শুক্রবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৮:৩০:৪৬

পরীক্ষিত ও ত্যাগীরা নেতৃত্বে আসছেন!

পরীক্ষিত ও ত্যাগীরা নেতৃত্বে আসছেন!

নিউজ :  বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া লন্ডনে তার ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে আলোচনা করে দলকে পুনর্গঠনের একটা নতুন উদ্যোগ নেবেন বলে আশা করছেন তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

বিএনপিতে সাংগঠনিক সংকট চলছে বহুদিন ধরে এবং সরকারের বিরুদ্ধে কোন কার্যকর আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারায় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তৃণমূল পর্যায় থেকে সমালোচনাও বাড়ছে। এই অবস্থায় লন্ডনে দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুই নেতার এই সাক্ষাৎ থেকে দল পুনর্গঠনে একধরণের উদ্যোগ আশা করছেন তারা।

বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া লন্ডন যাওয়ার আগে দলের সিনিয়র নেতাদের সাথে বৈঠক করেছিলেন। সেই বৈঠকে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, দল পুনর্গঠনের ব্যাপারে তিনি লন্ডনে তারেক রহমানের পরামর্শ নেবেন।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে দু’দফায় লাগাতার আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে ব্যর্থ হলে বিএনপির নেতা-কর্মিদের মধ্যে হতাশা দেখা দেয়। সেই প্রেক্ষাপটে বিএনপির মাঠ পর্যায় থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়।

বিএনপির বর্তমান যে সংকট, তা নিরসনে দলের মাঠ পর্যায় থেকে স্থায়ী কমিটি পর্যন্ত নেতৃত্বের পরিবর্তন প্রয়োজন। খুলনা বিএনপি নেতা নজরুল ইসলঅম মঞ্জু এ কথা বলেন।

কিন্তু সেই উদ্যোগ অগ্রসর হতে পারেনি। দলটির নেতাদের অনেকে বলেছেন, তারেক রহমান লন্ডনে থাকলেও দলের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়াসহ সব বিষয়েই তিনি ভূমিকা রাখেন।

ফলে এখন খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান মুখোমুখি আলোচনায় দল পুনর্গঠনের বিষয়েই গুরুত্ব দেবেন বলে তারা মনে করছেন। দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের খুলনা থেকে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেছেন, তারা তৃণমূলের নেতা কর্মীরা খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের বৈঠকের দিকেই চেয়ে আছেন।

তিনি আরও বলেছেন, “বিএনপির বর্তমান যে সংকট, তা নিরসনে দলের মাঠ পর্যায় থেকে স্থায়ী কমিটি পর্যন্ত নেতৃত্বের পরিবর্তন প্রয়োজন। আমাদের নেত্রী বিভিন্ন সময় আলোচনায় তা প্রকাশ করেছেন। এবং এটি বাস্তবায়নের জন্য তাঁর তারেক রহমানের সাথে পরামর্শ করা প্রয়োজন। এখন লন্ডনে সাক্ষাতের মধ্য দিয়ে তা সম্ভব হবে।”

বিএনপিকে ঢেলে সাজানোর দাবি উঠেছে তৃণমূল থেকে। কারণ দু’দফায় আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপিতে হতাশার পাশাপাশি কোন্দল এবং উপদলীয় তৎপরতা বেড়েছে। মাঠ পর্যায়ের নেতাদের অনেকেই এখন প্রকাশ্যে পরীক্ষিত নেতাকর্মিদের দিয়ে দলে পরিবর্তন আনার কথা বলছেন।

উত্তরাঞ্চলীয় জেলা নাটোরের বিএনপি নেতা এবং সাবেক উপমন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন, আন্দোলনে ব্যর্থতার কারণ বিবেচনায় নিয়ে দল পুনর্গঠন করা উচিত।

তিনি আরও বলেছেন, “আমাদের নেত্রী নিশ্চয়ই উপলব্ধি করেন, আন্দোলনে পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতাদের কি ভূমিকা ছিল। অনেকে নেত্রীকে ভুল পথে পরিচালিত করে আন্দোলনে নামিয়েছিলেন। কিন্তু আন্দোলনে সেই নেতারা আর মাঠে নামেননি। ফলে পরীক্ষিত এবং ত্যাগী নেতাদের আমরা দলের নেতৃত্বে চাই।”

তারেক রহমান হয়তো তরুণ এবং সিনিয়রদের সমন্বয় করে স্থায়ী কমিটিতে পরিবর্তন আনবেন ।
    
বিএনপিতে খালেদা জিয়ার পরই তারেক রহমানের অবস্থান। তবে দলটিতে তারেক রহমানের সাথে সিনিয়র নেতাদের একটা বড় অংশের বেশ দূরত্ব ছিল।

সেই সিনিয়র নেতৃত্বের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আসতে পারে বলে দলটির নেতা কর্মিরা ধারণা করছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক তারেক শামসুর রহমান বলেছেন, “বিএনপিতে সিনিয়র নেতাদের অনেকে তারেক রহমানকে নিয়ে অস্বস্তিতে থাকতেন, এটা সত্য। আর সেটা বয়সের কারণে হোক অথবা তারেক রহমানের ব্যক্তিগত কারণে হোক, এমন পরিস্থিতি দলে ছিল। এখন তারেক রহমান হয়তো তরুণ এবং সিনিয়রদের সমন্বয় করে স্থায়ী কমিটিতে পরিবর্তন আনবেন ।”

দলটির নেতারা এটাও বলেছেন, খালেদা জিয়া লন্ডন থেকে ফেরার পর সিদ্ধান্ত কী পাওয়া যায় এবং তা বাস্তবায়নে কতটা সময় নেয়, এসবের ওপর নির্ভর করছে বিএনপির আন্দোলন এগিয়ে নেয়ার বিষয়টি।-বিবিসি বাংলা
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএম/ডিআরএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে