শনিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৫, ০২:০৭:৩৯

কম স্টপেজ সার্ভিস, ভুক্তভোগী নগরবাসী

কম স্টপেজ সার্ভিস, ভুক্তভোগী নগরবাসী

নিউজ ডেস্ক: রাজধানীতে বিভিন্ন রুটে গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, বয়স্ক ও নারীদের সব বাসে ওঠার সুযোগ না দেয়া, ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয় সাধারন মানুষের । এই সব কারনে বাস না পাওয়ার পাশাপাশি নতুন বিড়ম্বনা যোগ হয়েছে কম স্টপেজ সার্ভিস। কম স্টপেজ সার্ভিস, সিটিং সার্ভিস, গেটলক সার্ভিস, সময় নিয়ন্ত্রণ সার্ভিস এসব বিভিন্ন শব্দ ব্যবহার করে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে বাসশ্রমিকরা। আর এজন্য যথেষ্ট নজরদারি না থাকায় ভুক্তভোগী হচ্ছেন সাধারণ বাস যাত্রীরা। নগরীর বিভিন্ন রুটে দেখা যায়, এতদিন সিটিং সার্ভিসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হতো। এখন এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কম স্টপেজ সার্ভিস। বাসের গায়ে লেখা রয়েছে কম স্টপেজ সার্ভিস। এর ঠিক পাশেই লেখা রয়েছে হাফ পাস নাই। নগরীর মিরপুর-কালশী থেকে গুলশান-২ পর্যন্ত চলাচল করছে রবরব পরিবহন। এই বাসটি শুরু থেকেই গেটলক সার্ভিস নামে যেখানেই নামুন সর্বশেষ বাসস্ট্যান্ডের ভাড়া দিতে হবে এমন সিস্টেম চালু ছিল। সেটার সঙ্গে এখন জুড়ে দেয়া হয়েছে কম স্টপেজ সার্ভিস। মিরপুর-আজিমপুরে চলাচল করে বিকল্প সিটিং সার্ভিস, যার রুট নম্বর ১৯/ই। এটিতে নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে কম স্টপেজ সার্ভিস। আর আগে বাসটিতে বেশি সংখ্যক যাত্রী পরিবহন করা হলেও এখন তা কমিয়ে আনা হয়েছে। যাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকার পরও এই বাসে ওঠার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। একই রুটে মিরপুর লিংক লিঃ যার রুট নম্বর ৯/১১২। এটিও কম স্টপেজ সার্ভিস করে যাত্রী তোলার হার কমিয়ে দিয়েছে। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যাত্রীদের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। নগরীর শিখর, বিহঙ্গ, সেফটি, জাবালে নূর, আকিক, জাবালে নূর, স্বাধীন এক্সপ্রেস হিমাচল, বিহঙ্গ, তানজিল, মিরপুর মিশন, লাব্বাইক, ভিআইপি গেটলক এসব পরিবহনে যেখানেই যাত্রী নামুক না কেন তাকে দিতে হচ্ছে সর্বশেষ গন্তব্যের ভাড়া। এসব গাড়ির বেশিরভাগেই শিক্ষার্থীদের জন্য অর্ধেক ভাড়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। লোকাল বাস সরিয়ে সিটিং, গেটলক, কম স্টপেজ, সময় নিয়ন্ত্রণ এসব নাম আসলে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের উদ্দেশ্যে করা, যাত্রীসেবার মান বৃদ্ধির জন্য নয় বলেই মনে করেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, নগরীর গণপরিবহনগুলোতে অনেক আগে থেকেই নৈরাজ্য চলছে। যাত্রী সেবার মান বলতে কিছুই নেই। সেবা দেয়ার চেয়ে এগুলো যাত্রীদের কাছ থেকে গলা কাটা ভাড়া আদায়ে ব্যস্ত। এসব নিয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করা হয়েছে। সম্প্রতি শুনানির আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে যাত্রীরা তাদের অভিযোগ প্রমাণসহ দেখিয়েছেন। এরপরও এসব কমছে না। তিনি বলেন, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ভাড়াচার্ট তৈরির যে কমিটি রয়েছে সেখানে বাস মালিকদের প্রতিনিধি থাকলেও যাত্রীদের কোনো প্রতিনিধি রাখা হয়নি। ফলে মালিকরা ইচ্ছেমতো ভাড়া দাবি করে তা আদায় করে নিতে পারছে। এর কারণে যত চাপ যাত্রীদের ওপরেই পড়ছে। তিনি বলেন, এমনিতেই ঢাকা শহরে মানুষের চেয়ে পরিবহনের সংখ্যা কম। তার ওপর রাস্তায় জ্যামে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। তার ওপর এখন আবার যুক্ত হয়েছে, গেটলক সার্ভিস, কম স্টপেজ সার্ভিস নামের যন্ত্রণা। এর ফলে যাত্রীদের একবার বাস না পাওয়ার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। আবার বাস পাওয়ার পর জ্যামে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এটা কোনো মানুষের জন্য মারাত্মক কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার কোনো মানুষ যে হেঁটে পথ চলবে সে সুযোগও পাচ্ছে না। এই নগরীর মানুষের চলাচল অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ছে। এগুলো থেকে উত্তরণের জন্য অবশ্যই সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। এ প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজধানীর সড়কে কোনো শৃঙ্খলা নেই। শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। ঢাকাকে রক্ষায় যে কোনো মূল্যে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। ১৪ নভেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/পিবি/পিপি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে