সোমবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৫, ০৪:২৮:২৫

অপরাধ দমনে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার

অপরাধ দমনে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার

নিউজ ডেস্ক: কাজী এমরান হোসেন। ডাক নাম জুম্মন। পেশায় ইলেকট্রিশিয়ান। ঠিকাভিত্তিক ইলেকট্রিশিয়ান পদে কাজ করতেন বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লি. (বিজিডিসিএল)-এর কুমিল্লা কার্যালয়ে। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের পর কীভাবে বহুতলবিশিষ্ট ভবন, আবাসিক ফ্ল্যাট, মার্কেট, ব্যাংক, স্বর্ণের দোকান, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, কারখানায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায় সেই চিন্তা মাথায় চাপে তার। বিষয়টি নিয়ে তিনি ভাবতে বসেন এবং দেরি না করে কাজ শুরু করেন। তার প্রচেষ্টা সফল হয়েছে। গত অক্টোবরের শেষ নাগাদ তিনি উদ্ভাবন করেছেন ছয় ক্যাটাগরি বিশিষ্ট সিকিউরিটি সিস্টেম। জুম্মন তার এই উদ্ভাবনের নাম দিয়েছেন ‘জিএম হাইভোল্টেজ সিকিউরিটি সিস্টেম’। এক সাক্ষাত্কারে জুম্মন তার উদ্ভাবিত জিনিসগুলো তুলে ধরেন। বাংলাদেশে এ ধরনের সিকিউরিটি সিস্টেম প্রথম তিনিই আবিষ্কার করেছেন বলে দাবি করেন জুম্মন। জুম্মন বলেন, বহুতলবিশিষ্ট ভবনে অনেক আবাসিক ও বাণিজ্যিক ফ্ল্যাট থাকে। এসব ফ্ল্যাটের কোনোটিতে চুরি-ডাকাতি-দস্যুতা বা খুনের মতো ঘটনা ঘটলেও পাশের ফ্ল্যাটের কেউ খবর পান না বা খবর রাখেন না। তার এই পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে বাসা, ব্যাংক, ফ্ল্যাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যে কোনো দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সহজে নিশ্চিত করা সম্ভব। বিপদ আঁচ করার সঙ্গে সঙ্গে সুইচে একটা টিপ দিলেই মুহূর্তে থানা, ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে অঘটনের বার্তা এসএমএসের মাধ্যমে পৌঁছে যাবে এবং উচ্চস্বরে কেবল ঘটনাস্থলে অ্যালার্ম বাজতে থাকবে। একই সঙ্গে সিসি ক্যামেরায় সকল দৃশ্য ধারণসহ ভবন বা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ ও বের হওয়ার ফটক স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। অপরাধী ধরতে বা ফ্ল্যাটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ আবিষ্কার ফলপ্রসূ হবে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে বা যে কোনোভাবে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়ে দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এ ক্ষেত্রে তার সিকিউরিটি সিস্টেম ব্যবহার করে অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধসহ সম্পদ রক্ষা করা যাবে। তিনি জানান, ভবনের নিচতলায় একটি কন্ট্রোল রুম থেকে পুরো ভবনের সবগুলো ফ্ল্যাটের সব ধরনের দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। সংশ্লিষ্ট ভবনে যতসংখ্যক ফ্ল্যাট থাকুক না কেন বিপদ কবলিত ফ্ল্যাট ছাড়া অন্য কোনো ফ্ল্যাটে ফ্ল্যাশ লাইট জ্বলবে না কিংবা অ্যালার্মও বাজবে না। এভাবে ফ্ল্যাটটি শনাক্ত করা একেবারে সহজ হয়ে যাবে এবং দুর্বৃত্তরা পালাবার পথ পাবে না। তিনি আরো জানান, সুড়ঙ্গ তৈরি করে দুর্বৃত্তরা ব্যাংকের টাকা লুটে নেয়। কিন্তু তার পদ্ধতি ব্যবহার করলে কেউ লকার স্পর্শ করার সাথে সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ক্যামেরা চালু হয়ে লুটের দৃশ্য রেকর্ড হতে থাকবে এবং খবর পৌঁছে যাবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ, থানা এবং নিকটস্থ পুলিশ ফাঁড়িতে। এ ছাড়া সড়ক বাতির আলো এবং বাড়িতে পানির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে তিনি তৈরি করেছেন সিকিউরিটি ডিভাইস। আগুনে ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে একইভাবে রক্ষা করা যাবে বিভিন্ন কল-কারখানাও। তিনি নিজেই সরবরাহ করবেন উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন লক, স্পেশাল সিকিউরিটি ডোর (দরজা), অ্যালার্ম মেশিন, টাচ মেশিন, আইপিএস, ক্যামেরা, পাঞ্চ মেশিন, স্বয়ংক্রিয় বিভিন্ন ডিভাইস ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণ। এত নিরাপত্তার আশ্বাস যিনি দিচ্ছেন সেই জুম্মন মাত্র অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। তিনি বলেন, পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তার এ সিস্টেম বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করা যাবে। ১৬ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/পিবি/পিপি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে