নিউজ ডেস্ক: ‘শেখ হাসিনা সফটওয়্যার পার্ক’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, এই হাইটেক পার্কের নামকরণে নিজ নাম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সব সময় আপত্তি করেছিলেন তিনি।
নামকরণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'আমার নামে কেন দেয়া হয়েছে... আমি সব সময় আপত্তি করেছি... এখানে আমার বলার কিছু নেই।'
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের আগে নামকরণের বিষয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, 'মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বার বার নিষেধ করেছেন এটি তার নামে না করতে। কিন্তু আমরা আমাদের দেশের প্রথম সরকারের দ্বারা নির্মিত সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ককে স্মরণীয় করে রাখার জন্য ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা তার (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) স্মরণে, তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরা এই পার্কটির নামকরণ করেছি।'
পলক আরও বলেন, 'যশোরের সংসদ সদস্য আমাদের স্ট্যান্ডিং কমিটি, সাধারণ জনগণ সকলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এটি করতে বাধ্য হয়েছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।'
উল্লেখ্য, ১০ ডিসেম্বর রোববার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যশোরে অবস্থিত ‘শেখ হাসিনা সফটওয়্যার পার্ক’-এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হাইটেক পার্কগুলো রপ্তানিতে সবচেয়ে বড় অবদান রাখতে পারবে। যশোরের মতো জায়গায় এতো চমৎকার একটি স্থাপনা এবং সমস্ত আধুনিক সুযোগ-সুবিধা মানুষকে আরো বেশি আকর্ষণ করবে।
‘এই সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কটি সম্পন্ন হয়েছে। এখানে বহু লোকের কর্মসংস্থান হবে। পাশাপাশি আমাদের দেশটি আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন দেশ হিসেবে গড়ে তোলার একটি ধাপ অতিক্রম করতে পারলাম বলে আমি বিশ্বাস করি,’ বলেন শেখ হাসিনা।
সফটওয়্যার পার্ক প্রকল্প পরিচালক সূত্রে জানা যায়, এই সফটওয়্যার পার্কে ৫৫টি প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিষ্ঠানকে স্থান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে চারটি প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। এর মধ্যে রয়েছে অন এয়ার ইন্টারন্যাশনাল, চাকলাদার করপোরেশন, সাজ টেলিকম ও অংসু। তবে শুধুমাত্র ৫৫টি প্রতিষ্ঠান নয়, আরও ২০টি প্রতিষ্ঠানকে স্থান বরাদ্দ দেয়ার বিষয়ে ভাবছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এর আগে ৫ অক্টোবর যশোরের এই হাইটেক পার্কে দিনব্যাপী চাকরি মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলায় অংশ নিয়েছিল ৩০টিরও বেশি প্রযুক্তিগত প্রতিষ্ঠান
হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, যশোরের বেজপাড়া এলাকায় ২৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক’ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। চলতি মাসে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। ধারণা করা হচ্ছে, শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে ১২ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে।
এই হাইটেক পার্কে আধুনিক সকল সুযোগ-সুবিধাসহ রয়েছে ১৫ তলা বিশিষ্ট মাল্টি-টেন্যান্ট বিল্ডিং, আন্তর্জাতিক থ্রি-স্টার মানের আবাসন ও জিমনেসিয়ামের সুবিধাসহ ১২ তলা বিশিষ্ট ডরমিটরি বিল্ডিং, একটি ক্যান্টিন ও এ্যাম্ফিথিয়েটার। ৩৩ কেভিএ পাওয়ার সাব-স্টেশন, ফাইবার অপটিক ইন্টারনেট লাইন এবং অন্যান্য ইউটিলিটি সার্ভিসের সুবিধা থাকছে এতে।
উল্লেখ্য, রূপকল্প-২০২১ এবং জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) নির্ধারিত সময়ের পূর্বে অর্জনের লক্ষ্যে দেশের সকল বিভাগ, জেলায় হাই-টেক বা আইটি পার্ক স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এ পর্যন্ত ২৮টি হাই-টেক/আইটি পার্ক স্থাপনের কার্যক্রম হাতে নিয়েছে সরকার।
এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস