বাচন করতে পারেনি কমিশন। শুধু এই তিনটিই নয়, সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রায় আড়াই ডজন পৌরসভাতে নির্বাচন হয় না এক যুগেরও বেশি সময় ধরে। রেওয়াজ অনুযায়ী, পাঁচ বছর পর পর নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন হলেও কোনো কমিশনই এসব পৌরসভায় সংকট কাটিয়ে নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়নি। আগামী মাসে (ডিসেম্বর) প্রথমবারের মতো দলভিত্তিক পৌরসভা নির্বাচন সম্পন্ন করার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা এসব পৌরসভা এবার আলোচনায় উঠে এসেছে। তবে সব সংকট কাটিয়ে সাধারণ নির্বাচনের সঙ্গে এদের যুক্ত হওয়া আদৌ সম্ভব কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন খোদ ইসি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা জানান, সাতটি কারণে দীর্ঘদিন ধরে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে থাকা এসব পৌরসভায় নির্বাচন হচ্ছে না। কারণগুলো হলো- পৌরসভায় পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন নতুনভাবে যুক্ত করায় হাইকোর্টে রিট, পৌরসভার আয়তন বৃদ্ধির কারণে স্থগিত, নতুন পৌরসভা গঠনের পর সীমানা জটিলতা, পৌরসভার আয়তন কমানো সংক্রান্ত জটিলতা, পৌরসভা গঠনের বিরুদ্ধে আদালতের স্থগিতাদেশ, মামলার খড়গ, তফসিল ঘোষণার পর রিটের কারণে বন্ধ নির্বাচন এবং ওয়ার্ড বিভাজনে বিলম্বের কারণ। ইসির তালিকা পর্যালোচনায় দেখা যায়, নরসিংদীর শিবপুর ও যশোরের ঝিকরগাছা পৌরসভায় নির্বাচনের উপযোগী হয় গত ৯ বছর আগে। কিন্তু মামলার ফাঁদে পড়ে নির্বাচন বন্ধ রয়েছে। ৬ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে কুষ্টিয়া সদরের কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাচন। এ পৌরসভাতে নতুন দুটি এলাকা যুক্ত করাতে মামলা হওয়ার কারণে নির্বাচন করতে পারেনি ইসি। দুই থেকে চার বছর পর্যন্ত মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরও নির্বাচন না হওয়া পৌরসভাগুলো হলো রাজশাহীর বাঘা পৌরসভা, নাটোরের বাগাতিপাড়া, নওগাঁর ধামইরহাট, রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার মানিকগঞ্জ, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর, শরীয়তপুরের গোসাইরহাট, শরীয়তপুর সদর উপজেলার শরীয়তপুর, গাজীপুরের শ্রীপুর, চট্টগ্রামের হাটহাজারী, কুমিল্লার দেবীদ্বার, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার চুয়াডাঙ্গা এবং কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কুষ্টিয়া পৌরসভা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশের ৩১৭টি পৌরসভার মধ্যে ২০১১ সালে ২৬৯টি পৌরসভায় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। এসব পৌরসভার মেয়াদোত্তীর্ণ হচ্ছে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে। স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯-এর ২০ ধারা অনুসারে পৌরসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিন অর্থাৎ তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনের বিধান রয়েছে। সে হিসাবে এসব পৌরসভার নির্বাচন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি। তবে এ নির্বাচনের সঙ্গে সীমানা ও পৌরসভার এলাকা বাড়ানো ও কমানোর কারণে মামলা থাকায় তা নিষ্পত্তি করে স্থগিত পৌরসভাগুলোর নির্বাচন করা হবে কিনা সে বিষয়ে কমিশনের কেউ কিছুই বলতে পারছেন না। এ বিষয়ে ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয় শাখার উপ-সচিব মো. সামসুল আলম জানান, এতদিন আটকে থাকা পৌরসভা কিংবা ইউনিয়ন পরিষদের কোনো তালিকা এই কমিশনে ছিল না। ইসি সচিবের নির্দেশে তারা সারাদেশ থেকে বন্ধ থাকা নির্বাচনী এলাকার তালিকা নিয়ে এসেছেন। এসব নির্বাচনী এলাকার বিষয়ে কমিশনে নথি উত্থাপন করে সমাধানের উপায় বের করা হবে বলে জানান তিনি। ১২ নভেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/পিবি/পিপি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে