বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৭, ০৫:৪০:১০

ফাঁসির আগে পরিবারের সাথে শেষ সাক্ষাতে যা করেছিলেন শহীদুল

ফাঁসির আগে পরিবারের সাথে শেষ সাক্ষাতে যা করেছিলেন শহীদুল

নিউজ ডেস্ক : রাজধানীর গুলশানের নিজ বাড়িতে শিল্পপতি লতিফুর রহমানের মেয়ে শাজনীন তাসনিম রহমানকে সম্ভম নষ্ট ও হত্যা মামলার আসামি শহীদুল ইসলাম ওরফে শহীদের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়েছে গতকাল বুধবার রাত পৌনে ১০টায়।

গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারের হাইসিকিউরিটি কারাগারে বহুল আলোচিত তার ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয় বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার মিজানুর রহমান। ফাঁসি কার্যকরের পর আনুষ্ঠানিকতা শেষে তার ভাই মহিদুল ইসলাম লাশ গ্রহণ করেন এবং রাতেই তার মরদেহ গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের মোকসেদপুর উপজেরার ডাঙ্গা দুর্গাপুর গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়।

বুধবার রাতে ফাঁসি কার্যকর হওয়ার আগে শহীদুলের ছোট ভাই মুহিদুল ইসলাম, তার স্ত্রী, খালা, ছোট বোনসহ অন্যান্য স্বজন তার সঙ্গে কারাগারে শেষ দেখা করেছেন। দুপুরের দিকে কাশিমপুর কারাগারে তাদের সাক্ষাত হয়। সাক্ষাৎকালে শহীদুল স্বাভাবিক থাকলেও তার বাবা-মা ও ভাই-বোন কান্নায় ভেঙে পড়েন। এক পর্যায়ে শহীদও আবেগে আপ্লুত হয়ে যান। পরে অশ্রুসজল চোখে পরিবারের সদস্যরা কারাগার ত্যাগ করেন।

উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের ২৩ এপ্রিল নিজ বাড়িতে খুন হন শাজনীন তাসনিম রহমান। শাজনীন ট্রান্সকম গ্রুপের কর্ণধার লতিফুর রহমানের মেয়ে। শাজনীন তখন স্কলাস্টিকা স্কুলের নবম গ্রেডের ছাত্রী ছিলেন। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় শাজনীনের বাবা লতিফুর রহমান গুলশান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

একই বছরের ৪ঠা সেপ্টেম্বর ওই ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অপর একটি সম্ভমহানী ও হত্যা মামলা করে সিআইডি। তদন্ত শেষে প্রথম মামলায় ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত-১ এবং দ্বিতীয় মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। দুটি মামলাতেই আদালত অভিযোগ গঠন করেন।

ঘটনার প্রায় পাঁচ বছর পর ২০০৩ সালের ২রা সেপ্টেম্বর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক মামলাটির রায় ঘোষণা করেন। রায়ে শাজনীনকে সম্ভ্রমহানী ও খুনের পরিকল্পনা এবং সহযোগিতার দায়ে ছয় আসামিকে ফাঁসির আদেশ দেন আদালত।

২০০৬ সালের ১০ই জুলাই হাইকোর্ট নিম্ন আদালতে দেয়া ৫ জনের মৃত্যুদন্ডাদেশ বহাল রেখে অপর আসামিকে খালাস দেন। এরপর ৫ আসামি হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন।

হত্যাকাণ্ডের প্রায় ১৮ বছর পর গত বছরের ২৯ মার্চ প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের বেঞ্চে হাইকোর্টে ফাঁসির আদেশ পাওয়া আসামিদের আপিলের শুনানি শুরু হয়। তিন সদস্যের ওই বেঞ্চের অপর দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার।

গত ৫ এপ্রিল বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা ও বিচারপতি মো. ইমান আলীকে যুক্ত করে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ গঠন করা হয়। ৬ এপ্রিল থেকে ওই বেঞ্চে আসামিদের আপিল শুনানি শুরু হয়।

২ আগস্ট আসামিদের মধ্যে শহীদুল ইসলাম শহীদের ফাঁসির রায় বহাল রেখে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। বাকি চারজনকে খালাস দেন আপিল বিভাগ। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- হাসান, বাদল, মিনু ও পারভীন।

এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে