সোমবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৫, ০৫:১৯:৪৫

শিশু রবিউলকে দিয়ে ভিক্ষা করাচ্ছে পরিবার

শিশু রবিউলকে দিয়ে ভিক্ষা করাচ্ছে পরিবার

নিইজ ডেস্ক: নয় বছরের রবিউল ইসলাম ওরফে শান্ত৷ ধরে নিয়ে কেটে ফেলা হয়েছিল তার দুই হাত। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক নারী কর্মকর্তা তাকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যান। সংযোজন করা হয় কৃত্রিম হাত। দেশে ফিরে ভর্তি করানো হয় বিদ্যালয়ে। কিন্তু এখন লেখাপড়া ছেড়ে শিশু রবিউল ভিক্ষা করে বেড়াচ্ছে। এমন অভিযোগে সম্প্রতি রাজধানীর কাফরুল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ওই নারী কর্মকর্তা রুকসানা কামার। তাঁর অভিযোগ, রবিউল তাঁর কাছে থেকেই লেখাপড়া করছিল। কিন্তু গত বছর তার পরিবার তাকে নিয়ে যায়। তার পরিবারই এখন তাকে দিয়ে ভিক্ষা করাচ্ছে। এ বিষয়ে জিডি করার পর পুলিশ গিয়ে রবিউলের পরিবারকে সতর্ক করে, তবে কাজ হয়নি। পরিবারের সঙ্গে গুলশানের কড়াইল বস্তিতে থাকত রবিউল। ২০১৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি সে নিখোঁজ হয়। কয়েক দিন পর দুই হাত কাটা অবস্থায় কে বা কারা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে পালিয়ে যায়। রবিউলের মা নাসিমা বেগম অভিযোগ করেছিলেন, রবিউলের সৎবাবা মো. জাহাঙ্গীর এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। তখন পুলিশেরও ধারণা ছিল, ভিক্ষাবৃত্তি করানোর উদ্দেশ্যে বা ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে জাহাঙ্গীর এমন নির্মম ঘটনা ঘটিয়েছেন। এ ঘটনায় বনানী থানায় একটি মামলা করেন রবিউলের মা নাসিমা। পুলিশ জাহাঙ্গীরসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করে। দেশে কিছুদিন চিকিৎসার পর বেশ কয়েকজনের সহায়তায় কর্মকর্তা রুকসানা রবিউলকে যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ার এক হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে রবিউলের শরীরে কৃত্রিম দুটি হাত সংযোজন করা হয়। দেশে ফিরে ফরিদপুরে একটি বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে রবিউলকে ভর্তি করা হয়। রুকসানা বলেন, ‘ফরিদপুরে আমার সন্তানদের সঙ্গে লেখাপড়া করত রবিউল। গত বছর ঈদুল ফিতরের আগে বেড়ানোর কথা বলে রবিউলকে নিয়ে যান তার মা। কিছুদিন পর জানতে পারি, রবিউলকে নিয়ে তার পরিবার কাফরুল এলাকায় থাকছে এবং তাকে দিয়ে ভিক্ষা করাচ্ছে। এত কষ্ট করে বিদেশ থেকে লাগিয়ে আনা তার কৃত্রিম হাত খুলে ফেলা হয়েছে।’ একজনের মাধ্যমে ভিক্ষারত অবস্থায় রবিউলের একটি ছবিও হাতে পান তিনি। এ নিয়ে কাফরুল থানায় জিডি করার পর পুলিশ বাসায় গিয়ে রবিউলের মাকে সতর্ক করে দেয়। কিন্তু তার পরিবার এ সতর্কতা মানেনি। জানতে চাইলে জিডির তদন্ত কর্মকর্তা কাফরুল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘আমিও একদিন ওই বাচ্চাটাকে ২০ টাকা দিয়েছিলাম। পরে জিডি হলে ভিক্ষা না করানোর জন্য আমি রবিউলের মাকে বলে এসেছি। এখন ভিক্ষাবৃত্তি করানো হচ্ছে কি না, তা জানি না।’ ছেলেকে দিয়ে ভিক্ষা করানোর কথা স্বীকার করে রবিউলের মা নাসিমা বেগম বলেন, ‘আমার পোলারে দিয়া আমি যা ইচ্ছা তা করামু। আপনাদের কী?’ তিনি বলেন, ‘আমার পোলার হাত নাই। সে কী কইরা খাইব? সে ভিক্ষা করলে আপনাদের সমস্যা কী?’-প্রথম আলো ১৬ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/পিবি/পিপি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে