শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১৫, ০৯:২৮:৩৯

সেই অন্ধ রিকশাচালকের কষ্ট দূর হচ্ছে

সেই অন্ধ রিকশাচালকের কষ্ট দূর হচ্ছে

নিউজ ডেস্ক : নিজের শিশু কন্যার সহযোগিতায় রিকশা চালিয়ে সংসার চালান অন্ধ মনির হোসেন এমন একটি খবর সংবাদপত্রে প্রকাশিত হবার পর স্থানীয় প্রশাসন তার কষ্ট লাঘবে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ফেনি সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিকেএম এনামুল করিম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মনিরকে খাস জমি এবং থাকার ঘর তৈরির জন্য টাকা দেয়া হবে। সেই সাথে তাকে যাতে আর রিকশা চালানোর মত এত পরিশ্রম করতে না হয় সেজন্য একটি চাকরিও দেয়া হবে। ইতোমধ্যে ফেনি সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিকেএম এনামুল করিম ওই রিকশাচালক মনিরের বাড়ি গিয়ে তাদের সাথে কথা বলেছেন। এবং তাদেরকে খাস জমি এবং থাকার ঘর তৈরির জন্য টাকা দেয়ার কথা জানান। এতে মনিরের পরিবার খুবই খুশি। উল্লেখ্য, মনির হোসেন দুই বছর বয়স থেকে অন্ধ হয়ে যান।বর্তমানে তিনি রিকশা চালিয়ে সংসার চালান। বাবা-মেয়ের জীবন যুদ্ধ ‘বাবা চালাও, এখানে থামা্ও’ এভাবেই রিকশার ক্রসবারে বসে অন্ধ রিকশাচালক বাবা মনির হোসেনকে নির্দেশনা দেয় দ্বিতীয় শ্রেণীর স্কুলছাত্রী আফরোজা ফারিয়া। আর এভাবে বাবা-মেয়ের যৌথ পরিশ্রমে তাদের সংসার চলে।দুই বছর বয়স থেকে মনির অন্ধ, এখন রিকশা চালানোই তার পেশা।আর ছোট মেয়েটিই তার অন্ধ বাবার চোখ হিসেবে ভুমিকা রাখছে। মনির হোসেন বলেন, ‘ফারিয়ার নির্দেশনাতেই আমি রাস্তায় রিকশা চালাই।যেখানে যে রকম ব্রেক করার প্রয়োজন সেভাবেই ফারিয়া আমাকে নির্দেশনা দেয়।আর সেভাবেই আমি কাজ করি।’ ফারিয়া ফেনির সুন্দরপুরের স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী।তবেরিকশাভাড়া লেনদেনের ক্ষেত্রে সে খুবই সতর্ক। স্কুল ছুটির পর ফারিয়া রিকশার ক্রসবারে বসে এবং বাবাকে নির্দেশনা দেয়। আর ওখানে বসেই সে নতুন দিনের স্বপ্ন দেখছে।৫ বছর বয়স থেকেই ফারিয়া এ কাজ করে। মনির জানান, দিনে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা আয় করি, তা দিয়েই আমাদের সংসার চলে। কেননা, মাগরিবের নামাজের পর আর রিকশা চালাতে পারি না। ছোট ফারিয়ার আগে মনিরকে এভাবেই সহায়তা করতো তার ছেলে শরীফ।শরীফ এখন বড় হয়ে গেছে, তার বয়স প্রায় ১৮ বছর। তাই সে এখন সিএনসি অটোরিকশা চালক।কিছুদিন আগে মনির একটি টিভি প্রোগামে অংশ নিয়ে এক লাখ টাকা পেয়েছিলেন।সেই টাকা থেকেই কিছু টাকা ছেলের ড্রাইভিং প্রশিক্ষণের জন্য দেন।বাকী টাকার কিছু অংশ নিজের চোখের চিকিৎসায় খরচ করেন।তার এখনো বিশ্বাস তিনি হয়তো আবারো দেখতে পাবেন।যদিও এই মুহূর্তে চোখে দেখার চিন্তা মনিরের উচ্চভিলাস। মনির জানান, তার দ্বিতীয় সন্তান স্বর্ণা আক্তারের (১৬) বিয়ে হয়েছে। তাই রিকশা না চালানোর জন্য তার উপর চাপ অব্যাহত রেখেছে। ২৮ বছর ধরে সন্তানের নির্দেশনায় রিকশা চালাচ্ছেন মনির হোসেন। দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে মনির বললেন ‘আমি তো রিকশা চালানোর চাইতে অন্য কোনো কাজ ভাল করতে পারবো না।তাই এভাবেই কেটে যাবে আমার জীবন।’ মনিরের এমন জীবনযুদ্ধ নিয়ে খবর প্রকাশের পর স্থানীয় প্রশাসন এগিয়ে এসেছে। ১৩ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএম/ডিআরএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে