রবিবার, ০৩ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০১:১৩:০১

আমরা পাহাড়ে আগুন জ্বালাতে বাধ্য হবো: সন্তু লারমা

আমরা পাহাড়ে আগুন জ্বালাতে বাধ্য হবো: সন্তু লারমা

নিউজ ডেস্ক : পার্বত্য শান্তি চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হলে আমরা পাহাড়ে আগুন জ্বালিয়ে দিতে বাধ্য হবো বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা)।

পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে শনিবার রাজধানীর ডেইলি স্টার ভবনে এক আলোচনা সভায় এই কথা বলেন তিনি। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের তৎকালীন সরকারের সময় পার্বত্য শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

এর পর থেকে পর‌্যায়ক্রমে চুক্তির বেশির ভাগ অংশ বাস্তবায়িত হয়েছে বলে দাবি করছে সরকার। কিন্তু চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় শুভংকরের ফাঁকি রয়েছে এবং অনেক মৌলিক বিষয় অবাস্তবায়িত বলে দাবি করছেন সন্তু লারমা।

তিনি বলেন, ‘আমরা যেন সেই পাকিস্তানি শাসনামলের মতোই একটি ঔপনিবেশিক শাসনব্যবস্থায় আছি। এ উপনিবেশ তো আমরা চাইনি। বিশেষ শাসিত অঞ্চলের কথা বলা হয়েছে, কিন্তু তা করা হয়নি। গোটা চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে শুভঙ্করের ফাঁকি।’

সন্তু লারমা বলেন, ‘সেই সময়ের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য আর এখনকার প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে অনেক পার্থক্য। আজ দেশে চলছে অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা। আমরা বাঙালি নই। আমাদের নিজস্ব জাতিগত পরিচয় আছে। আমাদের ধর্মপরিচয় আলাদা। সরকারের কথামতো চললে আমাদের ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হতে হবে।’

পাহাড়ি জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে উল্লেখ করে সন্ত্র লারমা বলেন, ‘তাদের আর পেছনে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এখন পাহাড়ের মানুষ প্রতিরোধ করবে। আর প্রতিরোধ দমনে যদি অস্ত্রের ভাষা প্রয়োগ করে, তবে আজকের নিরস্ত্র জুম্মরাও হাতে অস্ত্র নিয়ে তাদের উত্তর দেবে।’

সাবেক শান্তিবাহিনীর প্রধান সন্তু লারমা হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন না হলে আমরা পাহাড়ে আগুন জ্বালিয়ে দিতে বাধ্য হব।’

সাজেক এলাকায় উপজাতিদের যাতায়াতে নিয়ন্ত্রণেরও অভিযোগ করেন সন্তু লারমা। তিনি বলেন, ‘সাজেক এলাকায় এমন কী আছে যে এত মানুষ ঘুরতে যায় সেখানে। অথচ আমাদের এলাকা, আমরা সেখানে যখন-তখন যেতে পারি না।’

শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের পথে বিদ্যমান সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে দুই পক্ষের প্রচেষ্টার প্রতি গুরুত্ব দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।

জিয়ার শাসনামল থেকে পাহাড়ি এলাকায় সামরিক শাসন প্রতিষ্ঠা করা হয় দাবি করে মেনন বলেন, ‘এখনো সেই শাসন অব্যাহত রয়েছে। কিছু সামরিক ক্যাম্প ওঠানো হলেও মূল সমস্যা সমাধান হয়নি।’

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, কলামিস্ট ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাবেক মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. সাদেকা হালিম, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং প্রমুখ।

এমটিনিউজ/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে