রবিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৫, ০৩:৫০:৫৭

প্যারিসের ভয়াল রাতের অভিজ্ঞতা জানালেন পার্থ প্রতিম

প্যারিসের ভয়াল রাতের অভিজ্ঞতা জানালেন পার্থ প্রতিম

লুৎফর রহমান : পার্থ প্রতিম মজুমদার। কিংবদন্তি মূকাভিনেতা। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকেন প্যারিসে। শুক্রবার রাতে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাস্থল তার বাসা থেকে অনেকটা দূরের পথ। এত দূরে থেকেও বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন বাসা থেকে। ঘটনার পর থেকে উদ্বেগ-আতঙ্ক নিয়ে বাসায় সময় পার করেছেন। পর্যবেক্ষণ করেছেন প্যারিসের পরিস্থিতি। গতকাল টেলিফোনে জানিয়েছেন সেই ভয়াল রাতের অভিজ্ঞতা। তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে আমার বাসা একটু দূরে। শুক্রবার হওয়ায় বাসায় অতিথিও ছিল। মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শেষে মাত্র বাসায় ফিরেছে। তার আগেই পর পর কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেলাম। তখন কিছুই বুঝে উঠতে পারিনি। শুক্রবার রাতে প্যারিসের রাস্তায় আনন্দ-উৎসবে পটকা ফুটার মতো কিছু মনে হয়েছে। টেলিভিশনে একটি ২৪ ঘণ্টার চ্যানেলে চোখ পড়তেই হামলার বিষয়টি প্রথমে নজরে আসে। এরপর ক্রমে স্পষ্ট হয়ে উঠে হামলার ভয়াবহতার বিষয়টি। প্রথমে ১৮ জনের মৃত্যুর খবর আসে। ক্রমে বাড়তে থাকে এ সংখ্যা। টেলিভিশনের পর্দায় সরাসরি দেখানো হয় ঘটনাস্থলের বীভৎস দৃশ্য। ভয় আর আতঙ্ক ভর করে। এত ভয় আমি গোটা জীবনে পাইনি। মনে হচ্ছিল হতাহতের মধ্যে তো আমিও থাকতে পারতাম! বা আমার ছেলেমেয়ে! নিকট আত্মীয় কেউ! বন্ধু, আত্মীয়!। যত বার এটা মনে হয়েছে, তত বারই চমকে উঠেছি। আমার আবাসস্থল ম্যাসি প্যালেজো মূল ঘটনাস্থল থেকে মেট্রোয় মিনিট কুড়ির পথ। অত দূর থেকেও বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা গেলো। কী ভয়াবহ! পার্থপ্রতিম বলেন, প্রথমে ১৮ জন নিহত হওয়ার খবর দেখলাম। এ সংখ্যাটা যে শতাধিক হবে তা তখনও ভাবতে পারিনি। প্যারিসের আনন্দ-উৎসবের রাতটি মুহূর্তে ভয়াবহ রূপ নিলো। হামলায় বিপর্যস্ত নগরী। মানুষ ভয় আর আতঙ্ক নিয়ে ঘরবন্দি। রাস্তা জনশূন্য। এমন দৃশ্যও আগে কখনও দেখিনি। মাঝ রাতে প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদকেও টেলিভিশনে বক্তব্য রাখতে দেখলাম। দেশবাসীকে তিনি নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু, শহরের ছবি দেখে সেই আশ্বাসে বিশ্বাস রাখতে মন চাইছিল না। কাল রাত থেকেই বারে বারে প্রশাসনের তরফে ঘোষণা করা হচ্ছে, কেউ যেন গুরুত্বপূর্ণ কোন কাজ না থাকলে বাড়ি থেকে না বেরোন। এমন কী, গাড়ি বের করতেও চরম নিষেধাজ্ঞা। রাত থেকেই বাড়িতে প্রায় বন্দি হয়ে রয়েছি। গোটা দুনিয়া থেকে শুভাকাঙ্ক্ষীরা ফোন করছেন। জানতে চাইছেন, কেমন আছি? সারা রাত চোখে এক মুহূর্তের জন্য ঘুম আসেনি। আমার স্ত্রীরও একই অবস্থা। এমন উন্নত একটা দেশে এতটা নিরাপত্তার অভাব বোধ করতে হবে, কখনও ভাবিনি। যারা মারা গেছে তাদের জন্য দুঃখ হয়। প্রার্থনা করি আমাদের দেশে যেন এ ধরনের কিছুর উত্থান না হয়। -মানবজমিন ১৫ নভেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে